আইএমএফের ১৩০ কোটি ডলার একসঙ্গে পাচ্ছে বাংলাদেশ, ২৬ জুন রিজার্ভে জমা

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) চলমান ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ কর্মসূচির আওতায় চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির ১৩০ কোটি মার্কিন ডলার একসঙ্গে পাচ্ছে বাংলাদেশ। আগামী ২৬ জুন এই অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে জমা হবে বলে নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর  ড. আহসান এইচ মনসুর।

সোমবার (২৩ জুন ) রাতে  বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেন, ‘১৩০ কোটি ডলার আমরা পাচ্ছি। আইএমএফের পর্ষদে আজ তা অনুমোদিত হয়েছে।’

বাংলাদেশ সময় সোমবার রাতেই ওয়াশিংটনে আইএমএফের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির নির্বাহী পর্ষদের বৈঠকে ঋণ কর্মসূচির তৃতীয় ও চতুর্থ পর্যালোচনার (রিভিউ) প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয় এবং তা অনুমোদন পায়। এ দুই কিস্তির অর্থ ছাড়ের মধ্য দিয়ে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে তাৎপর্যপূর্ণ ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।

২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি বাংলাদেশকে সাড়ে তিন বছরের জন্য ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ কর্মসূচি অনুমোদন দেয় আইএমএফ। এর মধ্যে ৩৩০ কোটি ডলার বর্ধিত ঋণসহায়তা (ইসিএফ ও ইএফএফ) এবং ১৪০ কোটি ডলার রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটি (আরএসএফ) থেকে দেওয়া হচ্ছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, আরএসএফ তহবিল থেকে ঋণ পাওয়া এশিয়ার প্রথম দেশ বাংলাদেশ।

এই পর্যন্ত তিন কিস্তিতে বাংলাদেশ পেয়েছে ২৩১ কোটি ডলার—প্রথম কিস্তি ৪৭.৬৩ কোটি ডলার (ফেব্রুয়ারি ২০২৩), দ্বিতীয় কিস্তি ৬৮.১০ কোটি ডলার (ডিসেম্বর ২০২৩) এবং তৃতীয় কিস্তি ১১৫ কোটি ডলার (জুন ২০২৪)। নতুন ১৩০ কোটি ডলার ছাড় হলে মোট প্রাপ্তি দাঁড়াবে ৩৬১ কোটি ডলার, অবশিষ্ট থাকবে ১০৯ কোটি ডলার, যা ভবিষ্যতে আরও দুই কিস্তিতে পাওয়া যাবে।

চতুর্থ কিস্তি মূলত পাওয়ার কথা ছিল ২০২৪ সালের ডিসেম্বরেই। তবে সে সময় যুক্তরাষ্ট্রে তীব্র তুষারঝড়ের কারণে আইএমএফের কার্যক্রম বিলম্বিত হয়। পরবর্তীতে ফেব্রুয়ারি ও মার্চে পর্ষদ সভা হলেও বাংলাদেশ প্রসঙ্গ ওঠেনি। অবশেষে গত এপ্রিলে আইএমএফ প্রতিনিধিদল ঢাকা সফর করে দুই সপ্তাহের মূল্যায়ণ শেষে আলোচনা এগোয়।

কিস্তি ছাড়ের বিষয়টি দীর্ঘ সময় অনিশ্চয়তায় থাকায় দুশ্চিন্তায় ছিল সরকার। কারণ আইএমএফের অন্যতম প্রধান শর্ত ছিল মুদ্রা বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করা। শুরুতে বাংলাদেশ এ বিষয়ে অনাগ্রহী থাকলেও টানা আলোচনার পর চলতি বছরের মে মাসে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করে। ফলে আইএমএফ ঋণ ছাড়ের পথ খুলে দেয়।