সঞ্চয়পত্র থেকে সরকার ঋণ নেবে ৩২ হাজার কোটি টাকা

জাতীয় সংসদে বৃহস্পতিবার (৩ জুন) ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট (প্রস্তাবিত) উপস্থাপন করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ঘাটতি বাজেট এটি। রাজস্ব আদায়ের চ্যালেঞ্জ মাথায় নিয়ে অর্থমন্ত্রী জাতীয় সংসদে আগামী বছরের বাজেট পেশ করছেন। এটি অর্থমন্ত্রীর জন্য তৃতীয় বাজেট।

নতুন বাজেটে সঞ্চয়পত্র থেকে ৩২ হাজার কোটি টাকা ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এই লক্ষ্যমাত্রা এযাবৎকালের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। এই বাজেটে মোট ব্যয়ের আকার ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা। এটি মোট জিডিপির ১৭ দশমিক ৪৭ শতাংশ।

অর্থমন্ত্রীর পেশ করা এই বাজেটে ঘাটতির পরিমাণ (অনুদানসহ) ২ লাখ ১১ হাজার ১৯১ কোটি টাকা এবং অনুদান ছাড়া ঘাটতি হচ্ছে ২ লাখ ১৪ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা। অনুদানসহ ঘাটতির পরিমাণ জিডিপির ৬ দশমিক এক শতাংশ।

আগামী বাজেটে ঘাটতি পূরণে অভ্যন্তরীণ খাত থেকে ঋণ নেওয়া হবে এক লাখ ১৩ হাজার ৪৫৩ কোটি টাকা এবং বৈদেশিক খাত থেকে নেওয়া হবে ৯৭ হাজার ৭৩৮ কোটি টাকা। অভ্যন্তরীণ খাতের মধ্যে ব্যাংকিং খাত থেকে ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭৬ হাজার ৪৫২ কোটি টাকা। আর সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩২ হাজার কোটি টাকা।

২০২০-২১ অর্থবছরে সরকার জাতীয় সঞ্চয়পত্র খাত থেকে ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল ২০ হাজার কোটি টাকা। তবে সংশোধিত বাজেটে তা বাড়িয়ে ৩০ হাজার কোটি টাকা করা হয়। সংশোধিত হিসাবে আগামী বাজেটে এ খাত থেকে ঋণের লক্ষ্যমাত্রা বাড়ছে দুই হাজার কোটি টাকা।

প্রসঙ্গত, করোনা মহামাররি মাঝে মানুষের আয় কমলেও বাড়ছে সঞ্চয় প্রবণতা। গ্রাহকরা সঞ্চয়ের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য মাধ্যম হিসেবে বিবেচনা করেন সঞ্চয়পত্রকে। ফলে সঞ্চয়পত্র বিক্রি বাড়ছে, আর সে কারণে বাজেট ঘাটতি মেটাতে সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ নেওয়াও বাড়বে।

এদিকে চলতি ২০২০-২০২১ অর্থবছরের প্রথম আট মাসেই (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে ৭৫ হাজার ১০৩ কোটি টাকা। যা বিগত পুরো অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র বিক্রির চেয়েও সাত হাজার ৯৭৫ কোটি ৬৫ লাখ টাকা বা ১২ শতাংশ বেশি। গত অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র বিক্রির পরিমাণ ছিল ৬৭ হাজার ১২৭ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।