ঈদকে কেন্দ্র করে অস্থির রাজধানীর কাঁচাবাজার

 

কাঁচাবাজার (ছবি- ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত)

রমজান প্রায় শেষ। তিন মাস আগে বাড়তি দামে বিক্রি হওয়া নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম এখনও কমেনি। ঈদের বাকি আর মাত্র একদিন। এই সময়ে রাজধানীর বাজারে কিছু পণ্যের দাম আবারও বেড়েছে। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে কাঁচামরিচ, শসা, লেবু, ধনে পাতা, পুদিনা পাতা, টমেটো, সেমাই ও চিনির দাম। অতিবৃষ্টির কারণে বেড়েছে কাঁচামরিচের দাম। শনিবার রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, শান্তিনগর ও শাহজাহানপুর কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, খুচরা বাজারে প্রতিকেজি কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা দরে। দোকানিরা ইঙ্গিত দিয়েছেন, আজ  রবিবার এ দাম আরও বাড়বে।

ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, সব ধরনের সেমাইয়ে প্যাকেট প্রতি দাম বেড়েছে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত। মসলায় দাম বেড়েছে কেজিতে ২০০ টাকা থেকে ৭০০ টাকা পর্যন্ত। আর চিনির দাম খুব কম সময়ের জন্য মাঝখানে প্রতিকেজি ৭০ টাকায় নামলেও, আবার তা বেড়ে গিয়ে ঠেকেছে ৮২ টাকায়।

এদিকে সবজির বাজারও বেশ চড়া। নতুন করে বেড়েছে টমেটো ও কাঁচামরিচের দাম। গত সপ্তাহে ৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হওয়া টমেটো ১২০ টাকা এবং ৮০ টাকা দরে বিক্রি হওয়া কাঁচামরিচ ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।  ধনিয়া পাতার কেজি স্থানভেদে ২০০ টাকা । পুদিনা পাতার দামও একই রকম। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে টমেটোর দাম ৭০ টাকা এবং মরিচের দাম কেজিতে ৪০ টাকা বেড়েছে। অন্য পণ্যগুলোর দাম কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা করে বেড়েছে।

রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, অন্য দোকানিদের মতো ব্যস্ততা বেড়েছে মুদি দোকানিদেরও। ক্রেতাদের কাছে প্যাকেট সেমাইয়ের কদর বেশি।বাজারে ৫ থেকে ৬ রকমের প্যাকেট সেমাই পাওয়া যায়। এর মধ্যে রয়েছে কুলসুম, বনফুল, ফুলকলি ও ড্যানিশ লাচ্ছা সেমাই। খোলা লাচ্ছা সেমাইয়ের দাম এবার কিছুটা বেড়েছে। গতবছর যে সেমাই বাজারে পাওয়া যেত ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। এ বছর প্রতি কেজি খোলা লাচ্ছা সেমাই কিনতে হচ্ছে ৮০ থেকে ১২০ টাকা দরে। স্পেশাল সেমাইয়ের দাম উঠেছে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত

এদিকে রাজধানীর কারওয়ান বাজারসহ আরও কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে টমেটো কেজিতে ৭০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা দরে। প্রতি কেজি কাঁচামরিচের দাম ৪০ টাকা বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা দরে। কেজিপ্রতি চিনি ৭৫ থেকে ৮২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মুদি দোকান, ছবি- ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত

বাজার পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, ছোলা ৯০, দেশি মুগ ডাল ১৩০, ভারতীয় মুগ ডাল ১২০, মাশকলাই ১৩৫, দেশি মসুর ডাল ১২৫ ও ভারতীয় মসুর ডাল ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ৫ লিটারের ভোজ্যতেলের বোতল ব্রান্ড ভেদে ৫০০ থেকে ৫১০ টাকা, প্রতি লিটার ভোজ্যতেল ১০০ থেকে ১০৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চীনের আদা ১২০ এবং কেরালা আদা ১৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

নিত্যপ্রয়োজনীয় কাঁচাপণ্যের বাজারে দেখা গেছে, প্রতি কেজি বেগুন ৫০ থেকে ৭০, শসা ৪০, চাল কুমড়া প্রতিপিস ৩৫ থেকে ৪০, কচুরলতি কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা। পটল ৪০, ঢেঁড়স ৫০, ঝিঙ্গা ৬০, চিচিঙ্গা ৪০, করলা ৫০ থেকে ৬০, কাঁকরোল ৪০, আলু ১৮ থেকে ২০, পেঁপে ৩০ থেকে ৪০ ও কচুরমুখী ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এ ছাড়া লেবু হালিপ্রতি ২০ থেকে ৪০, লালশাক ১৫, পুঁইশাক ২০ ও লাউশাক ২০ টাকা আটি দরে বিক্রি হচ্ছে। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে মোটা স্বর্ণা চাল প্রতি কেজি ৪৮, পারিজা চাল ৪৬, মিনিকেট (ভালো মানের) ৬০, মিনিকেট (সাধারণ) ৫৬, বিআর২৮ ৫০ থেকে ৫২, সাধারণ মানের নাজিরশাইল ৫৮ থেকে ৬০, উন্নতমানের নাজিরশাইল ৫৮ থেকে ৬২, পাইজাম চাল ৫০ থেকে ৫২, কাটারিভোগ ৭৬ থেকে ৭৮, পোলাওর চাল ১০০ (পুরনো) ও নতুন ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

মাছের বাজারে আকার ভেদে প্রতি কেজি রুই মাছ ২৪০ থেকে ৩২০, সরপুঁটি ১৮০ থেকে ৩৫০, কাতলা ৩৩০ থেকে ৩৬০, তেলাপিয়া ১৪০ থেকে ১৬০, সিলভার কার্প ২০০ থেকে ২৫০ ও চাষের কৈ ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়। পাঙ্গাস প্রতি কেজি ১৫০ থেকে ২৫০, টেংরা ৬০০, মাগুর ৬০০ থেকে ৮০০, প্রকার ভেদে চিংড়ি ৪০০ থেকে ৮০০ ও প্রতিটি ইলিশ ৮০০ থেকে ১৫০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি ইলিশের দাম রাখা হচ্ছে ১৬০০ টাকা। গরুর মাংস ৫০০ থেকে ৫২০ ও খাসির মাংস ৭৩০ থেকে ৭৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া মুরগির দাম কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা করে বেড়েছে। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৮০, লেয়ার মুরগি ২০০, দেশি মুরগি প্রতি পিস ৪০০ ও পাকিস্তানি লাল মুরগি ২৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

/এসআই/এমএইচ/ এপিএইচ/

আরও পড়ুন: 

নাড়ির টানে, ভোটের টানে