বাংলাদেশ ও ভুটানের জন্য বিশ্বব্যাংকের নতুন ডিভিশন ডিরেক্টর হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন জঁ পেসমে। সোমবার (৩০ জুন) থেকে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব পালন শুরু করেছেন।
ফ্রান্সের নাগরিক পেসমে একজন প্রকৌশলী হলেও তার কর্মজীবন জুড়ে রয়েছে বৈশ্বিক উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিয়ে বিস্তৃত অভিজ্ঞতা। ২০০৩ সালে সিনিয়র ইনফ্রাস্ট্রাকচার স্পেশালিস্ট হিসেবে বিশ্বব্যাংকে যোগ দেন তিনি। এরপর থেকে তিনি বিশ্বব্যাংক গ্রুপের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন, যার মধ্যে রয়েছে সংস্থাটির বেসরকারি খাত-অংশীদার আইএফসি-তে নেতৃত্বের ভূমিকা। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা অঞ্চলে আর্থিক খাতের বিকাশ ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় তার অভিজ্ঞতা উল্লেখযোগ্য।
নতুন দায়িত্বে যোগদানের আগে পেসমে বিশ্বব্যাংকের গ্লোবাল ডিরেক্টর, ফাইন্যান্স পদে দায়িত্ব পালন করেন। সেখানে তিনি বৈশ্বিক আর্থিক ব্যবস্থাকে আরও সুশৃঙ্খল, স্থিতিশীল, টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক করার জন্য কাজ করেছেন। এছাড়া, তিনি ফিনান্সিয়াল স্ট্যাবিলিটি অ্যান্ড ইন্টিগ্রিটি গ্লোবাল টিমের নেতৃত্ব দেন, যারা বিশ্বব্যাপী আর্থিক খাতকে জবাবদিহিমূলক, স্বচ্ছ এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী পরিচালনার সহায়তা প্রদান করে।
নতুন দায়িত্ব নিয়ে প্রতিক্রিয়ায় জঁ পেসমে বলেন, ‘বাংলাদেশের আছে বিশ্বের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার মতো অনন্য উন্নয়ন অভিজ্ঞতা। এ দেশ বারবার উন্নয়ন, উদ্ভাবন এবং সংকট মোকাবিলার ক্ষেত্রে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। আমি বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার অপেক্ষায় রয়েছি—যাতে টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির পথ অব্যাহত থাকে।’
তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা এখন ‘ওয়ান ওয়ার্ল্ড ব্যাংক গ্রুপ’ কৌশলের আওতায় কাজ করছি, যার মাধ্যমে আমাদের বেসরকারি খাতের দুই অংশীদার—আইএফসি ও এমআইজিএ—এর সঙ্গে যৌথভাবে বিনিয়োগ আকৃষ্ট করে গুণগত কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং বেসরকারি খাতের প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে কাজ করা হবে।”
বাংলাদেশ ও ভুটানের জন্য বিভাগ পরিচালক হিসেবে পেসমে দুটি দেশের সঙ্গে কৌশলগত ও নীতিগত সংলাপ পরিচালনা করবেন, যাতে বিশ্বব্যাংকের সহায়তা দেশগুলোর উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনে সহায়ক হয়। একইসঙ্গে, তিনি দেশভিত্তিক ও আঞ্চলিক কার্যক্রমগুলো বিশ্বব্যাংক গ্রুপের লক্ষ্য ও ভিশনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ রাখতে নেতৃত্ব দেবেন। এসব কার্যক্রমে গতি, প্রভাব, মাপ, বাছাইকৃত ক্ষেত্র এবং অংশীদারত্বের ওপর গুরুত্বারোপ করা হবে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরপরই বিশ্বব্যাংক অন্যতম প্রথম উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে এগিয়ে আসে। এখন পর্যন্ত বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশে ৪৬ বিলিয়ন ডলারের বেশি অনুদান ও স্বল্পসুদে ঋণ সহায়তা প্রদান করেছে। বর্তমানে বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংকের সর্ববৃহৎ আইডিএ কর্মসূচি চলমান রয়েছে, যার আওতায় ১৫ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুত অর্থ সহায়তা আছে।