পোশাক শিল্পকে উৎসে করমুক্ত রাখার দাবি বিজিএমইএ’র

বিজিএমইএ সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমানআগামী দুই বছর তৈরি পোশাক শিল্পকে উৎসে করমুক্ত রাখার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)। একই সঙ্গে সংগঠনটি আগামী দুই বছর পোশাক রফতানিতে ৫ শতাংশ হারে প্রণোদনা দেওয়ারও দাবি জানিয়েছে।

শনিবার পোশাক শিল্পের বর্তমান পরিস্থিতি ও আসন্ন বাজেট (২০১৭-১৮) বিষয়ক এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানান বিজিএমইএ’র সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান।

রাজধানীর কাওরান বাজারে বিজিএমইএ ভবনের সভাকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘গত চার বছরে পোশাক খাত সংশ্লিষ্ট এক হাজার দুইশ কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে এই শিল্পে কর্মরত শ্রমিক কমে গেছে প্রায় চার লাখ। বাংলাদেশের প্রায় ২৮ বিলিয়ন ডলারের রফতানি আয়ে পোশাক খাতের অপদান ৮০ শতাংশ। কিন্তু গত কয়েক বছরে বাংলাদেশের পোশাক শিল্প বিশ্ব বাজারে প্রতিকূলতার মুখোমুখি হচ্ছে। তাই এই সংকট উত্তরণে আগামী ২ বছরের জন্য এই খাতে উৎসে কর প্রত্যাহারসহ সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা আশা করছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘পোশাকের অব্যাহত দরপতন, রিমেডিয়েশনসহ বিভিন্ন কারণে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি এবং ডলারের বিপরীতে টাকার শক্তিশালী অবস্থানের কারণে কারখানাগুলোর প্রতিযোগী সক্ষমতা কমে যাচ্ছে। এ অবস্থায় কর্মসংস্থান এবং রফতানি আয়ের সক্ষমতা ধরে রাখতে আগামী অর্থবছরের বাজেটে আমরা বেশ কিছু নীতি সহায়তার আশা করছি।’

বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, গত ১০ বছর পোশাক রফতানিতে গড় প্রবৃদ্ধি ছিল ১৩ শতাংশ। তবে চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ১০ মাসে প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ২ দশমিক ২১ শতাংশ। বিশ্ববাজারে পোশাকের চাহিদা ও ক্রয় কমে যাওয়ায় রফতানি আয়ও কমে গেছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রফতানি কমেছে ৬ দশমিক ৮০ শতাংশ এবং যুক্তরাজ্যে কমেছে ৫ দশমিক ৯১ শতাংশ।’

তিনি আরও বলেন, ‘তৈরি পোশাক শিল্পের করপোরেট কর হার ২০ শতাংশের পরিবর্তে ১০ শতাংশ ধার্য করে তা ৫ বছর পর্যন্ত কার্যকর রাখতে হবে। শিল্প ও বাণিজ্যের ক্ষেত্রে রাজস্ব নীতি অন্তত ৫ বছরের জন্য স্থিতিশীল রাখা প্রয়োজন।’

সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে নতুন বাজারে প্রবেশের চেষ্টা করলেও আশানুরূপ ফল পাওয়া যায়নি। ব্যাপক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও জাপানের বাজারে প্রবেশ করা যাচ্ছে না। অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডের বাজারের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। সব মিলিয়ে গত ১০ মাসে নতুন বাজারে রফতানি প্রবৃদ্ধি মাত্র ১ দশমিক ২১ শতাংশ। গত বছর প্রবৃদ্ধির এ হার ছিল ১৫ থেকে ২০ শতাংশ।’

তিনি বলেন, ‘প্রবৃদ্ধি কমার মূল কারণগুলোর মধ্যে আছে নতুন বাজারে প্রবেশের চেষ্টায় আশাব্যাঞ্জক ফল না পাওয়া, গ্যাস-বিদ্যুৎ সংকট, ব্যাংকের উচ্চ সুদ হার, বিনিয়োগ কমে যাওয়া এবং উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি।’

সংবাদ সম্মেলনে বিজিএমইএ সহ-সভাপতি মোহাম্মাদ নাসির এবং মোহাম্মদ হাসান খান বাবুসহ বিজিএমইএ অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

/জিএম/এসএনএইচ/