জামানত ছাড়াই ৫ শতাংশ সুদে ঋণ পাবেন দুগ্ধ খামারিরা

বাংলাদেশ ব্যাংকএখন থেকে জামানত ছাড়াই ৫ শতাংশ সুদে ঋণ পাবেন দেশের দুগ্ধ খামারিরা। দুধের চাহিদা পূরণে দুগ্ধ খামারিদেরকে উৎসাহ দিতে বাংলাদেশ ব্যাংক এই উদ্যোগ নিয়েছে। বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ বিষয়ে একটি নির্দেশনা জারি করেছে।

দেশের সব বাণিজ্যিক ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীর কাছে পাঠানো নির্দেশনায় বলা হয়েছে, দুগ্ধ খামারিদের ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে কোনওরূপ সহায়ক জামানত গ্রহণ করা যাবে না।

জানা গেছে, দেশে দুধের মোট চাহিদার মাত্র ২০ শতাংশ উৎপাদন হয়। বাকি ৮০ শতাংশ বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। গবাদি পশু চাষ, দুগ্ধ উৎপাদন ও গবাদি পশুর কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্র স্থাপনের লক্ষ্যে গত জুনে ২শ’ কোটি টাকার একটি পুনঃঅর্থায়ন তহবিল চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। সরকারের সুদ-ভর্তুকির আওতায় ৫ শতাংশ সুদের এ ঋণের বিষয়ে গত ২ জুন সার্কুলার জারি করা হয়। এ তহবিল থেকে গ্রাহক পর্যায়ে ৫ শতাংশ সুদে ঋণ বিতরণ করলেও ব্যাংকগুলো পাবে ১০ শতাংশ সুদ। বাকি ৫ শতাংশ সরকার ভর্তুকি দেবে।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এসকে সুর চৌধুরী বলেন, প্রতি বছর আমাদের ৪শ’ কোটি টাকার দুধ আমদানি করতে হয়। প্রকৃত খামারিরা যাতে এই ঋণ নিতে পারেন সে জন্যই বাংলাদেশ ব্যাংক জামানত ছাড়াই ৫ শতাংশ সুদে ঋণের ব্যবস্থা করেছে।

তিনি আরও বলেন, এই ঋণ নিয়ে গাভী কেনা হলে দুধের সংকট ক্রমেই কমে আসবে। দুধের আমদানি নির্ভরতাও কমবে।

এর আগে পুনঃঅর্থায়ন তহবিলের আওতায় ১২টি ব্যাংক ও ১টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে এ ঋণ বিতরণের চুক্তি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই ব্যাংকগুলো মাঠ পর্যায়ের দুগ্ধ খামারিদের ঋণ দেবে। প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে- সোনালী, জনতা, অগ্রণী, রূপালী, বেসিক, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, আনসার ভিডিপি ব্যাংক, কর্মসংস্থান ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, আইএফআইসি ব্যাংক, মিডল্যান্ড ব্যাংক ও আইডিএলসি ফাইন্যান্স লিমিটেড।

জানা গেছে, গাভী পালন, গাভী ক্রয় ও কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে শংকর জাতের গাভী পালনের জন্য বিদ্যমান ঋণ সুবিধার পাশাপাশি এ খাতে অধিকতর ঋণ প্রবাহ নিশ্চিত করতে ৫ বছর মেয়াদী (নবায়ন-আবর্তন যোগ্য) ঋণ বিতরণ করবে ব্যাংকগুলো। একজন গ্রাহক ৫০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ নিতে পারবেন। এর বাইরে বাংলাদেশ ব্যাংকের এই পুনঃঅর্থায়ন কর্মসূচির আওতায় বকনা বাছুর কেনা ও লালন-পালনে পাঁচ শতাংশ সুদে ঋণ নিতে পারবেন খামারিরা। এছাড়া ঋণের আসল পরিশোধে সাড়ে ৪ বছর সময় পাবেন তারা। প্রতিটি বকনা বাছুর কেনার জন্য ৪০ হাজার এবং লালনপালনের জন্য ১০ হাজারসহ মোট ৫০ হাজার টাকা করে সর্বোচ্চ চারটি বকনা কেনায় ঋণ দেওয়া যাবে। এক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দিতে হবে নারী ও প্রান্তিক খামারিদের।

প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের উপজেলা কার্যালয়ের মাঠকর্মীরা নমুনা ভিত্তিতে এ স্কিমের আওতায় বিতরণকৃত ঋণের সদ্ব্যবহার যাচাই করবেন। সেখানে কোনও অনিয়ম হলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

/জিএম/এসএনএইচ/