বাজেটে আশা দীর্ঘ, আশ্বাস সংক্ষিপ্ত: বিশ্বব্যাংক

বিশ্বাব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটে আশা দীর্ঘ ও আশ্বাস সংক্ষিপ্ত বলে মনে করছে বিশ্বব্যাংক। মঙ্গলবার আগারগাঁওয়ে সংস্থাটির কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রস্তাবিত বাজেট বিষয়ে এ প্রতিক্রিয়া দেয় বিশ্বব্যাংক।

সংবাদ সম্মেলনে বিশ্বাব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, ‘এবারের প্রস্তাবিত বাজেটে জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৪ শতাংশ ধরা হয়েছে। এ লক্ষ্য পূরণে যে ধরনের সংস্কার বা পদক্ষেপ দরকার ছিল বাজেটে তা উল্লেখ করা হয়নি।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রস্তাবিত বাজেটে নতুন কোনও চমক নেই। সব কিছুই গতাণুগতিক। অথচ প্রতিবছরই উচ্চাভিলাসী বাজেট দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু সংস্কার পদক্ষেপ না থাকায় বাজেটে লক্ষ্য বিশ্বাসযোগ্যতা হারাচ্ছে। বাজেটে বিভিন্ন খাতের সংস্কার, অবকাঠামো, ব্যক্তি বিনিয়োগের বিষয়ে কোনও পরিস্কার নির্দেশনা নেই।’

আগামী অর্থবছরের জন্য বাজেটে ৫টি চ্যালেঞ্জ রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাজেট বাস্তবায়নে বেশ কয়েকটি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। এর মধ্যে, ব্যাংক খাতে সুশাসন ও তদারকি বাড়ানো, খেলাপি ঋণের ঝুঁকি কমানো, আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে বিদ্যুতের দাম সমন্বয় করা, সঞ্চয়পত্রের সুদের হার সমন্বয় করা, বাজারের সঙ্গে মুদ্রা বিনিময় হার সমন্বয় করা, চালের দাম নিয়ন্ত্রণ এবং রেমিট্যান্স খাতের উন্নয়ন।’

জাহিদ  হোসেন বলেন, ‘বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় আমাদের দেশে প্রকল্প বাস্তবায়ন ব্যয় অনেক বেশি। এর প্রধান কারণ টেন্ডার প্রতিযোগিতা অনেক কম। তাই সরকারের উচিত ৮০ শতাংশ ই-টেন্ডার করা। এটা করতে পারলে টেন্ডারে প্রতিযোগিতা বাড়বে এবং প্রকল্প বাস্তবায়ন খরচ কমবে।’

রাজস্ব আহরণের জন্য নতুন ভ্যাট আইন সঠিকভাবে বাস্তবায়ন জরুরি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই আইন যদি বাস্তবায়ন হয়, তবে নিম্ন আয়ের মানুষের ওপর প্রভাব পড়বে না। কারণ তাদের মৌলিক পণ্যের ওপর কর অব্যাহতি রয়েছে। ভ্যাট আইন আগেও ছিল, এখনও আছে। এটার সঠিক বাস্তবায়নই মূল কথা। এটা বাস্তবায়ন হলে মূদ্রাস্ফীতি বাড়বে না, বরং বাজেটে বাস্তবায়ন সক্ষমতা বাড়বে।’

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ আবাসিক প্রতিনিধি চিমিও ফান, বিশ্বব্যাংকের অর্থনীতিবিদ শেখ তানজিব ইসলাম, অ্যানালিস্ট সাবিহা সুবহা মোহনা প্রমুখ।

/আরএআর/এসএনএইচ/