বিনিয়োগবান্ধব রাজস্ব ব্যবস্থাপনা প্রণয়নে ঢাকা চেম্বারের ২০ প্রস্তাব

বিনিয়োগবান্ধব রাজস্ব ব্যবস্থাপনা প্রণয়ণে ঢাকা চেম্বার ২০ দফা প্রস্তাব দেয়।

 

বিনিয়োগবান্ধব রাজস্ব ব্যবস্থাপনা প্রণয়নের প্রস্তাব করেছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)।  মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) এনবিআর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত প্রাক-বাজেট আলোচনায় ঢাকা চেম্বারের সভাপতি ওসামা তাসীর এনবিআরের কাছে ২০টি প্রস্তাব করেন। এতে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূইয়া।

সভাপতি ওসামা তাসীর পুঁজিবাজারে ননলিস্টেড কোম্পানির করপোরেট কর হার ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ এবং লিস্টেড কোম্পানির করপোরেট কর হার ২৫ শতাংশ হতে কমিয়ে ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করেন। ঢাকা চেম্বারের সভাপতি ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের জন্য ব্যক্তিগত করমুক্ত আয়ের সীমা আড়াই লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে তিন লাখ টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব করেন।

তিনি নীট সম্পদের মূল্য ৫ কোটি টাকা পর্যন্ত হলে শূন্য হারে সারচার্জ আরোপের পাশাপাশি ১৫ কোটি টাকা পর্যন্ত ১০ শতাংশ হারে সারচার্জ নির্ধারণের আহ্বান জানান। এছাড়াও তিনি করপোরেট ডিভিডেন্ডের আয়ের ওপর বিদ্যমান ২০ শতাংশ করের পরিবর্তে ১০ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেন।

ডিসিসিআই’র সভাপতি কোম্পানির করযোগ্য আয়ের ৫ শতাংশ পর্যন্ত গবেষণা ও উন্নয়ন কার্যক্রমে বিনিয়োগ করলে ওই আয় করমুক্ত ঘোষণা দেওয়ার প্রস্তাব করেন।

ডিসিসিআই সভাপতি সেবাখাতকে করের আওতায় নিয়ে আসা এবং সকল আয়করদাতাদের অনলাইনে কর প্রদানের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা প্রবর্তনের প্রস্তাব করেন।

তিনি বিদ্যমান প্যাকেজ ভ্যাট বহাল রাখা এবং বাৎসরিক টার্নওভার ৫০ লাখ টাকার ঊর্ধ্বে থেকে ৮০ লাখ টাকা পর্যন্ত প্যাকেজ ভ্যাট প্রদানের লিমিট নির্ধারণের প্রস্তাব করেন। ডিসিসিআই সভাপতি মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন ২০১২ তে প্রস্তাবিত অভিন্ন ১৫ শতাংশ ভ্যাট এর বদলে একাধিক ভ্যাটের হার  ৫ শতাংশ, ৭.৫ শতাংশ ও ১০ শতাংশ রাখার প্রস্তাব করেন। তিনি মিউচুয়্যাল ফান্ডের ওপর স্ট্যাম্প ডিউটি বিলুপ্ত করা এবং তৈরি পোশাক খাতে বিদ্যমান উৎস কর ০.২৫ শতাংশ বহাল রাখার প্রস্তাব করেন।

মোশাররফ হোসেন ভূইয়া বলেন, গত বাজেটে করপোরেট করের হারে কিছুটা ছাড় দেওয়া হয়েছে এবং আগামীতে পর্যায়ক্রমে তা আরও কমানো হবে।

তিনি উল্লেখ করেন, প্রতিবছর রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য বেশি হারে কর আহরণ করতে গিয়ে বিদ্যমান করদাতাদের ওপর অধিক মাত্রায় নির্ভর করতে হয়, যার ফলে বিদ্যমান করদাতাদের ওপর চাপ বেড়ে যায়। এ অবস্থা উত্তরণের জন্য উপজেলা পর্যায়ে কর বিভাগ চালুর বিষয়টি সরকার সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করছে বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আগামী অর্থবছরের জন্য একটি ব্যবসা ও বিনিয়োগবান্ধব বাজেট প্রণয়নের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। যার ফলে দেশে শিল্পায়ন বাড়বে এবং আমাদের অর্থনীতি আরও গতিশীল হবে বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।   

আলোচনা সভায় ডিসিসিআই এর ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি ওয়াকার আহমেদ চৌধুরী, সহ-সভাপতি ইমরান আহমেদ, পরিচালক আলহাজ্ব দ্বীন মোহাম্মদ, এনামুল হক পাটোয়ারী ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।