বাংলাদেশ সুগার অ্যান্ড ফুড ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিএসএফআইসি) ২০১৪-১৫ অর্থবছরের তথ্য মতে, দেশে চিনি খাতে পুঞ্জিভূত লোকসান দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৫১০ কোটি টাকা। একই সময়ে দেশের ১৪ লাখ টন চাহিদার বিপরীতে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন মিলগুলোতে চিনি উৎপাদিত হয় মাত্র ৭৭ হাজার ৪৫০ টন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মতে, বাংলাদেশে বার্ষিক মাথাপিছু চিনির চাহিদা ৯ কেজি।
কাঁচামালের ঘাটতি
বিএসএফআইসি’র চেয়ারম্যান একেএম দেলওয়ার হোসেন বলেন, ‘আমাদের অধীনে অধিকাংশ মিলের চাহিদা অনুযায়ী উৎপাদন সক্ষমতা রয়েছে। কিন্তু কাঁচামালের (আখ) ঘাটতির কারণে আমরা তা পূরণে ব্যর্থ হচ্ছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাজারে আখের ঘাটতি থাকায় কেরু অ্যান্ড কোম্পানি চলতি মৌসুমে মাত্র ৭৬ দিন চালু ছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘চিনি উৎপাদনের জন্য বিভিন্ন ধরনের কেমিক্যাল প্রয়োজন হয়। যা চিনির উৎপাদন খরচ বাড়িয়ে দেয়। মিলগুলো অলস পড়ে থাকলে চিনির উৎপাদন খরচ বেড়ে যায়।’
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য হারে আখের উৎপাদন কমেছে। কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের (ডিএই) তথ্য অনুযায়ী, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে দেশে মোট দুই লাখ ৮১ হাজার একর জমিতে ৫৫ লাখ টন আখ উৎপাদন হয়। চলতি অর্থবছরে যা কমে প্রায় অর্ধেকে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে দেড় লাখ একর জমিতে আখ চাষ হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের (ডিএই) উপ পরিচালক (আখ) মিজানুর রহমান খান বলেন, ‘বাজারে অন্যান্য অর্থকরী ফসলের চেয়ে আখের দাম কম হওয়ায় কৃষকরা আখ চাষে অনীহা দেখান। কৃষকরা সারাবছর জমিতে আখ রাখতে রাজি নন, কারণ একই সময়ে তারা তিনটি অন্য ফসল তুলতে পারেন।’
রাষ্ট্রীয় মালিকাধীন ১৫টি চিনি কলের মধ্যে মাত্র ৫টির নিজস্ব আখ চাষের জমি আছে। মিলগুলো হলো- ঠাকুরগাঁও চিনি কল, সেতাবগঞ্জ চিনি কল, মহিমাগঞ্জ চিনি কল, গাইবান্ধা চিনি কল এবং কেরু অ্যান্ড কোম্পানি। তবে অজানা কারণে এসব মিলের অধিকাংশ জমি অনাবাদী থেকে যায়।
মোবারকগঞ্জ চিনি কলের জেনারেল ম্যানেজার মো. আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ‘আবাদযোগ্য জমিতে আখ চাষ না করা অদক্ষতার পরিচয়। যদি এসব মিলগুলো নিজস্ব জমিতে আখ চাষ করতে পারে, তবে এ খাতের লোকসান কমে আসবে।’
সৌজন্য: ঢাকা ট্রিবিউন
/এসএনএইচ/ এপিএইচ/