তৈরি পোশাক রফতানিতে রাশিয়ার বাজারে শুল্ক ও কোটা ফ্রি সুবিধা চেয়েছে বাংলাদেশ

বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ (ফাইল ছবি)বাংলাদেশের জন্য সম্ভাবনাময় বড় রফতানি বাজার রাশিয়া। শুল্ক ও আর্থিক লেনদেনের কিছু জটিলতার কারণে রাশিয়ার বাজারে প্রত্যাশামত বাংলাদেশি পণ্য রফতানি করা যাচ্ছে না। বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার সিদ্ধান্ত মোতাবেক রাশিয়া বাংলাদেশকে প্রায় ৭১টি পণ্য রফতানিতে শুল্ক ও কোটা ফ্রি বাণিজ্য সুবিধা প্রদান করে। কিন্ত দেশের প্রধান রফতানি পণ্য তৈরি পোশাক রফতানির ক্ষেত্রে এ বাণিজ্য সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে না। তাই তৈরি পোশাক রফতানিতে রাশিয়ার বাজারে শুল্ক ও কোটা ফ্রি সুবিধা চেয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।
রবিবার (২১ জানুয়ারি) ঢাকায় বাংলাদেশ সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশে সফররত রাশিয়ার কৃষি বিষয়ক ডেপুটি মিনিস্টার লেভিন সারজে এলভোভিস’র নেতৃত্বে ৭ সদস্যের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে মতবিনিময়কালে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ এই সুবিধা চান।
পরে বাণিজ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য জটিলতা দূর করতে বাংলাদেশ কিছুদিন আগে ইউরেশিয়ান ইকোনমিক কমিশনের সদস্য হতে সমঝোতা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে। কিছুদিনের মধ্যেই বাংলাদেশ এ কমিশনের সদস্য পদ লাভ করবে। তখন রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য করতে কোনও জটিলতা থাকবে না। বাংলাদেশকে তৈরি পোশাক রফতানিতে ডিউটি ও কোটা ফ্রি বাণিজ্য সুবিধা প্রদান করলে রাশিয়ায় বাংলাদেশের রফতানি অনেক বৃদ্ধি পাবে।’

রাশিয়া সহানুভূতির সঙ্গে বিষয়টি দেখার আশ্বাস দিয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আগামী ২০২৫ সালের ‘ওয়ার্ল্ড এক্সপো’-এর আয়োজক হতে চায় রাশিয়া। এ বিষয়ে আগামী নভেম্বরে সিদ্ধান্ত হবে। বাংলাদেশ এ ফোরামের সদস্য। এ বিষয়ে রাশিয়া বাংলাদেশের সমর্থন চায়। সদস্য দেশগুলো ভোট দিয়ে ‘ওয়ার্ল্ড এক্সপো’-এর স্থান নির্ধারণ করে। এবারে মেলার আয়োজক হতে আগ্রহী রাশিয়া, ফ্রান্স, জাপান এবং আজারবাইজান।’

তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘রাশিয়া বাংলাদেশে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে প্রায় ১২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে। এটি দেশে সবচেয়ে বড় বিদেশি বিনিয়োগ। এখানে ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হবে। আগামী ২০২৪ সালে এটি চালু হবে।’

রাশিয়ায় বাংলাদেশের উৎপাদিত আলুর প্রচুর চাহিদা রয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী আরও বলেন, ‘রাশিয়ায় আলু রফতানির উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। গত ২০১৬-২০১৭ অর্থ বছরে বাংলাদেশ ৪৬৪.৬২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য রফতানি করেছে, একই সময়ে আমদানি করেছে ৪৩৭ .১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য। রফতানি বাণিজ্যে জটিলতা দূর হলে বাংলাদেশের বড় রফতানি বাজার হবে রাশিয়া।’

এসময় অন্যদের মধ্যে বাণিজ্য সচিব শুভাশীষ বসু, অতিরিক্ত সচিব মুন্সী সফিউল হক, ডব্লিউটিও সেলের ডিজি মুনীর চৌধুরী এবং অতিরিক্ত সচিব তপন কান্তি ঘোষ উপস্থিত ছিলেন।