বাংলাদেশে বড় বিনিয়োগে আগ্রহী সৌদি অ্যারামকো

সৗদি অ্যারামকো

বাংলাদেশে তেল পরিশোধনাগার নির্মাণের জন্য বড় ধরনের বিনিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছে সৌদি আরব। বিশ্বের এক নম্বর তেল উত্তোলনকারী দেশটি এর আগে ভারতের তেলের বাজারেও বিনিয়োগ করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশেও বিনিয়োগ করতে চায় সৌদি আরবের জাতীয় তেল কোম্পানি অ্যারামকো।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, অ্যারামকো বাংলাদেশে ২০ মিলিয়ন টন ক্ষমতার একটি পরিশোধনাগার নির্মাণের প্রস্তাব দিয়েছে। যদিও বর্ধিত চাহিদার বিষয়টি হিসাব করে বাংলাদেশের জন্য বার্ষিক ১০ মিলিয়ন টন চাহিদার পরিশোধনাগার প্রয়োজন বলে জানানো হয়েছে।

সোমবার (২১ জানুয়ারি) বিদ্যুৎ জ্বালানি খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে এ বিষয়ে বৈঠক করেছেন সৌদি অ্যারামকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বিপণন বিভাগের প্রধান ওয়ালিদ কে ঘেমলাস। প্রতিমন্ত্রীর কার্যালয়ে ওই বৈঠকে জ্বালানি বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ওই বৈঠকে অ্যারামকোর তরফে ঘেমলাস বলেন, ‘বাংলাদেশের চাহিদার দ্বিগুণ ক্ষমতার পরিশোধনাগার নির্মাণ করতে আগ্রহী তারা।’

এদিকে সরকারের পক্ষে অ্যারামকোকে জানানো হয়, বাংলাদেশে আরও ১০ মিলিয়ন টন বার্ষিক পরিশোধিত তেলের চাহিদা রয়েছে। আগামী কয়েক বছরের বার্ষিক চাহিদার প্রবৃদ্ধি ধরে এই হিসাব করা হয়েছে। এখন বাংলাদেশে গড়ে বছরে সাড়ে ৫ মিলিয়ন টন জ্বালানি তেলের চাহিদা রয়েছে। এরমধ্যে দেশে একমাত্র পরিশোধনাগার ইস্টার্ রিফাইনারি দেড় মিলিয়ন টন পরিশোধন করে। বাকিটা পরিশোধিত অবস্থায় আমদানি করে থাকে বাংলাদেশ।

আগামীতে দেশে তরল জ্বালানিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়বে। এতে করে একসঙ্গে আগামী কয়েক বছরে দেশের জ্বালানি তেলের চাহিদা বেড়ে যাবে। এছাড়া, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে হলেও জ্বালানির চাহিদা পূরণ করতে হবে।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বাংলাদেশে বিনিয়োগের সম্ভাবনা বৈঠকে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে সৌদি আরবের বিনিয়োগের বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে।’ তাদের সঠিকভাবে সব সহযোগিতা করার জন্য বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনকে নির্দেশ দেন মন্ত্রী। এ সময় জ্বালানি বিভাগের সচিব আবু হেনা রহমাতুল মুনিম উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় অবস্থিত সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন একমাত্র জ্বালানি তেল স্থাপনা প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হয় ১৯৬৩ সালে। এরপর ১৯৬৮ সাল থেকে পরিশোধন কেন্দ্রটি উৎপাদনে যায়। এটি ১৭ ধরনের পেট্রোলিয়াম সামগ্রী উৎপাদন করে। সবচেয়ে বেশি পরিশোধন হয় ডিজেল। এরপর অনেক দিন ধরেই বাংলাদেশ নতুন পরিশোধনাগার নির্মাণের চেষ্টা করছে। তবে এখনও কোনও নতুন পরিশোধনাগার নির্মাণের কাজ শুরু করতে পারেনি জ্বালানি বিভাগ।