ইসলামিক ব্যাংকিং আমানত ও ঋণে প্রবৃদ্ধি বেড়েছে: বিআইবিএম

বিআইবিএম-এর ‘ইসলামিক ব্যাংকিং অপারেশনস অব ব্যাংকস’ শীর্ষক বার্ষিক পর্যালোচনা কর্মশালা প্রচলিত ব্যাংকিংয়ের চেয়ে ইসলামিক ব্যাংকিং আমানত ও ঋণে উচ্চ প্রবৃদ্ধি। প্রচলিত ব্যাংকে যেখানে ২০১৭ সালে প্রচলিত ব্যাংকে ঋণের গড় প্রবৃদ্ধি ছিল সাড়ে ১৮ শতাংশ, সেখানে ইসলামিক ব্যাংকিং ঋণের প্রবৃদ্ধি ২২ দশমিক ৩১ শতাংশ। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) এক গবেষণা প্রতিবেদনে এই তথ্য তুলে ধরা  হয়েছে।

সোমবার (৪ জুন) রাজধানীর বিআইবিএম অডিটোরিয়ামে ‘ইসলামিক ব্যাংকিং অপারেশনস অব ব্যাংকস’ শীর্ষক  বার্ষিক পর্যালোচনা কর্মশালায় গবেষণা প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করা হয়।

কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান। এতে সভাপতিত্ব করেন বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড.তৌফিক আহমদ চৌধুরী।

প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রচলিত ব্যাংকে ২০১৭ সালে আমানতের প্রবৃদ্ধি ছিল ১০ দশমিক ৭৬ শতাংশ। সেখানে ইসলামিক ব্যাংকিংয়ে ছিল প্রায় ১৩ শতাংশ।

আবু হেনা মোহা, রাজী হাসান বলেন, ‘ইসলামিক ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে আরও সুদৃঢ় করতে বাংলাদেশ ব্যাংক কাজ করছে। এরই মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ইসলামিক ব্যাংকিংয়ের সঙ্গে সম্পর্কিত ব্যাংকগুলোকে আলাদা সেল করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সব ধরনের কম্প্লায়েন্স বজায় রেখে এবং শরিয়াহর মূলনীতি বজায় রেখে ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘সব ইসলামিক ব্যাংক বা শাখায় শরিয়াহ সুপারভাইজরি কমিটি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। একইসঙ্গে কেন্দ্রীয়ভাবে শরিয়াহ বোর্ড করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’

ইসলামিক ব্যাংকিংয়ের পরামর্শক এম. আজিজুল হক বলেন, ‘ইসলামিক ব্যাংকিংয়ের ধারণা ঠিক না করেই ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। মালয়েশিয়াসহ কয়েকটি দেশ ইসলামিক ব্যাংকিং অনেক দূর এগিয়েছে। বাংলাদেশেরও ইসলামিক ব্যাংকিংয়ে ভালো করার সুযোগ রয়েছে। এজন্য ব্যাংকারদের এ ধরনের ব্যাংকিংয়ের ওপর বিশেষ প্রশিক্ষণ জরুরি।’

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনের সময় বিআইবিএমের সহযোগী অধ্যাপক মো. আলমগীর বলেন, ‘ইসলামিক ব্যাংকিংয়ে পরিসর অনেক বেড়েছে। কিন্তু সে তুলনায় দক্ষ জনবল না থাকায় সঠিকভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে না। এ অবস্থায় বিশেষ সার্টিফিকেশন কোর্স চালু করতে হবে। যেখানে ব্যাংকারদের ইসলামিক ব্যাংকিংয়ের ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করতে হবে। এসব সার্টিফিকেটধারী অভিজ্ঞ ব্যাংকার পদোন্নতি ও অন্যান্য ক্ষেত্রে বিশেষ সুযোগ পাবে।’

এক্সিম ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ হায়দার আলী মিয়া বলেন, ‘ইসলামিক ব্যাংকিং ব্যবস্থায় তারল্য সংকট দূর করা যত সহজ, প্রচলিত ব্যাংকিং ব্যবস্থায় তা সম্ভব নয়।’ তিনি ইসলামিক ব্যাংকিংয়ের ক্ষেত্রে দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলার ওপর জোরারোপ করেন।