এলডিসি গ্রাজুয়েশনের পরও বাজার সুবিধা পাওয়ার আশা তৈরি হয়েছে: বাণিজ্য সচিব

এলডিসি গ্রাজুয়েশনের পরও কয়েক বছর বাজার সুবিধাপ্রাপ্তির আশা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ। রবিবার (২৬ জুন) ঢাকায় বাংলাদেশ সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে জেনেভায় অনুষ্ঠিত মিনিস্টিরিয়াল কনফারেন্স (এমসি ১২) উপলক্ষে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন।

সচিব বলেন, বাংলাদেশ গত ১২-১৬ জুন জেনেভায় অনুষ্ঠিত ডব্লিউটিও-এর মিনিস্টিরিয়াল কনফারেন্সে (এমসি ১২) বাংলাদেশ এলডিসি গ্রাজুয়েশনের পর আরও কয়েক বছর বাজার সুবিধা অব্যাহত রাখার বিষয়ে প্রস্তাব গ্রহণের জন্য জোরালো দাবি তুলে ধরে। এলডিসি থেকে গ্রাজুয়েশনের পর ১২ বছর বাজার সুবিধা পাবার সময় বৃদ্ধির প্রস্তাব থাকলেও তা পরে ৬ থেকে ৯ বছরে বৃদ্ধি দাবি জোরালো হয়েছে।

সচিব জানান, সম্মেলনে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার আওতায় প্রাপ্ত সুবিধা আরও কিছু সময় পর্যন্ত বৃদ্ধির যৌক্তিকতা আছে মর্মে সম্মেলনে অভিমত প্রকাশ করা হয়েছে। এর ফলে পরে এ বিষয়ে আরও আলোচনার পথ সুগম হলো। আশা করা হচ্ছে আগামী ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিতব্য এমসি ১৩ সম্মেলনে ভালো ফল পাওয়া যাবে। সম্মেলনে বাংলাদেশের দেওয়া প্রস্তাবগুলো জোরালোভাবে সমর্থন করা হয়।

বাণিজ্য সচিব বলেন, এমসি ১২ সম্মেলনে মৎস্য খাতে ভর্তুকির বিষয়ে একটি চুক্তি অনুমোদিত হয়েছে। এত অবৈধ ফিশিং ভেসেলে কোনও ভর্তুকি প্রদান করা যাবে না। প্রয়োজনের অতিরিক্ত মৎস্য আহরণ করা যাবে না। এলডিসিভুক্ত কোনও দেশ এ সিদ্ধান্ত অমান্য করলে সে দেশের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা যাবে না। এছাড়া, কোভিড-১৯ এবং ভবিষ্যৎ মহামারি মোকাবেলা করার জন্য সংশ্লিষ্ট সেক্টরের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে প্রযুক্তি হস্তান্তরের বিষয়ে গুরুত্ব প্রদান করে ট্রিপস চুক্তি মোতাবেক বাণিজ্য সহজ করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে, খাদ্যদ্রব্য রপ্তানির ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা আরোপ না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।

বাণিজ্যসচিব বলেন,  মিনিস্টিরিয়াল কনফারেন্স চলাকালে বাণিজ্যমন্ত্রী সিঙ্গাপুর, নেপাল, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ইউরোপীয় পার্লামেন্ট সদস্যদের সঙ্গে পৃথকভাবে দ্বিপাক্ষিক সভা করেন। এতে দেশগুলোতে রফতানি বৃদ্ধি এবং বাণিজ্য বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়। এলডিসি গ্রাজুয়েশনের পরও বাংলাদেশের জন্য বাজার সুবিধা অব্যাহত রাখার আহবান জানানো হয়। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য সচিব বলেন, নেপালের সঙ্গে পিটিএ স্বাক্ষর নিয়ে আলোচনা করা হয়। সিঙ্গাপুর বাংলাদেশের সঙ্গে এফটিএ স্বাক্ষরের আগ্রহ প্রকাশ করে।

উল্লেখ্য, জেনেভায় অনুষ্ঠিত মিনিস্টিরিয়াল কনফারেন্স (এমসি ১২) এ আউটকাম ডকুমেন্টসহ ৭টি সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং জেনারেল কাউন্সিলের ৩টি সিদ্ধান্ত অনুমোদন করা হয়। বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির নেতৃত্বে ৬ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল কনফারেন্সে অংশগ্রহণ করেন।