এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের সমস্যা জানতেন না পর্ষদ সদস্যরা!

bank20161029205716এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের নতুন চেয়ারম্যান তমাল এস এম পারভেজ দাবি করেছেন, তাদের ব্যাংকের যেসব সমস্যা বাংলাদেশ ব্যাংক চিহ্নিত করেছে, তা এনআরবির পর্ষদের সদস্যদের জানানো হয়নি।

সোমবার (১১ নভেম্বর) এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের নতুন পর্ষদ বাংলাদেশ ব্যাংক কার্যালয়ে গিয়ে তিন ডেপুটি গভর্নরের সঙ্গে বৈঠক করে। পরে তমাল এস এম পারভেজ সাংবাদিকদের কাছে এই দাবি করেন।

তমাল এস এম পারভেজ বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক যেসব সমস্যা ধরেছে, তা আমাদের নজরেই আসেনি। পর্ষদ সদস্য হয়েও আমরা তা জানতে পারিনি। এখন জেনে বিষয়গুলোর সমাধান করা হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এনআরবি ব্যাংক গঠনে বাংলাদেশ ব্যাংক যে নীতিমালা করেছিল, তাতেই গলদ ছিল। এ কারণেই এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন ওঠেছে। আমরা এখন এসব সমস্যার সুরাহা করার চেষ্টা করব।’

এর আগে রবিবার (১০ ডিসেম্বর) ব্যাংকটির চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পদে পরিবর্তন আনা হয়। এছাড়া, ব্যাংকটির অন্য সব কমিটির চেয়ারম্যানরাও পদত্যাগ করেন। ওইদিন পর্ষদ সভায় ব্যাংকটির চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার ফরাছত আলী পদত্যাগ করলে ব্যাংকটির নতুন দায়িত্ব পান তমাল এস এম পারভেজ।

ভাইস চেয়ারম্যান তৌফিক রহমান চৌধুরী, নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মনজুরুল ইসলাম, নিরীক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান নুরুন নবী ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুনসেফ আলীকেও সরিয়ে দেওয়া হয়। এমডি দেওয়ান মুজিবর রহমানকে তিন মাসের ছুটিতে পাঠানো হয়। এ পদে চলতি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ডিএমডি কাজী মো. তালহাকে।

এর আগে বুধবার (৬ ডিসেম্বর) ব্যাংকটির এমডি দেওয়ান মুজিবুর রহমানকে অপসারণ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। অবশ্য পরদিনই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জারি করা আদেশ স্থগিত করেন হাইকোর্ট।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্তে ৭০১ কোটি টাকার ঋণে গুরুতর অনিয়মের তথ্য বেরিয়ে আসার পর গত বছর এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকে পর্যবেক্ষক নিয়োগ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। চলতি বছরের ২০ মার্চ ব্যাংকটির চেয়ারম্যান ও এমডির কাছে পাঠানো পৃথক নোটিশে বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, আমানতকারীদের স্বার্থে ও জনস্বার্থে ব্যাংকটি চালাতে ব্যর্থ হয়েছে ফরাছত আলীর নেতৃত্বাধীন পরিচালনা পর্ষদ। আর এমডি ব্যর্থ হয়েছেন ব্যাংকটিতে যথাযথ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে। এমনকি তারা প্রতারণা ও জালিয়াতি করেছেন, যা ফৌজদারি আইন অনুযায়ী দণ্ডনীয়।

ব্যাংকের পর্ষদ সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, মোহাম্মদ শহিদ ইসলামকে ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত করা হয়। এছাড়া, পরিচালনা পর্ষদ আবু বকর চৌধুরীকে নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান, রফিকুল ইসলাম মিয়া আরজুকে অডিট কমিটির চেয়ারম্যান ও মোহাম্মদ আদনান ইমামকে ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান নির্বাচিত করে কমিটিগুলো পুনর্বিন্যাস করা হয়।