দ্বিতীয় প্রান্তিকে রাজস্ব বেড়েছে বাংলালিংকের

বাংলালিংকচলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে রাজস্ব আদায়ে ধারাবাহিক সাফল্য বজায় রেখেছে মোবাইল সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বাংলালিংক। সম্প্রতি দ্বিতীয় প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে কোম্পানিটির পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় বর্তমানে বাংলালিংকের মোট গ্রাহক সংখ্যা তিন কোটিরও বেশি। রমজান মাসের প্রভাব এবং মোবাইল সেবাদাতাদের মধ্যে তীব্র প্রতিযোগীতা সত্ত্বেও বাংলালিংক দ্বিতীয় প্রান্তিকে রাজস্ব আদায় গত বছরের তুলনায় ক্রমাগত প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রেখেছে।

২০১৬ সালের  দ্বিতীয় প্রান্তিকে, বাংলালিংকের মোট রাজস্ব গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ১ হাজার ২৩০ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে। রাজস্ব বৃদ্ধির মূল কারণ ছিল ভয়েস সেবাতে ক্রমাগত রাজস্ব বৃদ্ধি, যা ভয়েস ট্রাফিক বৃদ্ধির কারণে অর্জন করা সম্ভব হয়েছে এবং এরই সাথে ইন্টারনেট সেবায় ৬০ শতাংশ রাজস্ব বৃদ্ধি হয়েছে। ইন্টারনেট রাজস্ব বৃদ্ধিতে অবদান রেখেছে ৬ শতাংশ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী বৃদ্ধি এবং ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে ১৭৮ শতাংশ বৃদ্ধি। পাশাপাশি থ্রিজি কভারেজ বিস্তৃতি এবং স্মার্টফোনের ব্যবহার বাড়ার ফলেও ইন্টারনেট রাজস্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। তীব্র মূল্য প্রতিযোগিতা থাকা সত্ত্বেও বাংলালিংকের অজচট (গ্রাহক প্রতি গড় রাজস্বের পরিমাণ) বৃদ্ধি পেয়েছে ৫ শতাংশ যার পেছনে রয়েছে বর্ধনশীল ভয়েস এবং ইন্টারনেট ব্যবহার।

গত বছরের একই সময়ের তুলনায় চলতি বছরের রাজস্ব বৃদ্ধির তুলনামূলক ধীর গতির পেছনে রয়েছে এ বছরের জুন মাসের প্রথম থেকে রিচার্জের ওপর ২ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ এবং এ বছরের মার্চ থেকে ১ শতাংশ সারচার্জ আরোপ।

এই প্রান্তিকে বাংলালিংকের কার্যক্রমের প্রধান লক্ষ্য ছিল চলমান সিম ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া। সরকার কর্তৃক নির্দেশিত এই প্রক্রিয়া ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে শুরু হয়। এতে মোবাইল ফোন অপারেটরদের গ্রাহকের আঙ্গুলের ছাপ ভেরিফিকেশনের মাধ্যমে নির্ভুল রেজিস্ট্রেশন করতে বলা হয় যেন সঠিক জবাবদিহিতা এবং বর্ধিত নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়।

বাংলালিংক এই মোবাইল নিরাপত্তা উদ্যোগে এগিয়ে থাকা অপারেটরদের মধ্যে একটি এবং বাংলালিংক এর মোট গ্রাহকের ৯৩ শতাংশকে ভেরিফিকেশনের আওতায় আনতে সক্ষম হয়, এই ৯৩ শতাংশ গ্রাহক বাংলালিংকের রাজস্বের প্রায় ১০০ শতাংশের প্রতিনিধিত্ব করে। এই ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে একটি দৃঢ় এবং নিরাপদ গ্রাহক শ্রেণি পাওয়া যাবে যেখান থেকে মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের মাধ্যমে নতুন রাজস্ব আয়ের ক্ষেত্র তৈরি হবে, যা বাংলালিংকের ডিজিটাল কর্মপরিকল্পনার একটি অংশ।

এই কার্যক্রমের কারণে অনিবন্ধিত সিমসমূহ এ বছরের জুন থেকে বন্ধ হয়ে যায় এবং গ্রাহকদের নতুন সিম ক্রয়ের ক্ষেত্রে কিছুটা বিরূপ প্রভাব পড়ে। এর ফলে ২০১৬ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে গ্রাহক সংখ্যা ৩ শতাংশ কমে যায়। ২০১৬ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে পারফরমেন্স ট্রান্সফরমেশন প্রোগ্রাম এবং সিম ভেরিফিকেশন জাতীয় এককালীন ব্যয় ব্যাতিত আর্নিংস বিফোর ইন্টারেস্ট, ট্যাক্সেস, ডিপ্রেসিয়েশন অ্যান্ড অ্যামোরটাইজেশন ১৯ শতাংশ বেড়ে ৫৮০ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে।

২০১৬ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে গত বছরের তুলনায় বাংলালিংকের মূলধনী ব্যয় ৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ২৬০ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে যেখানে এলটিএম মূলধনী ব্যয় রাজস্ব অনুপাত ছিলো ২৩ শতাংশ। ২০১৬ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে শেষে ৫০ শতাংশ গ্রাহককে থ্রিজি কাভারেজের আওতায় আনার মাধ্যমে নেটওয়ার্ককে আরও শক্তিশালী করতে বাংলালিংক বিনিয়োগ অব্যাহত রেখেছে।

/এসএনএইচ/