কৃষি ঋণ বিতরণে ব্যাংকগুলোর গাফিলতি

 

ধান ঘরে তোলা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রাজশাহীর কৃষকরা

করোনা সংক্রমণের পরিস্থিতিতে বেশি করে ঋণ  প্রয়োজন ছিল কৃষকের। অথচ ব্যাংকগুলো তাদেরকে চাহিদা মতো ঋণ সহায়তা দেয়নি। ফলে প্রথমবারের মতো কৃষিঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রাও অর্জন করতে পারেনি ব্যাংকগুলো। সদ্য সমাপ্ত (২০১৯-২০) অর্থবছরে কৃষকদের জন্য ২৪ হাজার ১২৪ কোটি টাকা ঋণ বরাদ্দ রেখেছিল ব্যাংকগুলো। কিন্তু অর্থবছর শেষে এ খাতের ঋণ বিতরণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২২ হাজার ৭৪৯ কোটি টাকা। গত অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫ দশমিক ৬৯ শতাংশ বা এক হাজার ৩৭৫ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ কম হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রসঙ্গত, সরকারের পক্ষ থেকে করোনা সংকটের সময় কৃষি খাতকে সর্বাত্মকভাবে এগিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হলেও ব্যাংকগুলোর গাফিলতির কারণে কৃষকরা আগের মতো ঋণ পায়নি।
কথা ছিল কৃষকরা ১ এপ্রিল থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত ৪ শতাংশ সুদে ঋণ পাবেন। আর ৫ শতাংশ সুদ ভর্তুকি হিসেবে ব্যাংকগুলোকে পরিশোধ করবে সরকার। এ ছাড়া কৃষি খাতের ঋণের অন্তত ৬০ শতাংশ শস্য খাতে দিতে হবে। কিন্তু সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী কৃষকদের সেবা দিতে এগিয়ে আসেনি ব্যাংকগুলো।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিসংখ্যান বলছে, চলতি বছরের মার্চে কৃষি খাতে তিন হাজার ৪৫৮ কোটি টাকা ঋণ দেয় ব্যাংকগুলো, যা আগের বছরের মার্চের তুলনায় প্রায় অর্ধেক।
সর্বশেষ  জুন মাসে চার হাজার ১৪৮ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করে ব্যাংকগুলো। জুনে কৃষিঋণ বিতরণের পরিমান বাড়লেও লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনি ব্যাংকগুলো। অর্থাৎ, সদ্য বিদায়ী  অর্থবছরে লক্ষ্যের চেয়ে ৫ দশমিক ৬৯ শতাংশ ঋণ বিতরণ কম হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, গেলো অর্থবছরে কৃষিঋণের আদায়ও অনেক কম হয়েছে। জুন মাসের শেষে আদায়ের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২১ হাজার ২৪৫ কোটি টাকা, যা আগের অর্থবছরে ছিল ২৩ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা। বিগত অর্থবছরে জুনের শেষে কৃষি খাতে মোট ঋণ স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৪৫ হাজার ৫৯৩ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, সব বাণিজ্যিক ব্যাংকের বিতরণ করা মোট ঋণের দুই দশমিক ৫ শতাংশ ঋণ পল্লি অঞ্চলে বিতরণ করতে হয়। পল্লি অঞ্চলে অর্থ সরবারহের মাধ্যমে গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙ্গা ও খাদ্য নিরাপত্তা সৃষ্টিতে সরকারের লক্ষ্যের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংক এ নির্দেশনা জারি করে।