এ প্রসঙ্গে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘হুট করে বড় উত্থান, বা হুট করে বড় পতন বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করে। সে কারণে বাজার ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হওয়া দরকার।’
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত সপ্তাহে শেয়ারবাজারে কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা থাকলেও আগের সপ্তাহের মতো গত সপ্তাহেও লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম অপরিবর্তিত থাকে। গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৩টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২০টির। আর ২৮৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সপ্তাহের ৫ দিনের (রবিবার থেকে বৃহস্পতিবার) বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত সপ্তাহে যে সব প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে, তার চেয়ে বেশি সংখ্যার দাম বাড়ায় বাজার মূলধন বেড়েছে। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে ডিএসই’র বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ১০ হাজার ৮৩৪ কোটি টাকা, যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৩ লাখ ১০ হাজার ৪৬৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক সপ্তাহে ডিএসই’র বাজার মূলধন বেড়েছে ৩৬৮ কোটি টাকা।
এ প্রসঙ্গে ডিএসই ব্রোকারেজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) সাবেক সভাপতি আহমেদ রশিদ লালী বলেন, ‘বাজার ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হলে বিনিয়োগকারীদের মনে আশার সঞ্চার হয়। তবে সুশাসন থাকলে এই বাজার ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে উঠবে।’ তবে কালো টাকা শর্তহীনভাবে শেয়ারবাজারে আসার সুযোগ দেওয়া হলে বাজার দ্রুত স্বাভাবিক হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এদিকে গত সপ্তাহে ডিএসই’র প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৮ দশমিক ৭০ পয়েন্ট। আগের সপ্তাহে এ সূচকটি কমে দাঁড়িয়েছিল ৬ দশমিক ৭৩ পয়েন্ট। বাকি দুটি সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক বেড়েছে দশমিক ৯৪ পয়েন্ট। আগের সপ্তাহে এ সূচকটি কমেছে ১ দশমিক ২৩ পয়েন্ট। আর ডিএসই-৩০ বেড়েছে ৪ দশমিক ৮৯ পয়েন্ট। আগের সপ্তাহে এ সূচকটি কমেছে ৬ দশমিক ৩২ পয়েন্ট।
এদিকে বাজারের তথ্য বলছে, সপ্তাহজুড়ে সূচক বাড়লেও ডিএসই-তে কমেছে লেনদেনের গতি। দৈনিক গড় লেনদেনের পরিমাণ ৫০ কোটি টাকার কাছাকাছি এসে দাঁড়িয়েছে। গত সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসই-তে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৫৬ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৬৭ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। অর্থাৎ, প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ১০ কোটি ৯৭ লাখ টাকা বা ১৬ দশমিক ১৮ শতাংশ।
আর গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসই-তে মোট লেনদেন হয়েছে ২৮৪ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয় ৩৩৯ কোটি ২৪ লাখ টাকা। সেই হিসাবে মোট লেনদেন কমেছে ৫৪ কোটি ৮৯ লাখ টাকা বা ১৬ দশমিক ১৮ শতাংশ।
গত সপ্তাহের মোট লেনদেনের মধ্যে ‘এ’ গ্রুপের প্রতিষ্ঠানের অবদান দাঁড়িয়েছে ৯৯ দশমিক ১৩ শতাংশ। এছাড়া, ডিএসই’র মোট লেনদেনে ‘বি’ গ্রুপের অবদান দশমিক ৫৭ শতাংশ। ‘জেড’ গ্রুপের প্রতিষ্ঠানের অবদান দশমিক ২৮ শতাংশ এবং ‘এন’ গ্রুপের অবদান দশমিক শূন্য ২ শতাংশ।