‘শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে বিদেশি ক্রেতারা বাংলাদেশ ভ্রমণ বাতিল করছে’

বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমাননিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে অনেক বিদেশি ক্রেতারা বাংলাদেশে তাদের ভ্রমণ বাতিল করেছে বলে জানিয়েছে তৈরি পোশাক রফতানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ। সোমবার (৬ আগস্ট) বিজিএমই ভবনে আয়োজিত চলমান ছাত্র আন্দোলন ও বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান। তিনি বলেন, ‘এই আন্দোলনের ফলে রফতানিতে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। তবে সবচেয়ে বড় যে ক্ষতি হচ্ছে, তা হলো ক্রেতাদের কাছে দেশের নেতিবাচক ভাবমূর্তি।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বিজিএমই সভাপতি বলেন, ‘দুই একটি প্রতিষ্ঠান বলেছে, ক্রেতারা তাদের ভ্রমণ বাতিল করেছেন। তবে কোনও অর্ডার এখন পর্যন্ত বাতিল হয়নি। আমরা আশা করি, দ্রুত এই পরিস্থিতির উন্নতি ঘটবে।’ শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনের প্রভাবে ঠিক কত টাকা ক্ষতি হয়েছে বা কতজন বায়ার তাদের বাংলাদেশ ভ্রমণ বাতিল করেছে এ সংক্রান্ত কোনও সঠিক পরিসংখ্যান দিতে পারেননি বিজিএমইএ সভাপতি।
সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘এই আন্দোলনের মাশুল দিতে হবে পোশাক শিল্পকে। আমরা যখন একর্ড ও এলায়েন্সের সব শর্ত পূরণ করে নিজেদের মতো চলার প্রস্তুতি নিচ্ছি, তখন এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি আমাদের পিছিয়ে দেয়। ক্রেতাদেরও আস্থাহানি ঘটে। শিল্প ও দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়, যা মোটেই কাম্য নয়।’
তিনি বলেন, ‘আমরা এমন কোনও কর্মকাণ্ড চাই না, যা মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বাধাগ্রস্ত ও স্থবির করে দেয়, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে ব্যাহত করে, ব্যাবসা বাণিজ্য পিছিয়ে দেয়।’
সিদ্দিকুর রহমান বলেন, নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলন দেশের পোশাক শিল্পকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে। তিনি উল্লেখ করেন, ‘চলমান আন্দোলনে সবচেয়ে বেশি সঙ্কটে পড়েছে রফতানিমুখী তৈরি পোশাক শিল্প। গত সপ্তাহে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক দিয়ে ঠিকমতো পোশাক শিল্পের আমদানি ও রফতানি পণ্য আনা নেওয়া করতে পারেনি। ফলে, বন্দরে কন্টেইনার ভর্তি রফতানি পণ্য পড়ে আছে। একইভাবে জাহাজীকরণের অপেক্ষায়ও পড়ে রয়েছে পণ্য। এ অবস্থায় যানবাহন পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে অনেক কারখানা স্টকলটের শিকার হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে সমস্যা কোথায়। এখন সেই সমস্যা সমাধানের দায়িত্ব আমাদের, সর্বোপরি রাষ্ট্রের। নিরাপদ সড়কের জন্য কঠোর আইন যেমন দরকার তেমনি এর প্রয়োগও নিশ্চিত করতে হবে। যাত্রী চালকসহ সবাইকে সচেতন হতে হবে। অপ্রাপ্তবয়স্ক চালক দিয়ে গাড়ি চালানো বন্ধ করতে হবে।’
মার্কিন রাষ্ট্রদূতের গাড়িতে হামলা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা এ ধরনের হামলার নিন্দা জানাই। আমেরিকান অ্যাম্বাসির গাড়িতে হামলা হয়েছে, এর জন্য আমরা দুঃখিত।’ তবে এটি ব্যবসায় কোনও আঘাত হানবে না বলে মনে করেন বিজিএমইএ সভাপতি ।