কোম্পানি আইন সংস্কার চায় ঢাকা চেম্বার



ঢাকা চেম্বারের গোলটেবিল আলোচনাব্যবসায়ীদের প্রয়োজন ও উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিয়ে কোম্পানি আইনের সংস্কারের দাবি জানিয়েছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)। বৃহস্পতিবার(২৪ মে) ঢাকা চেম্বার অডিটোরিয়ামে আয়োজিত ‘বেসরকারি খাতের উন্নয়নে কোম্পানি আইনের সংস্কার’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় ঢাকা চেম্বারের সভাপতি আবুল কাসেম খান এই প্রস্তাব করেন। গোলটেবিল আলোচনায় প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান। গোল টেবিল আলোচনায় বাণিজ্য সচিব শুভাশীষ বসু বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা চেম্বারের সভাপতি আবুল কাসেম খান বলেন, ‘অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ধারাকে বেগবান করা ও নতুন নতুন বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য প্রয়োজনীয় নীতিমালার সংস্কার জরুরি। ব্যবসা পরিচালনায় ব্যয় হ্রাস, মানবসম্পদ ও প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা বৃদ্ধি এবং অবকাঠামো উন্নয়নে এর কোনও বিকল্প নেই।’ তিনি বলেন, ‘২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ একটি মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হতে হলে ব্যবসা পরিচালনায় সহজাত পরিবেশ তৈরির বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’ ঢাকা চেম্বারের সভাপতি নতুন ব্যবসায়িক কার্যক্রম শুরুর জন্য নিবন্ধন পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রক্রিয়াগত জটিলতা কমানো এবং বিভিন্ন ধরনের ফি/চার্জ হ্রাসের আহবান জানান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে এম এ মান্নান বলেন, ‘কোম্পানি আইন প্রণয়ন ও চূড়ান্তকরণের ক্ষেত্রে সরকার সংশ্লিষ্ট সব স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছে।’ নতুন এ আইনে ব্যবসায়ীদের প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটবে বলেও মনে করেন তিনি।
বর্তমান সরকার জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনসহ অর্থনীতির সূচকে উল্লেখজনক অগ্রগতি অর্জন করেছে উল্লেখ করে এমএ মান্নান বলেন, ‘ডুইং বিজনেস ক্যাটাগরি সহ বেশ কিছু সূচকে পিছিয়ে পড়ছে, যা কিনা অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয় এবং এধরনের সূচকগুলোতে অগ্রগতি অর্জনে তিনি সকল পক্ষের একযোগে কাজ করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।’
বাণিজ্য সচিব শুভাশীষ বসু বলেন, ‘কোম্পানি আইনটি এ উপমহাদেশে প্রথম প্রণয়ন করা হয়েছিল ১৯৩০ সালে, যেটির প্রথম সংস্কার করা হয় ১৯৯৪ সালে। ব্যবসায়ী সমাজের প্রয়োজন ও অর্থনীতির সামগ্রিক কল্যাণের লক্ষ্যে বর্তমানে এটির সংস্কার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘এ লক্ষ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বাণিজ্য সংগঠনসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মতিবিনিময় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। কোম্পানি আইন সংস্কারের ক্ষেত্রে শেয়ার ট্রান্সফার, করনীতিমালা ও নিবন্ধন ফি কমানোর বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দেওয়া হবে।’
নির্ধারিত আলোচনায় বিশ্বব্যাংক গ্রুপের সিনিয়র ইকোনোমিস্ট ড. এম মাশরুর রিয়াজ, আইসিএবির সাবেক সভাপতি আদিব এইচ খান, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশ-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নাসির ইজাজ বিজয় ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট-এর অ্যাডভোকেট ব্যারিস্টার রশনা ইমাম সক্রিয় অংশ নেন।
ডিসিসিআই’র সমন্বয়কারী পরিচালক নূহের লতিফ খান এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, ‘কোম্পানি আইনের সংস্কারের বিষয়টি এখন সময়ের দাবি। তিনি ব্যবসায়িক বিরোধ নিষ্পত্তিতে আইন প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রিতা লাঘবের জন্য হাইকোর্টে দুই বা ততধিক অধিক বেঞ্চ গঠনের প্রস্তাব করেন।’ তিনি আরজেএসসিকে আরও শক্তিশালীকরণ, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান নিবন্ধনের প্রক্রিয়ার ধাপ ও ফি কমানোর প্রস্তাব করেন।