পাট থেকে ‘ভিসকস’ উৎপাদন করতে চায় সরকার

বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজমদেশি পাট থেকে সুতার প্রধান কাচাঁমাল ‘ভিসকস’ তৈরি করতে চায় সরকার। এজন্য সরকারি পাটকলগুলোর মানন্নোয়ণে চীনের সঙ্গে চুক্তি করেছে বাংলাদেশ জুট মিল করপোরেশন (বিজেএমসি)।

রবিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর লা মেরিডিয়ানে হেটেলে চায়না টেক্সটাইল ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল করপোরেশন ফর ফরেন ইকনোমিক অ্যান্ড টেকনিকাল কো-অপারেশন (সিটিইএক্সআইসি) ও  বিজেএমসির মধ্যে একটি মিনিউটস অব ডিসকাশন (এমওডি) সই হয়েছে। এ চুক্তির আওতায় বিজেএমসির মিলগুলোয় চীন শুধু কারিগরি সহায়তাই দেবে না বিনিয়োগও করবে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম, চীনের ভাইস মিনিস্টার ও চায়না ন্যাশনাল টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেল কাউন্সিলের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ওয়াং টিনকাই, চায়না ন্যাশনাল টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেল কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট সান রুইজিট, ঢাকায় চীনের দূতাবাসের ইকনোমিক ও কর্মাসিয়াল কাউন্সিলর লি জুনানজু, বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভলপমেন্ট অথরিটির এক্সিকিউটিভ চেয়ারম্যান কাজী মো. আমিনুল ইসলাম, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব এম এ কাদের সরকার, অতিরিক্ত সচিব গোপাল কৃষ্ণ ভট্টাচার্য্য, ড. মো. নজরুল আনোয়ার, পাট অধিদফতরের মহাপরিচালক মোছলেহ উদ্দিন, বিজেএমসির চেয়ারম্যান ড. মাহমুদুল হাসান, বিটিএমসির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. বায়জিদ সারোয়ারসহ চীনের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা।

এ সময় মির্জা আজম বলেন, ‘চীন ও বাংলাদেশের বন্ধুপ্রতীম দেশ। দু’দেশের নিয়মিত বাণিজ্য বাড়ানোর মাধ্যমে এ সম্পর্ক আরও জোরদার হচ্ছে। সেজন্য বস্ত্র ও পাটখাতে চীনের সঙ্গে ব্যবসা সম্প্রসারণ ঘটাতে চায় বাংলাদেশ।’

চীনের ভাইস মিনিস্টার ওয়াং টিনকাই বক্তৃতায় উল্লেখ করেন, ‘যে চীন সারা বিশ্বের চাহিদার ১৭ ভাগ সুতা উৎপাদন করে থাকে। কিন্তু দিন দিন চীনের উৎপাদন কমছে। কেননা চীনে প্রাকৃতিক উৎস থেকে কাচাঁমাল কমে আসছে। বিপরীত দিকে বাংলাদেশে প্রচুর কাচাঁমাল রয়েছে কিন্তু প্রযুক্তিগত স্বল্পতা রয়েছে। আমরা আমাদের কারিগরি দক্ষতা কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশে ভিসকস উৎপাদন করতে চাই।’

ভিসকস দেখতে সুতার মতো কিন্ত তার থেকেও সূক্ষ। এ ভিসকসের ব্যবহার হয় তুলার বিকল্প হিসাবে সুতা তৈরির কাজে। তবে শুধু গবেষণাগার নয় ভিসকসের ব্যবহার এখন বিশ্বজুরে সুতা তৈরিরর কারখানা গুলোতে। তুলার উৎপাদন কমে আসায় গত বছর বাংলাদেশ প্রায় ৬৫০ কোটি টাকার ৩৩ হাজার ৭৩৭ টন ভিসকস পৃথিবীরর বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করে। যদি বাংলাদেশে এ ভিসকস উৎপাদিত হয় তবে বিদেশ থেকে তা আর আমদানি করতে হবে না। যদি পটি থেকে ভিসকস উৎপাদনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা যায় তবে উৎপাদিত ভিসকসের পুরোটাই বিকেএমইএ-এর সদস্য মিলগুলো ক্রয় করে নেবে। এছাড়া পাট থেকে ভিসকস উৎপাদিত হলে এবং এর দ্বারা উৎপাদিত সুতার মাধ্যমে প্রস্তুকৃত কাপড়ের সাহায্যে গার্মেন্টস সামগ্রী তৈরি করা হলে শতভাগ মূল্য সংযোজন করা সম্ভব। দেশের ঐতিহ্যবাহী পাটের সহিত মূল্য সংযোজন করে ২/৩ গুণ বেশি দরে বিক্রি করতে হলে পাট থেকে ভিসকস উৎপাদনের মাধ্যমে তা করা যেতে পারে।

/এসআই/এসএনএইচ/