ঢাকায় মিয়ানমারের প্রতিনিধি দল, চাল আমদানি নিয়ে চলছে দর কষাকষি

 

বাংলাদেশ-মিয়ানমারচাল রফতানির চুক্তি করতে ঢাকায় এসেছে মিয়ানমারের ৯ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। রবিবার দলটির সদস্যরা দিনব্যাপী বৈঠক করেছেন বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে। সচিবালয়ে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব ছিলেন খাদ্য সচিব মোহাম্মদ কায়কোবাদ এবং মিয়ানমার সরকারের পক্ষে দেশটির রাইস ফেডারেশনের (এমআরএফ) ভাইস প্রেসিডেন্ট মি. অং থান উ।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (রাত সাড়ে ৮টা) চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি কোনও পক্ষই। দরসহ মিয়ানমারের রফতানি শুল্ক বিষয়ে কিছু জটিলতা রয়ে গেছে। সেগুলো নিয়েই আলোচনা চলছে। সচিবালয়ের বৈঠক শেষ হলেও আলোচনা চলছে হোটেল সোনারগঁওয়ে। সেখানেই অবস্থান করছে প্রতিনিধি দলটি।

জানা গেছে, সমঝোতা হলে রবিবার রাতেই এ সংক্রান্ত চুক্তির খসড়া চূড়ান্ত হতে পারে। দর কষাকষির বিষয়ে মিয়ানমার প্রতিনিধি দলটি প্রতিটন নন বাসমতি (সেদ্ধ) চাল ৪৬০ মার্কিন ডলার দরে বিক্রির প্রস্তাব দিলেও বাংলাদেশ চায় সব ধরনের রফতানি শুল্ক পরিশোধ করে ৪২৫ ডলার থেকে সর্বোচ্চ ৪৪০ মার্কিন ডলার দরে চাল আমদানি করতে।

সূত্র জানায়, কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম বা থাইল্যান্ড থেকে যে দরে চাল আমদানির চুক্তি করেছে সরকার, সেই একই দরে মিয়ানমারের সঙ্গে চুক্তি করার যৌক্তিকতা নেই। কারণ ওই তিন দেশের দূরত্ব ও পরিবহন খরচ মিয়ানমারের সমান নয়। বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারের দূরত্ব খুবই কম। 

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম ও থাইল্যান্ড সরকারের সঙ্গে পৃথক পৃথকভাবে জি-টু-জি পদ্ধতিতে বছরে ১০ লাখ মেট্রিক টন চাল আমদানির চুক্তি করলেও মিয়ানমারের সঙ্গে এ সংক্রান্ত চুক্তি করতে পারেনি বাংলাদেশ। প্রতি বছর ১০ লাখ মেট্রিক টন চাল আমদানির প্রস্তাব নিয়ে মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে চুক্তি করতে সম্প্রতি খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামের নেতৃত্বে মিয়ারমার সফর করে এসেছে পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। বাংলাদেশ সরকার মিয়ানমার থেকে জি-টু-জি পদ্ধতিতে চাল কেনার লক্ষ্যে চুক্তি করতে গেলেও মিয়ানমার সরকার ওই সময়ে চুক্তি করেনি। দেশটির প্রস্তাব ছিল বাংলাদেশ সফরে এসে প্রতিনিধি দলটি আলোচনা করেই চুক্তি করবে।

সেই মোতাবেক শনিবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ সফরে আসে ৯ সদস্যের প্রতিনিধি দল।  প্রতিনিধি দলটি সোমবার বেলা ১২টা ৪৫ মিনিটে বিজি ০৬০ নম্বর বিমানযোগে ঢাকা আন্তর্জাতিক বিমান থেকে মিয়ানমারের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়ে যাবে।

চুক্তির সমঝোতা হলে তাতে প্রধানমন্ত্রীর সম্মতি নেওয়া হবে বলেও মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়। প্রধানমন্ত্রীর সম্মতি পেলেই দুই পক্ষই চুক্তিতে স্বাক্ষর করবে। এ সব প্রক্রিয়া অনলাইনেই হবে বলে খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।