সরকার আগামী ছয় মাসের জন্য সব ধরনের সঞ্চয়পত্রে মুনাফার হার কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সোমবার (৩০ জুন) অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। নতুন মুনাফার হার ২০২৫ সালের ১ জুলাই থেকে কার্যকর হবে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সঞ্চয়পত্রে মুনাফার হার নির্ধারণে ৫ বছর এবং ২ বছর মেয়াদি ট্রেজারি বন্ডের গড় সুদের হারকে ভিত্তি ধরা হয়, যা প্রতি ছয় মাস পরপর হালনাগাদ করা হয়। চলতি সময়ে ওই দুই বন্ডের সুদহার কমে যাওয়ায় সঞ্চয়পত্রেও হার হ্রাস করা হয়েছে।
কোন সঞ্চয়পত্রে কত মুনাফা
বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র (৫ বছর মেয়াদি):
সাড়ে সাত লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগে মুনাফার হার নির্ধারণ করা হয়েছে ১১.৮৩ শতাংশ; যা এতদিন ছিল ১২.৪০ শতাংশ। এর বেশি বিনিয়োগেও একই হার প্রযোজ্য হবে, যা আগে ছিল ১২.৩৭ শতাংশ। তবে প্রথম চার বছর শেষে ধাপে ধাপে কম হারে মুনাফা প্রদান করা হবে।
তিন মাস অন্তর মুনাফা সঞ্চয়পত্র (৩ বছর মেয়াদি):
সাড়ে সাত লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগে মুনাফা নির্ধারণ করা হয়েছে ১১.৮২ শতাংশ; যা আগে ছিল ১২.৩০ শতাংশ। সাড়ে সাত লাখ টাকার বেশি হলে মুনাফা হবে ১১.৭৭ শতাংশ; আগে যা ছিল ১২.২৫ শতাংশ। এখানেও প্রথম ও দ্বিতীয় বছরে মুনাফার হার কিছুটা কম থাকবে।
পেনশনার সঞ্চয়পত্র (৫ বছর মেয়াদি):
সাড়ে সাত লাখ টাকার নিচে বিনিয়োগে মুনাফা পাওয়া যাবে ১১.৯৮ শতাংশ; আগে ছিল ১২.৫৫ শতাংশ। বেশি অঙ্কে বিনিয়োগ করলে মুনাফা হবে ১১.৮০ শতাংশ; যা আগে ছিল ১২.৩৭ শতাংশ। প্রথম চার বছর ধাপে ধাপে মুনাফা কম হবে।
পরিবার সঞ্চয়পত্র (৫ বছর মেয়াদি):
সাড়ে সাত লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগে মুনাফা নির্ধারণ করা হয়েছে ১১.৯৩ শতাংশ; আগে ছিল ১২.৫০ শতাংশ। এর বেশি বিনিয়োগে হার হবে ১১.৮০ শতাংশ; যা আগে ছিল ১২.৩৭ শতাংশ। এক্ষেত্রেও বছর বছর মুনাফা কমে আসবে।
ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংক মেয়াদি হিসাব (৩ বছর মেয়াদি):
সাড়ে সাত লাখ টাকার নিচে বিনিয়োগে মুনাফা হবে ১১.৮২ শতাংশ; যা আগে ছিল ১২.৩০ শতাংশ। এর বেশি বিনিয়োগে হার হবে ১১.৭৭ শতাংশ; যা ছিল ১২.২৫ শতাংশ।
প্রভাব ও বিশ্লেষণ
অর্থনীতি বিশ্লেষকরা বলছেন, সামগ্রিক সুদহারে সাম্প্রতিক প্রবণতা এবং বাজারের আর্থিক ভারসাম্য রক্ষার দৃষ্টিকোণ থেকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে এতে স্বল্প আয়ের মানুষ ও অবসরপ্রাপ্তদের ওপর কিছুটা চাপ পড়তে পারে বলে তারা মনে করছেন।