খেলাপি ঋণ বাড়ায় সাত ব্যাংকের এমডিকে তলব, কারণ খুঁজতে কমিটি

বাংলাদেশ ব্যাংক

খেলাপি ঋণ বেশি বেড়েছে এমন সাতটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে (এমডি) তলব করে কারণ জানতে চেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। মঙ্গলবার (১১ জুন) সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক জরুরি সভায় ব্যাংকগুলোর এমডিদের কাছে খেলাপি ঋণ বাড়ার কারণ জানতে চাওয়া হয়। সোনালী, অগ্রণী, জনতা, রূপালী, আল-আরাফাহ, ইসলামী ও ন্যাশনাল ব্যাংকের এমডিদের ওই সভায় ডাকা হয়। অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব আসাদুল ইসলাম সভায় যোগ দেন। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানিয়েছে, সভা শেষে খেলাপি ঋণ বাড়ার কারণ খুঁজতে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘আজকের (১১ জুন) জরুরি সভায় কয়েকটি ব্যাংকের এমডিকে ডাকা হয়েছিল। খেলাপি ঋণের বিষয়ে তাদের বক্তব্য নেওয়া হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘খেলাপি ঋণ বৃদ্ধির কারণ জানতে এবং এ ঋণ কমিয়ে আনতে করণীয় বিষয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।’ কমিটিতে কারা রয়েছেন তা জানাননি তিনি।

জানা গেছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ, অফ সাইট সুপারভিশন বিভাগ, ব্যাংক পরিদর্শন বিভাগ ও ফিন্যান্সিয়াল স্ট্যাবিলিটি বিভাগের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি খেলাপি ঋণ বৃদ্ধির কারণ অনুসন্ধান ও ঋণের পরিমাণ কমাতে কাজ করবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হিসাবে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১ লাখ ১০ হাজার ৮৭৩ কোটি টাকা। এর ফলে দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো অবলোপনের হিসাব বাদে খেলাপি ঋণ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়। আর অবলোপনসহ খেলাপি ঋণের পরিমাণ প্রায় দেড় লাখ কোটি টাকার বেশি।

গত ১০ জানুয়ারি দেশে সব ব্যাংক মালিকদের সঙ্গে বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী দাবি করেছিলেন, ওই দিনের পর থেকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ আর এক টাকাও বাড়বে না। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, গত তিন মাসে দেশের ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১৬ হাজার ৯৬২ কোটি টাকা। অর্থমন্ত্রীর দাবির পরও জানুয়ারি থেকে মার্চ এই তিন মাসে খেলাপি ঋণ বৃদ্ধির খবর প্রকাশিত হওয়ার পর চাপে পড়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। মঙ্গলবার সকালে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবিরকে ডেকে পাঠান অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

জানা গেছে, মঙ্গলবার সকালে ডেপুটি গভর্নর আহমেদ জামাল কয়েকটি ব্যাংকের এমডিকে ফোন দিয়ে খেলাপি ঋণ বৃদ্ধির কারণ জানতে চান। এরপর হঠাৎ করেই সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সভার আয়োজন করা হয়। আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব আসাদুল ইসলামের উপস্থিতিতে সভায় গভর্নর ফজলে কবিরসহ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সভায় যেকোনও উপায়ে চলতি জুনের মধ্যে খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমিয়ে আনতে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।