এলপিজির দাম ও দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণ করতে চায় সরকার

এলপিজিতরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম নিয়ন্ত্রণে এবার সিলিন্ডারের গায়ে দাম লিখে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এখন কোনও এলপিজির বোতলের গায়ে দাম লেখা থাকে না। এর ফলে খুচরা বাজারে ব্যবসায়ীরা ১২ কেজির একটি বোতল থেকে কোম্পানি নির্ধারিত দামের তুলনায় অনেক বেশি নিয়ে থাকেন। ভোক্তারা এলপিজির অতিরিক্ত দামের কারণে অসন্তোষ জানালেও কোম্পানিগুলো এর প্রতিকার করে না।

জ্বালানি বিভাগের সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানান, এলপিজির দাম নিয়ে অসন্তোসের কারণে আমরা গ্রাহকের বিষয়টি বিবেচনা করছি। এজন্য এলপিজি সরবরাহকারী কোম্পানিগুলোকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনাও দিয়েছি। তবে, এখনও এই প্রক্রিয়া শুরু করেনি তারা। অপারেটরা বলছে, আন্তর্জাতিক বাজারে এলপিজির দর ওঠা-নামার কারণে বাজারে অতিরিক্ত দর নেওয়া থেকে খুচরা ব্যবসায়ীদের বিরত রাখা যায় না।

সম্প্রতি জ্বালানি বিভাগে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এলপিজি অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ১২ কেজি এলপিজির দাম ৯৯৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু ভোক্তাপর্যায়ে কোথাও কোথাও এই দাম ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হচ্ছে। যা অ্যাসোসিয়েশনের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। সভায় তারা জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে এলপি গ্যাসের (কনট্রাক্ট প্রাইস) মাঝে মাঝেই ওঠানামা করে।এখন দাম কমলেও পরেবর্তী মাসে আবার বাড়তে পারে।এছাড়া এলপি গ্যাসের পরিবহণ ব্যয় এবং অন্যান্য ব্যয় বাড়ার কারণে এলপিজি সিলিণ্ডারের দাম কামানো কঠিন হয়ে পড়ে।

দুর্ঘটনার বিষয়ে বিস্ফোরক অধিদফতরের প্রধান পরিদর্শক সামসুল আলম বলেন, ‘এলপিজি সিলিন্ডার সরাসরি বিস্ফোরণের নজির পাওয়া যায়নি। বিস্ফোরণ মূলত গ্যাস লিকেজ এবং ভোক্তাদের অসাবধানতার জন্য ঘটছে।’ বিভিন্ন সময়ে দুর্ঘটনার স্থান পরিদর্শন করে সিলিন্ডার অক্ষত পাওয়া গেছে বলে তিনি জানান।

এ বিষয়ে  বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ‘ভোক্তা সাধারণের ক্রয় ক্ষমতা বিবেচনা করে এলপিজি সিলিন্ডারের মূল্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে নির্ধারণের জন্য একটি প্রাইজিং ফর্মুলা থাকা উচিত।’ দুর্ঘটনার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘প্রাকৃতিক গ্যাসের স্বল্পতার কারণে ভোক্তা সাধারণ যেন সহজে বিকল্প জ্বালানি হিসেবে গ্যাস পায়, সে লক্ষ্যে বেসরকারি খাতে এলপি গ্যাসের মার্কেট উন্মুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি কয়েকটি দুর্ঘটনা থেকে দেখা যাচ্ছে, এ সব দুর্ঘটনা ভোক্তা সাধারণের অসাবধানতার জন্য ঘটছে।’ ফলে ভোক্তা পর্যায়ে নিরাপদ এলপি গ্যাস ব্যবহারে সচেতনতা বাড়াতে এলপিজি অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশনের সহযোগিতায় বিস্ফোরক পরিদফতর একটি বাজেট তৈরি করতে পারে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।