‘বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় সচেতন না হলে পর্যটনকেন্দ্রগুলো প্লাস্টিক আবর্জনায় ভরে যাবে’

বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ক কর্মশালা

দেশের পর্যটনকেন্দ্রগুলো দূষণমুক্ত রাখতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় পর্যটক ও পর্যটন ব্যবসায়ীদের সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন পর্যটন ও পরিবেশ সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, চলমান দূষণ প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকলে আগামী প্রজন্ম প্লাস্টিক আবর্জনা  ছাড়া আর কিছুই দেখতে পাবে না। নদী ও সমুদ্র দূষিত করলে খাবার পানিও পাওয়া যাবে না। তাই দেশের পর্যটন সম্ভাবনা ধরে রাখতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় পর্যটক ও পর্যটন ব্যবসায়ীদের আগে সচেতন হতে হবে। জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে সাংবাদিকদের সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখতে হবে।

সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) কক্সবাজারের রেডিয়েন্ট ফিস ওয়ার্ল্ড মিলনায়তনে সাংবাদিকদের নিয়ে আয়োজিত কোস্টাল এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ইকো ট্যুরিজম শীর্ষক কর্মশালায় তারা এসব কথা বলেন। সমুদ্র বিষয়ক পরিবেশবাদী সংগঠন সেভ আওয়ার সি, বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং মেরিন জার্নালিস্টস নেটওয়ার্ক যৌথভাবে এ কর্মশালার আয়োজন করে।

কর্মশালায় পরিবেশ অধিদফতরের পরিচালক (প্ল্যানিং) সোলায়মান হায়দার বলেন, পরিবেশগতভাবে সেন্টমার্টিন ও কক্সবাজারের অবস্থা এখন খুবই খারাপ। পরিবেশ রক্ষায় কেউ নিজের দায়িত্ব পালন করে না। হোটেল মালিক ও দোকানদাররা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ভালোভাবে করেন না। রেসপন্সিবল বিহেভিয়ার বিষয় পর্যটকরাও সচেতন না থাকায় পর্যটনকেন্দ্রগুলো চরম বিপর্যয়ের মুখে পড়ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি বলেন, টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিনে যাওয়ার সময় পর্যটকরা পাখিকে চিপস খাওয়ানোর নামে প্যাকেটটা নদীতে ফেলে দেয়। এমনকি সেন্টমার্টিন এর বিচে পর্যটকরা গিয়ে সাইকেল বা মোটরসাইকেল নিয়ে নামে। এভাবে চলতে থাকলে সেন্টমার্টিনে আর মাছ পাওয়া যাবে না। এমনকি পানিও থাকবে না। এভাবে চলতে থাকলে পর্যটন এলাকায় আমাদের সন্তানেরা ময়লা ছাড়া আর কিছু দেখতে পাবে না, এমনকী খাবার পানিও পাবে না।

বন অধিদফতরের বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের পরিচালক এস এম জহির উদ্দিন আকন বলেন, দেশের পর্যটন শিল্প টিকে আছে প্রকৃতির ভিত্তির ওপর। তাই পর্যটন সম্ভাবনা ধরে রাখতে হলে আগে রক্ষা করতে হবে প্রাণ ও প্রকৃতি। বিশেষ করে সাগরে পর্যটন ও সমুদ্র অর্থনীতিতে এগিয়ে যেতে হলে সমুদ্রের ইকোসিস্টেম ধরে রাখতে হবে। সমুদ্রের প্রাণীদের তাদের পরিবেশে বাঁচতে দিতে হবে।

বাংলাদেশ ট্যুরিজম এক্সপ্লোরার্স অ্যাসোসিয়েশনের উপদেষ্টা মেজবাউল আলম বলেন, সমুদ্র এলাকায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনার এ পরিস্থিতির জন্য জনসচেতনতামূলক প্রচারণা বাড়াতে হবে।

সেভ আওয়ার সি'র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আনোয়ারুল হকের পরিচালনায় কর্মশালায় আরও বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ ট্যুরিজম এক্সপ্লোরার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম সাগর, বাংলাদেশ ট্যুরিজম ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও পর্যটন গবেষক মোখলেসুর রহমান, মেরিন জার্নালিস্টস নেটওয়ার্কের সভাপতি মাহমুদ সোহেল ।