কীভাবে করের আওতায় আসবে ফেসবুক-ইউটিউব-গুগল

 

ফেসবুক, ইউটিউব ও গুগল (সংগৃহীত)সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক, ভিডিও দেখার জনপ্রিয় সাইট ইউটিউব এবং সর্ববৃহৎ সার্চ ইঞ্জিন গুগলকে করের আওতায় আনা হচ্ছে। এ জন্য তথ্যপ্রযুক্তি সংক্রান্ত একটি উচ্চ ক্ষমতার বিশেষজ্ঞ টিম গঠন করতে যাচ্ছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এই টিমের সদস্যরা ফেসবুক-ইউটিউব-গুগলকে করের আওতায় আনতে কাজ করবেন।

এ প্রসঙ্গে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘কোন পদ্ধতিতে বা কীভাবে ফেসবুক-ইউটিউব-গুগলকে করের আওতায় আনা হবে, তা এখনও আমরা বের করিনি। তবে আমাদের কর্মকর্তারা বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করছেন।’

তিনি বলেন, যেহেতু প্রতিষ্ঠানগুলো বিদেশি, সেহেতু বাংলাদেশে এদের নিবন্ধন নিতে হবে। কীভাবে নিবন্ধন হবে, সেটা দেখতে হবে। এ জন্য তথ্যপ্রযুক্তি সংক্রান্ত একটি বিশেষজ্ঞ দল কাজ করবে।’ এরই মধ্যে সংশ্লিষ্ট লোকজনকে বলা হয়েছে জানিয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘ফেসবুক, ইউটিউব, গুগলকে অনেক সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এখন তাদের করের আওতায় আনা হবে। আসন্ন বাজেটে এর প্রতিফলন থাকবে।’

তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফেসবুক-ইউটিউব-গুগলকে করের আওতায় আনা কঠিন হলেও অসম্ভব নয়। এ ব্যাপারে বিদেশি এসব প্রতিষ্ঠানকে প্রথমে নিবন্ধনের আওতায় আনতে হবে। নিবন্ধনের আওতায় আনতে পারলে করের আওতায় আনা সম্ভব হবে।

আইটি বিশেষজ্ঞ আনোয়ারুল হক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ফেসবুক নিয়ন্ত্রণ করার সুযোগ যেহেতু আছে, সেহেতু করের আওতায় আনার সুযোগ আছে। এক্ষেত্রে গেটওয়ে নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান বিটিআরসি’র সহযোগিতা নিতে হবে। এক্ষেত্রে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়কে ভূমিকা রাখতে হবে।’

গত বুধবার (৪ এপ্রিল) জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সম্মেলন কক্ষে সংবাদপত্র শিল্প মালিকদের সংগঠন নিউজপেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব) এবং অ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্স (অ্যাটকো) নেতাদের নিয়ে অনুষ্ঠিত প্রাক-বাজেট আলোচনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক, ভিডিও দেখার সাইট ইউটিউব এবং সর্ববৃহৎ অনুসন্ধান ইঞ্জিন গুগলকে করের আওতায় আনার ঘোষণা দেওয়া হয়। অবশ্য তিনি নোয়াব নেতাদের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে এ কথা বলেন।

সভায় নোয়াবের সভাপতি ও দৈনিক প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান বলেন, ‘বিশ্বে সংবাদপত্র পুরনো শিল্প। টেলিভিশন, অনলাইন, ফেসবুক, ইউটিউব, গুগলের কারণে পাঠক হারাচ্ছে সংবাদপত্র। ফলে এ শিল্পের বিজ্ঞাপন থেকে আয় কমছে।’ তিনি সংবাদপত্রের আয় কমে যাওয়ার জন্য উপদ্রব হিসেবে ফেসবুক-ইউটিউবে বিজ্ঞাপন প্রচারকে দায়ী করেন। মতিউর রহমান বলেন, ‘ফেসবুক-ইউটিউবে প্রচারিত বিজ্ঞাপনে সরকারের কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই। এ নিয়ে আমরা অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দিয়েছি। বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, ফেসবুক-ইউটিউবে প্রচারিত বিজ্ঞাপনের লাভের অংশ কীভাবে সরকার পেতে পারে। ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশ ফেসবুক, ইউটিউব থেকে সুযোগ আদায় করেছে। ফেসবুক, ইউটিউব, গুগল থেকে রাজস্ব আয়ে কমিটি করলে তাতে সহযোগিতা লাগলে আমরা করবো।’

অ্যাটকোর চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান বলেন, ‘ফেসবুক-ইউটিউবের কারণে দেশের গণমাধ্যম সংকটে পড়েছে। এগুলোকে আইনের মধ্যে নিয়ে আসলে সবাই উপকৃত হবে। সংবাদপত্র শিল্প বেঁচে থাকবে।’

আরও পড়ুন:

গুগল-ফেসবুক-ইউটিউবকে এখনই করের আওতায় আনা সম্ভব নয়