আড়াই বছরেও মুন্সীগঞ্জের দুই বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ শুরু হয়নি

কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রপিছিয়ে পড়েছে মুন্সীগঞ্জে কয়লাভিত্তিক দু’টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণ কাজ। ২০১৫ সালে সরকারি দুই কোম্পানি ইলেক্ট্রিসিটি জেনারেশন কোম্পানি (ইজিসিবি) ও রুরাল পাওয়ার কোম্পানি (আরপিসিএল) মুন্সীগঞ্জে দু’টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কাজ শুরু করে। কিন্তু অর্থায়ন ও ভূমি অধিগ্রহণের জটিলতায় আড়াই বছরেও কাজ শুরু করতে পারেনি কোম্পানি দু’টি।

নির্মানের সময় বাড়াতে বিদ্যুৎ বিভাগের কাছে চিঠি দিয়েছে ইজিসিবি। চিঠিতে বলা হয়েছে, এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভূমি অধিগ্রহণ ও পুনর্বাসন প্রকল্পের জন্য আরও একবছর সময় বাড়ানো প্রয়োজন। প্রকল্পটি  এই বছর জুনে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা সম্ভব না হওয়ায় ২০১৯ সালের জুনপর্যন্ত সময় বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়। পরে বিদ্যুৎ বিভাগের পক্ষ থেকে তাদের সময় বাড়ানো হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইজিসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলী কাউসার মোহম্মদ ফিরেজ বলেন, ‘আমরা এখনও জমি বুঝে পাইনি।’ তিনি বলেন, ‘কেন্দ্রটির জন্য এখনও অর্থায়নও নিশ্চিত হয়নি। তবে ভূমি মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের জন্য নথি পাঠিয়েছে জেলা প্রশাসন।’

এদিকে, জমি অধিগ্রহণের কাজ শুরু করতে পারলেও অর্থায়ন নিশ্চিত না হওয়ার কারণে আরপিজিসিএলও কাজ শুরু করতে পারেনি। আরপিসিএল জানায়, জেলা প্রশাসন থেকে জমি বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। সরাসরি ক্রয় প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বাংলাশে নেভিকে জমি ভরাটের কাজ দেওয়া হয়েছে। মোট ২৫২ একর জমির জন্য ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য অর্থও জেলা প্রশাসকের দফতরে জমা দিয়েছে আরপিসিএল। তবে কেন্দ্রটির অর্থায়ন নিশ্চিত হতে ২০২০ সাল পর্যন্ত সময় প্রয়োজন হবে। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, চীনের অর্থায়নে জি টু জি ভিত্তিতে অর্থায়ন করা হবে। চীনা প্রেসিডেন্ট শি জি পিং-এর সফরের সময় বিদ্যুৎ বিভাগের সঙ্গে যে এমওইউ সই হয়েছে, তাতে কেন্দ্রটির অর্থায়ন নিশ্চিত হতে আরও দুই বছর সময় প্রয়োজন হবে।

জানতে চাইলে আরপিসিএল-এর নির্বাহী পরিচালক সেলিম ভূঁইয়া বলেন, ‘কেন্দ্রটির মাটি ভরাটের কাজ শুরু হবে ২/১ দিনের মধ্যে।’ তিনি বলেন, ‘চীনের অর্থায়নে কেন্দ্রটি নির্মাণ করা হবে। চীন সরকার ঋণ অনুমোদন করলে কেন্দ্রটির দরপত্র আহ্বান করা হবে। এ জন্য আরও দেড় বছর সময় প্রয়োজন।’

বর্তমান সরকার প্রায় ১৫ হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতার ২০টি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা করেছে। এগুলোর মধ্যে সরকারি খাতে ছয়টি, বেসরকারি খাতে নয়টি, অন্য দেশের সরকারের সঙ্গে যৌথভাবে (জি টু জি) চারটি এবং বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ উদ্যোগে একটি কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। বাস্তবায়নের দিক থেকে এর মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে আছে চীনের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে করা পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ।