ইসলামী ব্যাংক ছেড়ে যাচ্ছে আইডিবি

 

ইসলামী ব্যাংক ও আইডিবিইসলামী ব্যাংক থেকে চলে যাচ্ছে ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (আইডিবি)। ইসলামী ব্যাংকে থাকা সাড়ে ৭ শতাংশ শেয়ারের মধ্যে প্রায় ৫ শতাংশ শেয়ার বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। শনিবার ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ বিষয়টি অনুমোদন দিয়েছে। ইসলামী ব্যাংকের বোর্ড সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

এ প্রসঙ্গে ইসলামী ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক সৈয়দ আহসানুল আলম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘একটি পরিচালকের পদ ধরে রাখতে আড়াই ২ শতাংশ শেয়ার রেখে বাকি প্রায় ৫ শতাংশ শেয়ার বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আজকের বোর্ডসভা আইডিবিকে প্রায় ৫ শতাংশ শেয়ার বিক্রি করার অনুমোদন দিয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘আইডিবির প্রতিনিধি ড. আরিফ সুলেমান ইসলামী ব্যাংকের পরিচালক থাকছেন। এর বাইরে তাদের অতিরিক্ত সব শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছেন।’

উল্লেখ্য, ইসলামী ব্যাংকে আইডিবির ১২ কোটি ৭ লাখ ৮৮ হাজার ৫৮৫টি শেয়ার রয়েছে। বর্তমান বাজার দরে যার মূল্য প্রায় ৪০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৭২ ভাগ তথা প্রায় ৩০০ কোটি টাকার শেয়ার ছেড়ে দিচ্ছে জেদ্দাভিত্তিক এ ব্যাংকটি।

জানা গেছে, ইসলামী ব্যাংকের বিদেশি শেয়ারহোল্ডার ৫২ শতাংশ শেয়ারের মধ্যে আইডিবি এককভাবে সাড়ে ৭ শতাংশ শেয়ার ধারণ করছে। নিয়ম অনুযায়ী কোনও ব্যাংকে পরিচালক পদ রাখতে ন্যূনতম ২ শতাংশ শেয়ার থাকতে হয়।

গত ৩০ মার্চ অনুষ্ঠিত ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় আইডিবির প্রতিনিধি ড. আরিফ সুলেমান শেয়ার ছাড়ার বিষয়টি উপস্থাপন করেন। ওই সময় বোর্ডের অন্য সদস্যরা শেয়ার না ছাড়ার পরামর্শ দিলেও  শনিবারের (১৩ মে) বোর্ড সভায় আইডিবির প্রায় ৫ শতাংশ শেয়ার বিক্রির অনুমোদন দেয়।

ইসলামী ব্যাংকে অনুষ্ঠিত এই বোর্ড সভায় সভাপত্বি করেন ব্যাংকের চেয়ারম্যান আরাস্তু খান। এদিকে ইসলামী ব্যাংক পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত একটি প্রতিষ্ঠান হওয়াতে শেয়ার বিক্রির প্রক্রিয়ায় বিএসইসির অনুমোদন প্রয়োজন হয়। বিএসইসি থেকেও অনুমোদনও নেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, সারা বিশ্বে ইসলামী ব্যাংকিং ব্যবস্থা প্রসারে আইডিবি কাজ করে।

প্রসঙ্গত, গত ৫ জানুয়ারি রাজধানীর একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত পরিচালনা পর্ষদের সভায় এই ব্যাংকের শীর্ষ পর্যায়ে ব্যাপক রদবদল করা হয়। পুনর্গঠন করা হয় পরিচালনা পর্ষদ। পর্ষদের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মোস্তফা আনোয়ারকে সরিয়ে নতুন চেয়ারম্যান করা হয় সাবেক সচিব আরাস্তু খানকে। পদত্যাগে বাধ্য করানো হয় ব্যাংকের এমডি মোহাম্মদ আবদুল মান্নানকে। নতুন এমডির দায়িত্ব দেওয়া হয় ইউনিয়ন ব্যাংকের এমডি মো. আবদুল হামিদ মিঞাকে।

ইসলামী ব্যাংকের এই পরিবর্তনে ওই সময় উদ্বেগ প্রকাশ করে  আইডিবি। গত ২৪ জানুয়ারি আইডিবি গ্রুপের প্রেসিডেন্ট ড. বন্দর এম এইচ হাজ্জার অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতকে এক পত্র দিয়ে তাদের উদ্বেগের কথা জানান। এমনকি ব্যাংকের শীর্ষস্থানীয় এই পরিবর্তনে আইডিবির কোনও সম্মতি ছিল না বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।

এর আগে ইসলামী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মুস্তাফা আনোয়ার তার শেয়ারের সিংহভাগ ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা দেন। ব্যাংকে তার ৪২ লাখ ২৬ হাজার ৩৩২টি শেয়ার রয়েছে। এর মধ্যে বাজারদরে ৪০ লাখ শেয়ার বিক্রির ঘোষণা দেওয়া হয়।

/এমএনএইচ/