তামাক পণ্যে কর বাড়ানোর প্রস্তাব বিবেচনা করা হবে: অর্থপ্রতিমন্ত্রী

অর্থপ্রতিমন্ত্রী আব্দুল মান্নানআগামী বাজেটে তামাকজাত সকল পণ্যের উপর কর বাড়ানোর প্রস্তাব সরকার গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবে বলে জানিয়েছেন অর্থপ্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী আগামী ২০৪০ সালের মধ্যে দেশকে তামাকমুক্ত করার জন্য অর্থমন্ত্রী আগামী বছরে টোব্যাকো-ট্যাক্স সিস্টেম বদলানোর চিন্তা করছেন। এছাড়া অর্থমন্ত্রী স্লাব নির্ভর কর ব্যবস্থা না রাখতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) নির্দেশনা দিয়েছেন বলেও জানান অর্থপ্রতিমন্ত্রী।

সোমবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘বাজেট ২০১৬-১৭: কেমন তামাক কর চাই’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এসব কথা বলেন তিনি।  ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিড্স নামের একটি সংগঠনের সহায়তায় ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ, ইউনাইটেড ফোরাম এগেইনেস্ট টোব্যাকো (উফাত) এবং প্রগতির জন্য জ্ঞান (প্রজ্ঞা) যৌথভাবে এ বৈঠকের আয়োজন করে।

জাতীয় অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার (অব.) আব্দুল মালিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ, তত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান, জাতীয় সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী, আব্দুল মতিন খসরু, মো. নবী নেওয়াজ, নাটাব’র সভাপতি মাজাফ্ফর হোসেন পল্টু, মানস’র সভাপতি ডা. অরূপ রতন চৌধুরী,স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রোকসানা কাদের প্রমুখ। 

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. রুমানা হক এবং প্রজ্ঞা’র সমন্বয়ক হাসান শাহরিয়ার।

অর্থপ্রতিমন্ত্রী বলেন, তামাকপণ্যের উপর বর্তমান ১ শতাংশ স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ ২ শতাংশে উন্নীত করা, তামাক পোড়ানোর চুল্লিপ্রতি বাৎসরিক ৫ হাজার টাকা লাইসেন্স ফি আরোপ এবং সিগারেটের ক্ষেত্রে শুল্কমুক্ত সুবিধা বাতিলের বিষয়ে সরকার চিন্তা-ভাবনা করছে। এক্ষেত্রে তিনি তামাক নিয়ন্ত্রণে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।

সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, বহুজাতিক তামাক কোম্পানিতে সরকারের অংশীদারিত্ব বাতিল করার এখনই উপযুক্ত সময়। তিনি অবিলম্বে তামাক কোম্পানির শেয়ার পরিত্যাগের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, সিগারেটের উপর বিদ্যমান স্তরভিত্তিক করকাঠামো বাতিল করতে হবে।

ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, তামাকপণ্যে কর বাড়ানো হলে স্বল্প মেয়াদে সরকারের রাজস্ব কমার কোনও সম্ভাবনা নেই।

আসন্ন বাজেটে তামাকপণ্যে করারোপের বিষয়ে বৈঠকে উত্থাপিত প্রস্তাবগুলো হলো- সিগারেটের করারোপের জন্য ব্যবহৃত মূল্যস্তর প্রথা বাতিল, সব ধরনের সিগারেটের খুচরা মূল্যের ৭০ শতাংশ ও বিড়িতে ৪০ শতাংশ, জর্দা এবং গুলে ৭০ শতাংশ এক্সাইজ ট্যাক্স আরোপ, আয় এবং সময়ের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে তামাকপণ্যের মূল্য সমন্বয়, খাদ্য নিরাপত্তা সুসংহতকরণে রফতানি শুল্ক ২৫ শতাংশে উন্নীত করা, তামাকের চুল্লি প্রতি ৫ হাজার টাকা লাইসেন্স ফি আরোপ, তামাকের কর প্রশাসন শক্তিশালী করা, কর সংগ্রহ ব্যবস্থা উন্নত করা এবং কর ফাঁকি রোধকল্পে তামাকপণ্যের শুল্কমুক্ত বিক্রয় প্রথা তুলে দিয়ে করারোপ কর, তামাকপণ্যের উপর ২ শতাংশ স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ আরোপ করা।

/এসআই/এসএনএইচ/