পূর্ণ ক্ষমতায় পরীক্ষামূলক চলেছে পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট

পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র

পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট পূর্ণ ক্ষমতায় ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছে। কেন্দ্রটির মোট উৎপাদন ক্ষমতা এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট। এখন পর্যন্ত এটিই দেশের সব থেকে বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র। এর দ্বিতীয় ইউনিট আগামী জুনের মধ্যে উৎপাদনে আসার কথা রয়েছে।

কেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালক শাহ আব্দুল মওলা বলেন, ‘রবিবার (২২ মার্চ) রাত সাড়ে আটটা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত আমরা ফুল লোডে কেন্দ্রটি চালিয়ে দেখেছি। আমাদের লক্ষ্য ছিল বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পূর্ণ ক্ষমতায় চালানো।’ সোমবার (২৩ মার্চ) বিকালে কেন্দ্রটি ৩৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ গ্রিডে সরবরাহ করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এই এলাকার চাহিদা কম। এখান থেকে ঢাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহের অবকাঠামো এখনও তৈরি হয়নি। ফলে আমাদের চাহিদা অনুযায়ীই কেন্দ্র পরিচালনা করতে হচ্ছে।’

কেন্দ্রটি নির্মাণে বিসিপিসিএল সর্বাধুনিক আল্ট্রাসুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তি ব্যবহার করেছে। এছাড়া একইসঙ্গে পরিবেশ রক্ষায় সব ধরনের সতর্কতা মেনে চলা হচ্ছে। প্রতিবেশী দেশ ভারত এবং চীন কোনও কোনও ক্ষেত্রে কয়লাচালিত কেন্দ্রে উন্মুক্ত অবস্থায় কয়লা রেখে দিলেও পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র কয়লা রাখার জন্য যে কোল ইয়ার্ড নির্মাণ করেছে, তা পুরোপুরি ঢাকনাযুক্ত। জাহাজ থেকে কয়লা ওঠানোর সময়ও ঢাকানাযুক্ত কনভেয়ার বেল্টে আনা হবে।

জানা যায়, বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চলতি মাসের শেষের দিকে ইনিশিয়াল অপারেশন ডেট (আইওডি) ঘোষণা করার কথা রয়েছে। তবে করোনাভাইরাসের কারণে সরকারি সব অফিস বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কেন্দ্রটির আইওডি ঘোষণার জন্য বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড এবং পাওয়ার গ্রিড কোম্পানির (পিজিসিবি)সমন্বয়ে কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটি বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ফুল লোডে চালিয়ে দেখে। এরপর কেন্দ্রের আইওডি ঘোষণা নিশ্চিত হয়। প্রকল্প পরিচালক বলেন, ‘আমরা দুই-এক দিনের মধ্যে বলতে পারবো কবে নাগাদ কেন্দ্রটির আইওডি ঘোষণা করা সম্ভব হবে।’

অন্য এক কর্মকর্তা জানান, প্রতি এক লাখ ৮০ হাজার টন ধারণ ক্ষমতার চারটি কোল ইয়ার্ড নির্মাণ করা হচ্ছে। যা দিয়ে কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রটি জন্য ৫৭ দিনের কয়লা মজুত রাখতে পারবে। নির্গত গ্যাস ধরতে ফ্লু গ্যাস ডিসালফারাইজার ইউনিট (এফজিডি) নির্মাণ করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে কেন্দ্রটির ৯৬ ভাগ ফ্লু গ্যাস ধরা হবে। বিদ্যুৎ উৎপাদনের পর ৯৯ দশমিক ৯ ভাগ ছাই ‘অ্যাশ হপারে’ ধরা হবে। এর বাইরেও কেন্দ্রটির ২২০ মিটার উচ্চতার চিমনি নির্মাণ করা হয়েছে। প্রায় ৭৫ তলা ভবনের সমান উঁচু চিমনি দিয়ে বাতাসের নির্দিষ্ট স্তরে ধোঁয়া ছাড়ার ফলে দূষণ নিয়ন্ত্রিত মাত্রার মধ্যেই থাকবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।