দেড় মাসে ১১ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে সরকার

চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের ১ জুলাই থেকে ১২ আগস্ট পর্যন্ত দেড় মাসেরও কম সময়ে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকার ১১ হাজার ১৩০ কোটি ৮৮ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছে। এই ঋণের পুরোটাই নেওয়া হয়েছে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, সরকার বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ১১ হাজার কোটি টাকা নিলেও এই সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে কোনও ঋণ নেয়নি। উল্টো আগের নেওয়া ঋণের ২ হাজার ৫০৩ কোটি ৩২ লাখ টাকা পরিশোধ করেছে।

প্রসঙ্গত, সঞ্চয়পত্র বিক্রি অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় গত অর্থবছরে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে খুব একটা ঋণ নিতে হয়নি সরকারকে। কিন্তু ২০২১-২২ অর্থবছরের শুরু থেকেই সরকার ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে চলছে।

জানা গেছে, করোনার টিকা কেনাসহ দৈনন্দিন খরচ মেটাতে বাড়তি ব্যয় হওয়ায় সরকারকে ব্যাংক থেকে ধার করে তা পূরণ করতে হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ও ব্র্যাক ব্যাংকের চেয়ারম্যান আহসান এইচ মনসুর বলেন, অর্থবছরের শুরুতে কাঙ্ক্ষিত রাজস্ব আদায় হচ্ছে না। কিন্তু টিকার জন্য অনেক টাকা লাগছে। যে কারণে সরকার ব্যাংকের দ্বারস্থ হচ্ছে। তবে এতে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই বলেও জানান তিনি। তার মতে, রাজস্ব আদায় বাড়লে এবং টিকার জন্য দাতা সংস্থাগুলোর আশ্বাসের ঋণ পাওয়া গেলে সরকারের এত ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন হবে না।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের ১২ আগস্ট পর্যন্ত (১ জুলাই থেকে ১২ আগস্ট) ব্যাংক থেকে সরকারের নিট ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৮৮৭ কোটি ১৪ লাখ টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, গত ১২ আগস্ট পর্যন্ত সরকারের ব্যাংক ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ১২ হাজার ৬১০ কোটি ৫ লাখ টাকা। গত অর্থবছরের জুন শেষে এই স্থিতি ছিল দুই লাখ এক হাজার ৫৩৮ কোটি টাকা।

উল্লেখ্য, চলতি অর্থবছরে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকার ৭৬ হাজার ৪৫২ কোটি টাকা নিট ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। আর সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩২ হাজার কোটি টাকা।

অবশ্য গত অর্থবছর শেষে ব্যাংক থেকে সরকারের নেওয়া ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় ১৮ হাজার কোটি টাকা। তবে ২০১৯-২০ অর্থবছরে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ৬৬ হাজার ৯০৭ কোটি ৬০ লাখ টাকার রেকর্ড পরিমাণ ঋণ নিয়েছিল সরকার, যা ছিল ওই অর্থবছরের বাজেটের লক্ষ্যের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি।