এফবিসিসিআই সভাপতি মো. শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। সভায় প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, এনবিআর চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, এফবিসিসিআই’র সিনিয়র সহ-সভাপতি ও পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন। সভায় দেশের সব শীর্ষ চেম্বার এবং অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট সুপারিশমালা পেশ করা হয়।
অন্যদের ক্ষেত্রে করমুক্ত আয়ের সীমা
এফবিসিসিআইর পক্ষ থেকে বলা হয়, আগামী অর্থবছরের বাজেটে ব্যক্তি শ্রেণির করমুক্ত আয়ের সীমা সাড়ে ৩ লাখ টাকা নির্ধারণের পাশাপাশি মহিলা ও বয়স্ক (৬৫ বৎসর) করদাতার ক্ষেত্রে করমুক্ত আয়ের সীমা ৩ লাখ থেকে বাড়িয়ে ৪ লাখ টাকা, প্রতিবন্ধী করদাতার করমুক্ত আয়ের সীমা পাঁচ লাখ এবং গেজেটভুক্ত যোদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের করমুক্ত সীমা ৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। আয়কর সীমা বাড়ানোর বিষয়ে এফবিসিসিআই’র যুক্তি হচ্ছে- বর্তমানে জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে। এ কারণে করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়ানো প্রায়োজন।
করর্পোরেট কর হার আড়াই শতাংশ কমানোর প্রস্তাব
সভায় করর্পোরেট কর হার আড়াই শতাংশ কমানোর প্রস্তাব করেছে সংগঠনটি। এফবিসিসিআই সভাপতি লিখিত প্রস্তাবে বলেন, পুঁজিবাজারের স্বার্থে দেশি-বিদেশি প্রত্যেক বিনিয়োগ ত্বরান্বিত করতে আগামী বাজেটে (২০১৯-২০) সব কোম্পানির ক্ষেত্রে কর্পোরেট কর হার ২.৫ শতাংশ হ্রাস করা জরুরি। এছাড়া মূসক নিবন্ধনকারী শিল্প প্রতিষ্ঠানের কোম্পানির কর হার ট্রেডিং কোম্পানির চেয়ে ২ দশমিক ৫ শতাংশ কম রাখার প্রস্তাব করা হয়।
গত অর্থ বছরের (২০১৮-১৯) বাজেটে শুধুমাত্র ব্যাংক ও আর্থিকখাতে কর্পোরেট ট্যাক্স ২.৫ শতাংশ কমানো হয়েছিল। এটি এবার সব খাতে কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
এফবিসিসিআইয়ের প্রস্তাবে বলা হয়, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির ক্ষেত্রে কর্পোরেট কর ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে সাড়ে ২২ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়। আর পুঁজিবাজারে তালিকা নয় এমন কোম্পানির ক্ষেত্রে ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানির ক্ষেত্রে ৩০ শতাংশ ও নন ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানির ক্ষেত্রে সাড়ে ৩২ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
নতুন ভ্যাট আইনের ক্ষেত্রে ১০ প্রস্তাব
নতুন ভ্যাট আইনের ক্ষেত্রে ১০টি প্রস্তাব দিয়েছে ব্যবসায়ীদের এ শীর্ষ সংগঠন। সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী ভ্যাটের হার ৫, ৭.৫ ও ১০ শতাংশ নির্ধারণ, মূসক অব্যাহতির সীমা ৩৬ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০ লাখ টাকায় উন্নীত করা, টার্নওভার করের সীমা ৩ কোটি টাকা পর্যন্ত ৪ শতাংশ মূসকসহ অন্যান্য সিদ্ধান্ত নেন।
এফবিসিসিআই সরকারের এ প্রস্তাবকে মেনে নিয়েছে। তবে টার্নওভার কর ৪ শতাংশের পরিবর্তে ৩ শতাংশ করা উচিত বলে মনে করে এফবিসিসিআই। অন্যদিকে একাধিক হারে ভ্যাট নির্ধারণ করলেও রেয়াতের বিষয়ে অস্পষ্টতা রয়েছে দাবি করে ১৫ শতাংশের মতো ১০ শতাংশ হারেও রেয়াত দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে সংগঠনটি।