রফতানির বিপরীতে নগদ সহায়তা পাবে ৩৬টি পণ্য

বাংলাদেশ ব্যাংকদেশের রফতানি বাণিজ্যকে উৎসাহিত করতে ৩৬টি পণ্য রফতানিতে নগদ সহায়তা ও ভর্তুকি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। চলতি বছরের ১ জুলাই থেকে আগামী বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত জাহাজে করে পণ্য রফতানির ক্ষেত্রে এসব পণ্যে বিভিন্ন হারে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, রফতানি উৎসাহিত করতে বেশ আগে থেকেই বিভিন্ন সুবিধা দিয়ে আসছে সরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগের উপ-মহাব্যবস্থাপক আবদুল মান্নান স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, গরু-মহিষের নাড়ি, ভুঁড়ি, শিং ও রগ রফতানির বিপরীতে ভর্তুকি দেওয়া হবে ১০ শতাংশ হারে। শস্য ও শাক সবজির বীজ রফতানির বিপরীতে ভর্তুকি দেওয়া হবে ২০ শতাংশ হারে। পাটকাঠি থেকে উৎপাদিত কার্বন রফতানির বিপরীতে ভর্তুকি দেওয়া হবে ২০ শতাংশ।
কৃষিপণ্য (শাক-সবজি ও ফলমূল) ও প্রক্রিয়াজাত (এগ্রোপ্রসেসিং) কৃষিপণ্য রফতানির বিপরীতে ২০ শতাংশ ভর্তুকি, হাল্কা প্রকৌশল পণ্য রফতানিতে ১৫ শতাংশ, ১০০% হালাল মাংস রফতানিতে ভর্তুকি ২০ শতাংশ, জাহাজ রফতানিতে ১০ শতাংশ, পেট বোতল-ফ্লেক্স রফতানিতে ১০ শতাংশ, ফার্নিচার রফতানিতে ১৫ শতাংশ, প্লাস্টিক দ্রব্য রফতানিতে ১০ শতাংশ সহায়তা দেওয়া হবে।

এছাড়া, পাটজাত দ্রব্যাদির মধ্যে বৈচিত্র্যকৃত পাট পণ্য রফতানিতে ২০ শতাংশ হারে, পাটজাত চূড়ান্ত দ্রব্য (হেসিয়ান, সেকিং ও সিবিসি) রফতানিতে ১০ শতাংশ এবং পাট সুতা (ইয়ার্ন ও টোয়াইন) রফতানিতে ৫ শতাংশ হারে নগদ সহায়তা দেওয়া হবে। চামড়াজাত দ্রব্যাদি রফতানিতে নগদ সহায়তা দেওয়া হবে ১৫ শতাংশ হারে। এছাড়া সাভারে চামড়া শিল্প নগরীতে স্থানান্তরিত শিল্প প্রতিষ্ঠান থেকে ক্রাস্ট ও ফিনিশড লেদার রফতানিতে ভর্তুকি দেওয়া হবে ১০ শতাংশ হারে।

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, রফতানিমুখী দেশীয় বস্ত্র খাতে শুল্ক বন্ড ও ডিউটি ড্র-ব্যাক এর পরিবর্তে বিকল্প নগদ সহায়তা দেওয়া হবে ৪ শতাংশ, বস্ত্র খাতের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের অতিরিক্ত সুবিধা (প্রচলিত নিয়মের) ৪ শতাংশ, ইউরো অঞ্চলে বস্ত্র খাতের রফতানিকারকদের জন্য বিদ্যমান ৪ শতাংশের অতিরিক্ত বিশেষ সহায়তা ২ শতাংশ, নতুন পণ্য ও বাজার সম্প্রসারণে ৩ শতাংশ সহায়তা, হোগলা খড় আখের ছোবড়া দিয়ে তৈরি পণ্য রফতানিতে নগদ সহায়তা দেওয়া হবে ১৫ শতাংশ। আলু রফতানি খাতে নগদ সহায়তা দেওয়া হবে ১০ শতাংশ।

অন্যদিকে, ৮ ধরণের হিমায়িত চিংড়ি ও অন্যান্য মাছ রফতানিতে নগদ সহায়তা দেওয়া হবে সব মিলিয়ে ৪৮ শতাংশ হারে। এছাড়া দেশে উৎপাদিত কাগজ ও কাগজ জাতীয় পণ্য রফতানির বিপরীতে ১০ শতাংশ হারে এবং আগর ও আতর রফতানিতে ২০ শতাংশ হারে নগদ সহায়তা দেওয়া হবে।

এসব পণ্য রফতানির ক্ষেত্রে জাহাজভাড়া ব্যতিত (এফওবি) নিট মূল্যের ওপর ভর্তুকি দেওয়া হবে। তবে শর্ত থাকে যে, পণ্য উৎপাদনের কোনও পর্যায়ে ডিউটি ড্র-ব্যাক সুবিধা নেওয়া যাবে না। এছাড়া এ জাতীয় পণ্য রফতানির বিপরীতে শুল্ক বন্ড সুবিধা পেয়ে থাকলে এবং ইপিজেড এলাকায় অবস্থিত প্রতিষ্ঠান এ সুবিধা পাবে না।

যুক্ত হলো নতুন ৫ পণ্য
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনে নতুন ৫টি পণ্যে নগদ সহায়তা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ হতে সফটওয়্যার, আইটিইএস ও হার্ডওয়্যার রফতানির বিপরীতে ১০ শতাংশ হারে, সিনথেটিক ও ফেব্রিকসের মিশ্রণে তৈরি জুতা রফতানির বিপরীতে ১৫ শতাংশ হারে, এপিআই (অ্যাকটিভ ফার্মাসিউটিক্যালস ইংগ্রিডিয়েন্ট) রফতানির বিপরীতে ২০ শতাংশ হারে, অ্যাকুমুলেটর ব্যাটারি রফতানির বিপরীতে ১৫ শতাংশ হারে এবং নারিকেল ছোবড়ার আশ দ্বারা তৈরি পণ্য রফতানিতে ২০ শতাংশ হারে নগদ সহায়তা দেওয়া হবে।

প্রজ্ঞাপনে দুটি সংশোধনীর কথা উল্লেখ করে বলা হয়, হাল্কা প্রকৌশল পণ্য রফতানির বিপরীতে রফতানি ভতুর্কির ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশের অধিক মূল্য সংযোজনের পরিবর্তে ৪০ শতাংশের অধিক মূল্য সংযোজনের শর্ত প্রযোজ্য হবে। এবং চামড়াজাত পণ্য রফতানির বিপরীতে সিলিং সীমা হবে চামড়াজাত ব্যাগের ক্ষেত্রে ৪৫ মার্কিন ডলার, বুট ও জুতার ক্ষেত্রে ৩৫ ডলার, স্যান্ডেলের ক্ষেত্রে ২০ ডলার, মানিব্যাগের ক্ষেত্রে ৩০ ডলার, ভ্যানিটি ব্যাগের ক্ষেত্রে ৩৫ ডলার এবং বেল্টের ক্ষেত্রে ২৫ ডলার।

/জিএম/এমও/