মেধাসম্পদের অনলাইন নিবন্ধন সেবা চালু

লোগোপেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্ক নিবন্ধনের জন্য অনলাইন সেবা চালু করেছে শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদফতর (ডিপিডিটি)। মেধাসম্পদ সংক্রান্ত অন্যান্য সেবাও এখন থেকে অনলাইনে পাওয়া যাবে।

বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) রাজধানীর বিয়াম ফাউন্ডেশন মিলনায়তনে এ অনলাইন সেবার উদ্বোধন করেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু। ডিপিডিটির রেজিস্ট্রার মো. সানোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন শিল্পসচিব মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ্।

এতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই প্রকল্পের প্রতিনিধি মো. লুৎফর রহমান ও ডিপিডিটির ডেপুটি রেজিস্ট্রার মহীউদ্দিন আল ফারুক বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে শিল্প মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, চেম্বার ও ট্রেডবডির প্রতিনিধি, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, গবেষণা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানী ও গবেষকরা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে শিল্পমন্ত্রী বলেন, ‘শিল্পসমৃদ্ধ ও উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতি ও শিল্পায়ন অপরিহার্য। মেধাসম্পদের লালন, সুরক্ষা ও উন্নয়নের মাধ্যমে এ লক্ষ্য অর্জন সম্ভব। একটি সৃজনশীল উদ্ভাবন ক্ষেত্র বিশেষে হাজার জনবলের চেয়েও বেশি কার্যকর। এজন্য দেশেই প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন সক্ষমতা তৈরি করতে হবে। এ লক্ষ্যে বর্তমান সরকার বিশ্ব মেধাসম্পদ সংস্থার সহায়তায় ডিপিডিটির কার্যক্রম অটোমেশনের আওতায় এনেছে।’ অনলাইনে মেধাসম্পদের নিবন্ধন সেবা চালুর ফলে দেশীয় উদ্ভাবকদের মালিকানা সুরক্ষার পাশাপাশি ডিপিডিটির আয় বাড়বে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

আমির হোসেন আমু আরও বলেন, ‘জাতীয় শিল্পনীতি-২০১৬তে নতুন উদ্ভাবন ও বুদ্ধিভিত্তিক সম্পদ সুরক্ষায় বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এ নীতির আলোকে মেধাসম্পদের সুরক্ষায় সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা জোরদার করা হয়েছে। মেধাসম্পদ সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক আইনের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ইতোমধ্যে ট্রেডমার্ক আইন ও কপিরাইট আইন যুগোপযোগী করা হয়েছে। বিশেষ ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন পণ্যের মালিকানা সুরক্ষায় জিআই ‘ল’ পাস করা হয়েছে। ইতোমধ্যে জাতীয় মাছ ইলিশ ও ঐতিহ্যবাহী জামদানিকে জিআই পণ্য হিসেবে নিবন্ধন দেওয়া হয়েছে। অন্য ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যকেও দ্রুত নিবন্ধনের আওতায় আনা হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ডিপিডিটি ১৯৭২ সাল থেকে ২০১৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ১০ হাজার ২৫৮টি পেটেন্ট, ২৫ হাজার ১৫১টি ডিজাইন এবং দুই লাখ ৩৯ হাজার ২৬৪টি ট্রেডমার্কের আবেদন পেয়েছে। এর মধ্যে ৫ হাজার ৬৪২টি পেটেন্ট, ১৫ হাজার ৩৯৭টি ডিজাইন এবং ৫৩ হাজার ৫২৫টি ট্রেডমার্ক নিবন্ধন দেওয়া হয়েছে। ২০০৮-০৯ অর্থবছরে ডিপিডিটির রাজস্ব আয় ছিল চার কোটি ৫৮ লাখ টাকা। বর্তমান সরকার গৃহীত অটোমেশন কর্মসূচির ফলে প্রতিষ্ঠানটির আয় বেড়ে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ১৬ কোটি ৫৫ লাখ টাকায় দাঁড়িয়েছে। 

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় বাস্তবায়নাধীন এটুআই প্রকল্পের ‘আইপি টিউব’ অঙ্গের (কম্পোনেন্ট) আওতায় এ ‘অনলাইন নিবন্ধন’ সেবা চালু করা হলো। এটি চালুর ফলে প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আবেদনকারীরা কোনও হয়রানি বা ঝামেলা ছাড়াই অনলাইনে পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্ক নিবন্ধনের জন্য আবেদন করতে পারবেন। এতে দেশীয় উদ্ভাবক ও শিল্প উদ্যোক্তারা উপকৃত হবেন বলে আশা করা হচ্ছে।