যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক না কমালে অর্থনীতিতে প্রভাব পড়বে: বাণিজ্য সচিব

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর যে ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন—তা যদি না কমানো যায়, তাহলে দেশের অর্থনীতিতে প্রভাব পড়তে পারে বলে মন্তব্য করছেন বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান।

মঙ্গলবার (৮ জুলাই) সচিবালয়ে এ মন্তব্য করেন বাণিজ্য সচিব। তবে একই সঙ্গে তিনি আশা প্রকাশ করেন—আলোচনার পথ খোলা আছে, ভালো কিছু হয়তো হবে।

বাণিজ্য সচিব বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা ৩৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক কমানোর জন্য বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বিদ্যমান বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর পরিকল্পনা করছে সরকার। একই সঙ্গে বোয়িং বিমান এবং মিলিটারি ইকুইপমেন্ট কেনার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রকে গুরুত্ব দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে গম, সয়াবিন, এয়ারক্রাফটসহ যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন পণ্যে ছাড় দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশকে। সে অনুযায়ী বাংলাদেশ বোয়িং বিমান কিনবে, তুলা আমদানি আরও বাড়াবে, সরকারিভাবে খাদ্যপণ্য, অস্ত্র কেনার ক্ষেত্রেও গুরুত্ব পাবে যুক্তরাষ্ট্র। এসব বিষয়ে ছাড় দিতে বা মেনে নিতে বাধা নেই।

বাণিজ্য সচিব বলেন, ভিয়েতনাম ২৬ শতাংশ শুল্ক আরোপ কমাতে পেরেছে মধ্যস্থতার মাধ্যমে। বাংলাদেশ কেন পারেনি, এর জবাব—আমাদেরও চেষ্টার কমতি ছিল না। শেষ পর্যন্ত যদি শুল্ক না কমায়, তাহলে কিছু ক্ষেত্রে প্রভাব পড়বে। তবে আলোচনার পথ খোলা আছে এখনও, আশা করি ভালো কিছু হবে।

উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন। স্থানীয় সময় সোমবার তিনি আরও জানান, বাংলাদেশ ছাড়াও দক্ষিণ কোরিয়া, জাপানসহ মোট ১৪টি দেশের জন্য নতুন শুল্ক হার নির্ধারণ করা হয়েছে।

হোয়াইট হাউসের ঘোষিত ৯০ দিনের শুল্ক বিরতির সময়সীমা শেষ হওয়ায় এই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। যদিও শুল্ক কার্যকর হওয়ার পূর্বনির্ধারিত তারিখ ছিল ৯ জুলাই, তা পিছিয়ে ১ আগস্ট নির্ধারণ করা হয়েছে।

মঙ্গলবারই সচিবালয়ে এ বিষয়ে কথা বলেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের বিষয়ের ওপর আলোচনার জন্য বাণিজ্য উপদেষ্টা যুক্তরাষ্ট্রে আছে। বাণিজ্য সচিব যাচ্ছেন। আমরা আশা করছি, আগামীকালের বৈঠকে তাদের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা নিয়ে আলোচনা হবে।

ট্রাম্পের দেওয়া চিঠির ব্যাপারে তিনি বলেন, এই চিঠিতে যা যা উল্লেখ করেছে, মানে আজকে যে ডকুমেন্ট পেয়েছি, তাতে যা ছাড় চেয়েছে তারা, সেগুলো আমরা অবশ্য আগেই প্রমিস করেছি এবং সেগুলোর ওপর এমনিতেও ডিউটি খুব কম। যেমন হুইট, সয়াবিন, এয়ারক্রাফট, অন্যান্য মেশিনারি—এগুলোর ওপর এমনিতেই ডিউটি রেট খুব কম। সেক্ষেত্রে আমাদের ছাড় দেওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের ইউএস ট্রেন্ডটা বাংলাদেশে বাড়ানো দরকার। সেটা না বাড়ালে তো আসলে তারা আমাদের কোনও ধরনের ছাড় দেবে না। কাজেই আমরা আলাপ-আলোচনা করে কিছু ছাড় তো দিতে সম্মত হতেই হবে।