এলএনজি পাইপলাইনে যুক্ত হলেই বাড়বে গ্যাসের দাম


এলএনজি (ছবি: ইন্টারনেট থেকে)
জাতীয় গ্রিডে এলএনজি যুক্ত হলেই গ্যাসের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেবে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন। এলএনজি আসলেই ছয় হাজার কোটি টাকার ঘাটতি তৈরি হবে। আর সেই ঘাটতি পূরণ করতে হলে ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ গ্যাসের দাম বাড়াতে হবে। তবে এ খাতে সরকার ভর্তুকির পরিমাণ যদি আরও বাড়ায় তাহলে গ্যাসের দাম এর চেয়ে কম বাড়ালেও হবে। কমিশন সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।

গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব মূল্যায়ন করে কতটুকু এলএনজি এলে কত দাম বাড়ানোর প্রয়োজন হতে পারে তা নির্ধারণ করে রেখেছে কমিশন। এই দাম বাড়ানোর পর যে ঘাটতি থাকবে তা পূরণের জন্য ভর্তুকির প্রস্তাব দেবে কমিশন।

বিইআরসির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, এলএনজি আমদানির ফলে ঘাটতির পরিমাণ প্রাথমিকভাবে হিসেব করা হয়েছে ৬ হাজার কোটি টাকার মতো। এই ঘাটতি পূরণ করতে গেলে গ্যাসের দাম প্রায় ৬০ ভাগ বাড়ানোর প্রয়োজন। একবারে গ্যাসের দাম এত বাড়ানো ঠিক হবে না বলেই এ খাতে তিন হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দেওয়ার চিন্তা করা হচ্ছে। সে হিসেবে গ্যাসের দাম ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ বাড়তে পারে। তবে যদি আরও কম বাড়ানো হয় অর্থাৎ ২০ থেকে ১৫ শতাংশের নিচে তাহলে ভর্তুকির পরিমাণ আরও বাড়াতে হবে।

বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান রহমান মুর্শেদ বলেন, পাইপলাইনে এলএনজি যুক্ত হলেই গ্যাসের দামের বিষয়ে ঘোষণা দেবে কমিশন। তবে কী পরিমাণ গ্যাসের দাম বাড়ানো হবে তা বলতে চাননি তিনি। তিনি বলেন, গ্যাসের দাম বাড়ানো হলে উৎপাদন খরচও বাড়বে। এই দাম বাড়ানোর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে দেশের শিল্পায়নে। অনেক সময় জ্বালানির দাম বেশি হলে সেদেশে বিনিয়োগ করতে চায় না বিনিয়োগকারীরা।

গত ১১ জুন থেকে গ্যাসের দাম ও সঞ্চালন বাড়ানোর বিষয়ে গণশুনানি শুরু করে কমিশন। চলতি বছরের মার্চ মাসে গ্যাস বিতরণ কোম্পানিগুলো গড়ে ৭৫ শতাংশ দাম বাড়ানোর প্রস্তাব পাঠিয়েছিল। তবে আবাসিক ও বাণিজ্যিক গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দেয়নি তারা। কমিশন গঠিত কারিগরি কমিটি এবার ১৪৩ ভাগ গ্যাসের দাম বাড়ানোর সুপারিশ করেছে। তবে এই দাম বাড়ার ক্ষেত্রে গত এপ্রিল থেকে এলএনজি আমদানিকে বিবেচনা করেছে কমিশন। যদিও এখনও এলএনজি আসেনি। এলএনজি না আসায় গ্যাসের দাম চলতি অর্থবছরে কম বাড়াতে হবে।

এদিকে, কমিশনের সদস্য আব্দুল আজিজ খান বলেন, বিতরণ কোম্পানিগুলো যে গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে তাতে সবাই এলএনজির দামের সঙ্গে সমন্বয় করে দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে। সুতরাং পাইপলাইনে এলএনজি যুক্ত না হলে গ্যাসের দাম বাড়ানোর বিষয়ে কোনও আদেশ দিতে পারবে না কমিশন। তিনি জানান, এবার ভর্তুকি দিতে হবে। সরকারের সহায়তা ছাড়া শুরুতেই এলএনজি আমদানির ফলে পুরো ব্যয় মানুষের ওপর চাপানো কঠিন হবে।

এদিকে, সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, আগস্ট মাসের মধ্যেই পাইপালাইনে এলএনজি সরবরাহ শুরু হবে। পেট্রোবাংলা সূত্র জানায়, এলএনজি জাহাজ মাতারবাড়িতে নোঙ্গর করা থাকলেও পাইপলাইনের সমস্যার কারণে এই গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা যাচ্ছে না। সাগর উত্তাল থাকার কারণে পাইপলাইনের কাজ করা যাচ্ছে না বলেই এলএনজি সরবরাহে দেরি হচ্ছে।