শুনানির শুরুতে সঞ্চালন মাশুল বাড়ানোর পক্ষে প্রস্তাব উপস্থাপন করেন পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি)-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম কিবরিয়া। অন্যদিকে মূল্যায়ন কমিটির পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন উপ-পরিচালক (ট্যারিফ) মো. কামরুজ্জামান। এ সময় বিইআরসির চেয়ারম্যান মনোয়ার ইসলাম, সদস্য রহমান মুর্শেদ, সদস্য মিজানুর রহমান, সদস্য মাহমুদউল হক ভুঁইয়া ও সদস্য আব্দুল আজিজ খান উপস্থিত ছিলেন।
লাভজনক প্রতিষ্ঠানের সঞ্চালন মাশুল বাড়ানোর প্রস্তাবের বিরোধিতা করে ক্যাব। ক্যাবের পক্ষে শুনানিতে ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক শামসুল আলম বলেন, ‘সম্প্রতি বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মতো বেসরকারি খাতে সঞ্চালন ব্যবস্থা ছেড়ে দিতে চাইছে সরকার। এক্ষেত্রে বেসরকারি কেন্দ্রের মতোই তাদের জন্যও ক্যাপাসিটি পেমেন্ট রাখা হচ্ছে। এটি ব্যবসায়ীদের জন্য একটি ভালো ব্যবসা হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
শামসুল আলম বলেন, ‘পিজিসিবি কি সারাদেশে সঞ্চালনের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ? না হলে কেন এই উদ্যোগ?’ তিনি আরও বলেন, ‘একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠানে কেন সঞ্চালন চার্জ বাড়াতে চাইবে? তাদের কোনও লোকসান নেই। তাহলে তাদের উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য তারা ঋণ নিচ্ছে। সেই ঋণ তারা সুদসহ পরিশোধ করবে। নিজেরা আরও লাভবান হবে। এই সুদ পরিশোধের দায়িত্ব কি জনগণের? তাহলে সঞ্চালন চার্জ বাড়িয়ে জনগণের ঘাড়ে দেওয়া খুবই অযৌক্তিক এটি বিষয় হবে।’
এদিকে, গণশুনানিতে পিজিবির প্রস্তাব অনুমোদন না পেলে সংস্থাটি সম্ভাব্য ক্ষতির শিকার হতে পারে বলে জানিয়েছে, তাতে বলা হয়েছে, অপারেশন ও রক্ষণাবেক্ষণ খাতে বাজেট কাটার প্রয়োজন হবে। ফলে নেটওয়ার্ক পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজের গুণগত মানে প্রভাব পড়বে। সরকার ও দাতা সংস্থাগুলোর ঋণ ও সুদের বিশাল অঙ্কের টাকা নিয়মিতভাবে পরিশোধ করা সম্ভব হবে না। ফলে অদূর ভবিষ্যতে পিজিসিবির ঋণ পরিশোধে অক্ষম একটি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সর্বোপরি সরকারের ‘ভিশন-২০২১’ অনুযায়ী ‘সবার জন্য বিদ্যুৎ’-এর লক্ষ্যমাত্রা অর্জন বাধাগ্রস্ত হবে।
এদিকে, মূল্যায়ন কমিটি জানায়, ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে পিজিসিবির নিট রাজস্ব চাহিদা প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টায় শূন্য দশমিক ২৯৮০ টাকা। বিদ্যমান গড় সঞ্চালন মূল্যহার প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টায় শূন্য দশমিক ২৭৮৭ টাকা। রাজস্ব চাহিদা মূল্যয়ন করে কারিগরি কমিটি মনে করছে, ২০২০ সালে পিজিসিবির সঞ্চালন চার্জ প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টায় শূন্য দশমিক ০১৯৩ টাকা বা ৬ দশমিক ৯২ ভাগ বাড়ানো যেতে পারে।