সিগারেটসহ তামাকপণ্যে কর বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি এনবিআরের

আগামী ২০২১-২০২২ অর্থবছরের বাজেটে সিগারেটসহ তামাকপণ্যের ওপর কর বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এনবিআর।

মঙ্গলবার (৯ মার্চ) জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে গণমাধ্যম কর্মীদের সংগঠন অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া অ্যালায়েন্স’র-এটিএমএ (আত্মা) প্রাক বাজেট আলোচনায় এমন প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এনবিআর কর্মকর্তারা। রাজধানীর সেগুন বাগিচায় অবস্থিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সভাকক্ষে ওই প্রাক বাজেট আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান প্রগতির জন্য জ্ঞান (প্রজ্ঞা)’র নির্বাহী পরিচালক এ বি এম জুবায়ের স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

আলোচনা সভায় সুনির্দিষ্ট করারোপসহ তামাকপণ্যের দাম বাড়ানোর দাবি জানান গণমাধ্যম কর্মীদের অ্যালায়েন্স-আত্মা। সংগঠনটি বলেছে, আত্মা’র উপস্থাপিত দাবি বাস্তবায়ন করা হলে প্রায় ৮ লাখ মানুষের অকাল মৃত্যু রোধ করা সম্ভব হবে এবং ৩ হাজার ৪০০ কোটি টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব আয় অর্জিত হবে।

সভায় জানানো হয়, করের ভিত্তি এবং করহার খুবই কম হওয়ায় সিগারেট, বিড়ি এবং ধোঁয়াবিহীন তামাকপণ্য (জর্দা ও গুল) অধিক সহজলভ্য থেকে যাচ্ছে। বাংলাদেশের বর্তমান তামাক কর অত্যন্ত জটিল যা মূল্য বাড়ানোর মাধ্যমে তামাক ব্যবহার নিরুৎসাহিতকরণে যথেষ্ট নয়। বাংলাদেশে এখনও প্রায় ৩ কোটি ৭৮ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক ব্যবহার করেন, ধূমপান না করেও প্রায় ৩ কোটি ৮৪ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ বিভিন্ন পাবলিক প্লেস, কর্মক্ষেত্র ও পাবলিক পরিবহনে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হন। তামাক ব্যবহারের কারণে বাংলাদেশে প্রতিবছর ১ লাখ ২৬ হাজারের অধিক মানুষ মারা যান। বছরে তামাক ব্যবহারের অর্থনৈতিক ক্ষতির (চিকিৎসা ব্যয় এবং উৎপাদনশীলতা হারানো) পরিমাণ ৩০ হাজার ৫৬০ কোটি টাকার বেশি।

সভায় এনবিআর সদস্য মাসুদ সাদিক বলেন, বাজেট প্রণয়নে আত্মা’র প্রস্তাব গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা হবে।
এ সময় আত্মা’র পক্ষ থেকে ৪ দফা বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়। প্রস্তাবনাগুলো হচ্ছে: ১. সকল সিগারেট ব্রান্ডে অভিন্ন করভারসহ (সম্পূরক শুল্ক চূড়ান্ত খুচরা মূল্যের ৬৫%) মূল্যস্তরভিত্তিক সুনির্দিষ্ট এক্সাইজ (সম্পূরক) শুল্ক প্রচলন করা। ২. ফিল্টারযুক্ত ও ফিল্টারবিহীন বিড়িতে অভিন্ন করভারসহ (সম্পূরক শুল্ক চূড়ান্ত খুচরা মূল্যের ৪৫%) সুনির্দিষ্ট এক্সাইজ (সম্পূরক) শুল্ক প্রচলন করা। ৩. জর্দা এবং গুলের কর ও দাম বৃদ্ধিসহ সুনির্দিষ্ট এক্সাইজ (সম্পূরক) শুল্ক প্রচলন করা ও ৪. সকল তামাকপণ্যের খুচরা মূল্যের ওপর ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) এবং ১ শতাংশ স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ বহাল রাখা।

সভায় উপস্থিত ছিলেন এনবিআরের সদস্য আলমগীর হোসেন, মাসুদ সাদিক, সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া। অপরদিকে অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া অ্যালায়েন্স’র প্রতিনিধি হিসেবে একাত্তর টেলিভিশনের জয়েন্ট এডিটর মনির হোসেন লিটন, বিডি নিউজের চিফ ক্রাইম করেসপন্ডেন্ট মর্তুজা হায়দার লিটন,এটিএন বাংলার নিউজ এডিটর নাদিরা কিরণ, দৈনিক যুগান্তরের সিনিয়র রিপোর্টার মিজান চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।