আরাস্তু খান বলেন, ‘এত দিন একটি বিশেষ দলের লোকদের কেবল নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এখন থেকে নিয়োগ প্রক্রিয়া আরও স্বচ্ছ করা হবে। দেশের সব শ্রেণির মেধাবীরা যেন এই ব্যাংকে নিয়োগ পেতে পারেন সে ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া হবে। এখন থেকে নারী ও হিন্দুরাও ইসলামী ব্যাংকে নিয়োগ পাবেন। এছাড়া সিএসআরের অর্থ-অপব্যবহার রোধে কঠোর নীতি গ্রহণ করা হবে। অনুমোদন ছাড়া কোনও অর্থই ছাড় করা হবে না।’ তিনি বলেন, ‘তবে ব্যাংকের দর্শন বা মৌলিকনীতির কোনও পরিবর্তন হবে না। আগের মতোই শরিয়াহ অনুযায়ী এই ব্যাংক পরিচালিত হবে।
নতুন নেতৃত্ব আসায় ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন হলেও ব্যাংক আগের নিয়মেই পরিচালিত হবে জানিয়ে আরাস্তু খান বলেন, ‘এই ব্যাংকে যারা নিচের পদে কর্মরত রয়েছেন তাদের কারও চাকরি যাবে না। এ কারণে এই ব্যাংকের প্রতি দেশের জনগণের আস্থাও অটুট থাকবে।’
আরস্ত খান বলেন, ‘ইসলামী ব্যাংকের আমানত গ্রহণ, অর্থায়ন সেবা, বিনিয়োগসহ সব কার্যক্রম শরিয়াহ মোতাবেক সুদবিহীন ও লাভ ক্ষতির ভিত্তিতেই পরিচালিত হবে।’ এক্ষেত্রে শরিয়াহ আইন আগের চেয়েও কঠোরভাবে মেনে চলা হবে বলে জানান তিনি।
অরাজকতামূলক কোনও কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার সুনির্দিষ্ট কোনও তথ্য না থাকলে একজন কর্মকর্তাকেও চাকরিচ্যুত করা হবে না বলে জানান আরস্ত খান। তিনি বলেন, ‘এই ব্যাংকের কর্মকর্তারা অনেক কম টাকায় চাকরি করেন। ব্যাংকের জন্য সত্যিকার অর্থেই এসব কর্মকর্তারা নিবেদিত। তাই তাদের সরানোর কোনও ইচ্ছে নেই। বরং কর্মকর্তাদের সব লেভেলে প্রমোশন দেওয়া হবে, বেতনও বাড়ানো হবে। আগে যে কয়টা বোনাস দেওয়া হতো এবারও তাই দেওয়া হবে। ’
ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক সৈয়দ আহসানুল আলম বলেন, ‘সিএসআরের একটি টাকাও আর চোখ বুজে ব্যয় করা হবে না। অপব্যবহার রোধে আরও উদ্যোগ নেওয়া হবে। এখন থেকে দেশের কল্যাণে সিএসআরের অর্থ ব্যয় করা হবে।’ তবে তিনি ৮ মাস আগে ব্যাংকে যোগ দেওয়ার পর তদন্ত করে সিএসআরের কোনও অর্থই অপব্যবহার হয়নি বলে দাবি করেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সৈয়দ আহসানুল আলম বলেন, ‘আগে পরিচালনা পর্ষদ ভালো ছিল, তবে তাদের দিকে তীর্যক প্রশ্ন ছিল সবার। তারা ছিলেন প্রশ্নবিদ্ধ।’ তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘কোনও অবস্থাতেই এই ব্যাংকের নাম পরিবর্তন করা হবে না। ইসলামী ব্যাংক পরিচালনার ক্ষেত্রে দর্শন বা মৌলিকনীতির কোনও পরিবর্তন করা হবে না।’
আগে এই ব্যাংকে ইসলাম বেচা কেনা হয়েছে দাবি করে সৈয়দ আহসানুল আলম বলেন, ‘এখন থেকে প্রকৃত ইসলামি দর্শনে চলবে এই ব্যাংক। এই ব্যাংককে গরিব মানুষের ব্যাংক বলা হলেও মাত্র ৪ শতাংশ অসহায় গরিব মানুষ এই ব্যাংক থেকে ঋণ পেয়েছেন। এখন থেকে ১০ শতাংশ গরিব মানুষ এই ব্যাংক থেকে ঋণ পাবেন। তিনি বলেন, ‘১০ লাখ নারী উদ্যোক্তাকে এসএমই ঋণ দেওয়া হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, ব্যাংকটি মেজর জেনারেল (অব.) ইঞ্জিনিয়ার আবদুল মতিন, অধ্যাপক অধ্যাপক ডা. কাজী শহিদুল আলম প্রমুখ।
আরও পড়ুন: ইসলামী ব্যাংকের লভ্যাংশ কোথায় যায়, খতিয়ে দেখা হবে: অর্থমন্ত্রী
/জিএম/ এমএনএইচ/