ঋণখেলাপিদের বিশেষ সুবিধা দিতে ৩ সপ্তাহ সময় বাড়ালো কেন্দ্রীয় ব্যাংক





বাংলাদেশ ব্যাংকঋণখেলাপিদের জন্য আরও সুখবর দিলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পুনঃতফসিলে ইচ্ছুক খেলাপিদের জন্য আরও ৩ সপ্তাহ সময় বাড়ানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, যেসব ঋণখেলাপি বিশেষ সুবিধা নিতে চান, আগামী সেপ্টেম্বরের ৭ তারিখের মধ্যে তাদের আবেদন করতে হবে। এ বিষয়ে দেশের সব বাণিজ্যিক ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীর কাছে নির্দেশনা পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, গত ১৬ মে জারি করা নির্দেশনা অনুযায়ী, পুনঃতফসিলের সুবিধা নিতে ৯০ দিনের মধ্যে আবেদন করার কথা বলা হয়েছিল। এই হিসাবে আবেদন করার শেষ সময় আগামী ১৬ আগস্ট। এরপর আরও ৩ সপ্তাহ বাড়ানো হলো।
জানা গেছে, যারা পুনঃতফসিল সুবিধা নিবেন, তারা ঋণ পরিশোধে টানা ১০ বছর সময় পাবেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, ঋণখেলাপিরা মাত্র ২ শতাংশ নগদ (ডাউনপেমেন্ট) দিয়ে ঋণ পুনঃতফসিল করতে পারবেন। পুনঃতফসিল হওয়া ঋণ পরিশোধে সময় পাবেন ১০ বছর। ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিরাও এ সুযোগ পাবেন। শুধু তা-ই নয়, প্রথম এক বছর তাদের কোনও কিস্তিও দিতে হবে না। চিহ্নিত এই ঋণখেলাপিরা সুদের ক্ষেত্রেও রেয়াত পাবেন; ৯ শতাংশেরও কম সুদ দেবেন তারা।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, সরকার ব্যাংক খাতে শৃঙ্খলা ফেরানোর বদলে ঋণখেলাপিদের নানা রকম সুবিধা দিতে ব্যস্ত। ব্যাংক খাতে ভালো গ্রাহকদের সুবিধা না দিয়ে মন্দ ঋণের গ্রাহকদের বেশি সুযোগ দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
প্রসঙ্গত, গত ১৬ মে বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে মাত্র ২ শতাংশ ডাউনপেমেন্ট এবং ৯ শতাংশ সরল সুদে ১০ বছরের জন্য ঋণ পরিশোধের সুযোগ দিয়ে খেলপি ঋণ পুনঃতফসিলের বিশেষ নীতিমালা জারি করা হয়।
এই সার্কুলার জারির পর বিভিন্ন মহলে সমালোচনার ঝড় উঠে। পরে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশন এর ওপর স্থিতাবস্থা জারি করেন। তবে গত ৮ জুলাই এই স্থিতাবস্থার ওপর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ২ মাসের স্থগিতাদেশ দেন। এর ফলে বাংলাদেশ ব্যাংকের জারি করা সার্কুলার কার্যকর করা সুযোগ তৈরি হয়েছে।
সার্কুলার অনুযায়ী, কোনও ঋণখেলাপি যদি মনে করেন, এককালীন ঋণ পরিশোধ করে খেলাপির তালিকা থেকে বেরিয়ে যাবেন, সে সুবিধাও পাবেন তারা। এতে বলা হয়েছে, এককালীন এক্সিট সুবিধা ও পুনঃতফসিল সুবিধা কার্যকরের ৯০ দিনের মধ্যে ব্যাংক ও গ্রাহকের মামলা স্থগিত করতে হবে। পরবর্তীতে গ্রাহক কোনও শর্ত ভঙ্গ করলে সুবিধা বাতিল করে মামলা পুনরায় চালু হবে।