তৈরি পোশাকখাত অস্থিতিশীলের চেষ্টা করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে: সালমান এফ রহমান

আন্দোলনের নামে দেশের তৈরি পোশাক খাতকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করলে কঠোর অবস্থানে যাবে সরকার। এমন কঠোর হুঁশিয়ারির কথা জানান প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এমপি। তিনি জানান, শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধির দাবির সঙ্গে মালিকরাও একমত পোষণ করেছেন।

বুধবার (১ নভেম্বর) বিকালে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে শিল্প মালিকদের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের একথা বলেন সালমান এফ রাহমান। এ দিনই নিম্নতম মজুরি বোর্ডের সভাশেষে জানানো হয়, শ্রমিকদের দাবি আমলে নিয়েই বাড়ানো হবে তৈরি পোশাক শিল্পের সর্বনিম্ন মজুরি।

একদিকে সর্বনিম্ন মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে চলছে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ, অন্যদিকে অধিকার আদায়ে আন্দোলন-সংগ্রামের নামে পোশাক কারখানায় করা হচ্ছে অগ্নিসংযোগ-ভাঙচুর আর ছড়ানো হচ্ছে সহিংসতা।

এমন পরিস্থিতিতে বুধবার দুপুরে রাজধানীর তোপখানায় ৭ম বারের মতো পোশাক খাতে সর্বনিম্ন মজুরি নির্ধারণে ৫ম সভা শেষে মালিকপক্ষের প্রতিনিধি জানান, তাদের দেওয়া প্রস্তাবনা- ১০ হাজার ৪০০ টাকার বেশি বেতন পাবেন শ্রমিকরা। যা কার্যকর হবে আগামী মাস থেকে।

এদিন বিকালেই পোশাক শিল্প মালিকদের সচিবালয়ে বৈঠকে ডাকেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। উপস্থিত হন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, ঢাকা উত্তরের মেয়র আতিকুল ইসলাম, বিজিএমইএ-বিকেএমইএ প্রেসিডেন্টসহ খাত সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা। দেশের প্রধান রফতানিমুখী শিল্পের বর্তমান অস্থির পরিস্থিতি সামাল দিতে কয়েক ঘণ্টার আলোচনা শেষে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান সাংবাদিকদের বলেন, আমরা নভেম্বর মাসের মধ্যে নিম্নতম মজুরির সিদ্ধান্ত নিয়ে নেবো। ১ ডিসেম্বর এটা কার্যকর হবে। মালিকরাও রাজি হয়েছেন যে তারা যেটা প্রস্তাব দিয়েছেন, সেটা যদি বৃদ্ধি করতে হয়, যুক্তি দেখে তারা সেটা বৃদ্ধি করবেন। তারা যেটা প্রস্তাব দিয়েছেন সেটা ফাইনাল না, নেগোসিয়েশন চলছে। সে নেগোসিয়েশন নভেম্বর মাসের মধ্যে শেষ করতে হবে। ডিসেম্বরের বেতনটা জানুয়ারিতে নতুন রেটে মজুরি পাবে।

সালমান এফ রহমান হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, শ্রমিকদের স্বার্থকে সামনে রেখেই বাড়ানো হবে তাদের বেতন। তবে, শিল্পকে যারা অস্থিতিশীল করেছে তাদের বিরুদ্ধে নেওয়া হবে কঠোর ব্যবস্থা। যারা ভাঙচুর করেছে, ফ্যাক্টরিতে আগুন লাগিয়েছে তাদেরকে কোনও ছাড় দেওয়া হবে না।

শ্রমিকদের কাজে যোগদানের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমি আহ্বান জানাবো আমাদের শ্রমিক ভাইবোনদেরকে তারা যেন কাজে চলে আসে। এখানে এমন কোনও কিছু নাই যেটা তাদের স্বার্থের বিরুদ্ধে, তাদের স্বার্থের বিরুদ্ধে সরকার কোনও কাজ করবে না।

এ সময় বিজিএমইএ সভাপতি জানান, নিবিড়ভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে ক্রেতাজোট। তবে, প্রভাব ফেলবে না ইউরোপীয় ইউনিয়নের নতুন জিএসপি স্কিমে।

বিজিএমইএ'র দাবি, চলমান উসকানিমূলক আন্দোলনের কবলে পড়ে বন্ধ রয়েছে ২০ থেকে ৩০টি কারখানা।