ডিম ও চালের দাম বেড়েছে

এবার বৃষ্টির অজুহাতে বেড়েছে সবজির দাম, সেই সঙ্গে বেড়েছে চাল ও ডিমের দামও। ফার্মের মুরগির প্রতি হালি ডিম বিক্রি হচ্ছে এখন ৪৭ থেকে ৪৮ টাকায়। শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) কোথাও কোথাও এক হালি ডিমের জন্য গুনতে হচ্ছে ৫০ টাকাও। সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবির তথ্য বলছে, গত সপ্তাহে প্রতি হালি ডিমের দাম ছিল ৪০ টাকা থেকে ৪৫ টাকা। ডিম ব্যবসায়ীরা বলছেন, তিন দিনের ব্যবধানে খুচরা বাজারে ডজনপ্রতি ডিম ১৩০ টাকা থেকে বেড়ে এখন ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এর আগে গত মাসের মাঝামাঝি সময়ে অস্থিতিশীল ছিল ডিমের বাজার। সে সময় ডিমের ডজন ১৬০ টাকা ছাড়িয়েছিল। টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি হালি ফার্মের মুরগির ডিমের দাম বেড়েছে ৮ দশমিক ২৪ শতাংশ।

এদিকে মোটা-সরু সব চালের দামই বেড়েছে কেজিতে ২-৩ টাকা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ২ টাকা বেড়ে স্বর্ণা বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫২ টাকায় ও বিআর-২৮ চাল বিক্রি হচ্ছে ৬০-৬২ টাকায়। অথচ এর আগে প্রতি কেজি গুটি স্বর্ণার দাম ছিল ৪৮-৫০ টাকা ও বিআর-২৮-এর ছিল ৫৮-৬০ টাকা।

এছাড়া আগের চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে মিনিকেট ও নাজিরশাইল। এসব চাল মানভেদে বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৭০-৮৪ টাকায়।

মানিকনগর এলাকার চাল ব্যবসায়ী রজব আলী বলেন, পাইকারি বাজারে চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় খুচরা বাজারেও প্রভাব পড়েছে। এছাড়া এখন চালের মৌসুম শেষ। যদিও চাল আমদানির কথা শুনছি, কিন্তু বাজারে সেগুলো আসছে না। এজন্য চালের দাম বাড়ছে।

তিনি আরও বলেন, অগ্রিম টাকা দিয়েও চাহিদা মতো চাল মিলছে না। মোকামে যে পরিমাণ চালের অর্ডার দেওয়া হচ্ছে তা পাওয়া যাচ্ছে না।

এদিকে খোলা ময়দার দাম কেজিতে দুই টাকা বেড়েছে। গত সপ্তাহে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া খোলা ময়দা এখন বিক্রি হচ্ছে ৬২ টাকা কেজি দরে। একইভাবে প্যাকেট ময়দার দাম কেজিতে বেড়েছে পাঁচ টাকার মতো। গত সপ্তাহে ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া প্যাকেট ময়দা শুক্রবার বিক্রি হয় ৭৫ টাকা কেজি দরে।

বেড়েছে সয়াবিন তেলের দামও। খোলা সয়াবিন গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ১৭২ টাকা লিটার। বর্তমানে ক্রেতাদের কিনতে হচ্ছে ১৭৭ টাকা লিটার। এক লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে তিন টাকা। অর্থাৎ ১৯২ টাকা লিটার সয়াবিন বর্তমানে ১৯৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আর পাঁচ লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ৯৩০ টাকা। গত সপ্তাহের একই বোতল বিক্রি হচ্ছিল ৯১০ টাকায়। 

এদিকে এক সপ্তাহ ব্যবধানে বেড়েছে মুরগির দাম। গত সপ্তাহে যেখানে ব্রয়লার মুরগির কেজি ছিল ১৬৫ থেকে ১৭০ টাকা, সেখানে শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) তা বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়। ব্যবসায়ীরা বলছেন, মুরগির দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে বেচাবিক্রি আগের চেয়ে কমে গেছে।

গোপীবাগ এলাকার মুরগি বিক্রেতা শাওন বলেন, গত সপ্তাহে মুরগি ১৬৫ থেকে ১৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছি। এখন বিক্রি করতে হচ্ছে ১৮০ টাকা।

অবশ্য আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে গরুর মাংস। ৬৮০ টাকা কেজি। খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৯০০ টাকা থেকে ৯৫০ টাকা কেজি। আর ব্রয়লার ১৮০, লেয়ার মুরগি (লাল) ২৮০, সোনালি বা পাকিস্তানি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩২০ টাকা কেজি দরে।

দাম বেড়েছে আদা-রসুনের। আদার দাম বেড়েছে কেজিতে ২০ টাকার মতো। ব্যবসায়ীরা গত সপ্তাহে ১২০ টাকা কেজি যে আদা বিক্রি করেছেন, শুক্রবার সেই আদা তারা বিক্রি করছেন ১৪০ টাকা কেজি দরে। আমদানি করা ৮০ টাকা কেজি আদার দাম বেড়ে হয়েছে ১০০ টাকা। টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, গত এক সপ্তাহে এই পণ্যটির দাম বেড়েছে ১৩ দশমিক ৬৪ শতাংশ। একইভাবে রসুনের দাম কেজিতে বেড়েছে ১০ টাকার মতো। গত সপ্তাহে ১১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া রসুন এই সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা কেজি দরে।

এদিকে কয়েক দিনের বৃষ্টির প্রভাব পড়েছে সবজির দামে। সবজি ভেদে দাম ২০-২৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বেগুন ১০০, কচুর লতি ৮০, মুলা ৬০, শসা ৭০, করলা ৮০, ঢেঁড়স ৬০, পটল ৬০, টমেটো ১২০, সিম ১৬০, কচুরমুখী ৬০, পেঁপে ৩০, চিচিঙ্গা ৬০, বরবটি ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। লাউ ৬০, বাঁধাকপি ও ফুলকপি ৫০ টাকা ও চালকুমড়া ৪০ টাকা পিস হিসেবে এবং মিষ্টি কুমড়ার ফালি ৩০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। আর কাঁচা কলা ৪০ ও লেবু ৩০ টাকা হালি দরে বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩২০ থেকে ৪৫০ টাকা কেজি। তেলাপিয়া, পাঙাশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ২০০ টাকা কেজি। শিং মাছের কেজি ৩৫০ থেকে ৪৬০ টাকা। কৈ মাছের কেজি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। পাবদা মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকা। চিংড়ির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা।