এক বছরে পিজিসিবি’র সঞ্চালন ক্ষমতা বেড়েছে সাড়ে তিন হাজার মেগাওয়াট

 

পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি২০১৭ সালে বিদ্যুৎ সঞ্চালনের জন্য সারাদেশে পাঁচটি গ্রিড সাবস্টেশন চালু এবং ২০টি গ্রিড উপকেন্দ্র সম্প্রসারণের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সঞ্চালনের সক্ষমতা বাড়িয়েছে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ লি. (পিজিসিবি)। এ সময়ে নতুন ৩৮৬ সার্কিট কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন চালু করা হয়েছে। নতুন ও সম্প্রসারিত গ্রিড সাবস্টেশনগুলোর মাধ্যমে সঞ্চালন ক্ষমতা বেড়েছে ৩ হাজার ৯৮৩ এমভিএ। এতে গত এক বছরে প্রায় ৩ হাজার ৫৮৫ মেগাওয়াট বাড়তি বিদ্যুৎ সঞ্চালনের সক্ষমতা অর্জন করেছে পিজিসিবি।

পিজিসিবি সূত্র জানায়, ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়েছে এক হাজার ২৪৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। এর মধ্যে এক হাজার ১৮৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ এসেছে সরকারি-বেসরকারি খাতে নতুন চালু হওয়া সাতটি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র থেকে। বাকি ৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করা হয়েছে ত্রিপুরা থেকে। সেই হিসাবে, ২০১৭ সালে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানোর বিপরীতে পিজিসিবি সঞ্চালন ক্ষমতা প্রায় তিনগুণ বাড়াতে সক্ষম হয়েছে।

২০১৭ সালে বিদ্যুতের জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হওয়া নতুন বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো হলো— বসিলা, কেরানীগঞ্জ ১০৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র, ভেড়ামারা ৩৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র, আশুগঞ্জ ৪৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র, কুশিয়ারা ১৬৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র, সরিষাবাড়ি ৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র (সোলার), চাঁপাইনবাবগঞ্জ ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং শিকলবাহা ২২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র। এছাড়াও ২০১৭ সালে ভারতের ত্রিপুরা থেকে ৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি শুরু হয়েছে। এসব কেন্দ্রের সম্মিলিত উৎপাদন ক্ষমতা ১ হাজার ২৪৭ মেগাওয়াট।

জানা গেছে, ২০১৭ সালে গাজীপুরের কালিয়াকৈর ও হবিগঞ্জের বিবিয়ানায় নতুন নির্মিত দু’টি ৪০০/২৩০ কেভি গ্রিড সাবস্টেশন চালু করা হয়েছে। এছাড়া, ভেড়ামারায় ২৩০/১৩২ কেভি সাবস্টেশন, পাবনার রূপপুরে ১৩২/১১ কেভি সাবস্টেশন এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমনুরায় ১৩২/৩৩ কেভি সাবস্টেশন চালু করা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আরও ২০টি ১৩২/৩৩ কেভি সাবস্টেশনের ক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে। এই এক বছরে আমিনবাজার-কালিয়াকৈর-টঙ্গী, কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা সাবস্টেশন থেকে এইচভিডিসি স্টেশন, খুলনা থেকে সাতক্ষীরা দ্বিতীয় সার্কিট, টাঙ্গাইল হতে আরপিসিএল (ময়মনসিংহ) এবং আমনুরা থেকে চাঁপাই এলাকায় নতুন ৩৮৬ সার্কিট কিলোমিটার বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন নির্মাণ করে চালু করা হয়েছে।

বছর শেষে পিজিসিবির সারাদেশে বিভিন্ন ভোল্টেজ লেভেলে মোট ১০ হাজার ৬৩৫ সার্কিট কিলোমিটার হাইভোল্টেজ সঞ্চালন লাইন, ১১৩টি গ্রিড সাবস্টেশন এবং একটি এইচভিডিসি স্টেশন ছিল। নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের ফলে বিদ্যুতের সঞ্চালন লাইনগুলোর সক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে। বিদ্যুৎ সঞ্চালন লস আগের বছরের ২ দশমিক ৮৬ শতাংশ থেকে এ বছরে ২ দশমিক ৬৭ শতাংশে নামিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে।

এ বিষয়ে পিজিসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুম-আলবেরুনী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বিদ্যুৎ সঞ্চালন উন্নয়নে পিজিসিবি ধারাবাহিকভাবে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। আগামী দিনগুলোতে আরও প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। এতে জনগণের কাছে আরও ভালোভাবে বিদ্যুৎ সুবিধা পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে।’

আরও পড়ুন:
ভোলায় নতুন দুই স্তরে গ্যাস: উত্তোলন নিয়ে অনিশ্চয়তা