জমি-ফ্ল্যাটের দাম বাড়বে, রিহ্যাব বলছে সংকট বাড়বে আবাসন শিল্পে

প্রস্তাবিত বাজেট পুনর্বিবেচনা না করলে আগামীতে জমি ও ফ্ল্যাটের দাম বাড়বে বলে দাবি করেছে  আবাসন খাতের ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব)।

বৃহস্পতিবার (১ জুন) বিকাল ৩টায় জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট সংসদে পেশ করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

প্রস্তাবিত বাজেটের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় রিহ্যাব প্রেসিডেন্ট আলমগীর শামসুল আলামিন বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে জমি রেজিস্ট্রেশনকালে উৎসে আয়কর বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। এছাড়া সিমেন্ট, পাথর, টাইলস, লিফট, সিরামিক, গ্যাস, সুইচ-সকেট, ক্যাবল, কিচেনওয়্যারসহ কমপক্ষে ১০-১২টি পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। যেসব পণ্যের দাম বাড়বে তার ক্রেতা হচ্ছি আমরা যারা ফ্ল্যাট তৈরি করি। আর সবশেষ এই পণ্যের দাম গিয়ে পড়বে ফ্ল্যাট ক্রেতার ওপর। এসব পণ্যের দাম সহনশীল না রাখলে আবাসন শিল্পে সংকট তৈরি হবে।

তিনি বলেন, রিহ্যাব জাতীয় বাজেট উপলক্ষে আবাসন সংক্রান্ত বিভিন্ন দাবি-দাওয়া উপস্থাপন করলেও প্রস্তাবিত বাজেটে তার কোনোটির প্রতিফলন হয়নি। বিশেষ করে অপ্রদর্শিত অর্থের বিনিয়োগ, ফ্ল্যাটের সেকেন্ডারি বাজার ব্যবস্থা চাঙা করতে পুরাতন ফ্ল্যাটে নিবন্ধন ব্যয় কমানো, বিশেষ তহবিল গঠনসহ কোনও দাবির প্রতিফলন হয়নি।

রিহ্যাব প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, আমাদের বেসরকারি উদ্যোক্তাদের একান্ত প্রচেষ্টায় গড়ে ওঠা এ খাত এখন নানা প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন। নানা রকম কর আরোপ ও সরকারের নীতি সহায়তার অভাবে ক্রমে দেশের আবাসন খাত মারাত্মক ঝুঁকির মুখে পতিত হয়েছে। প্রস্তাবিত বাজেটে জমি রেজিস্ট্রেশনকালে উৎসে আয়কর বৃদ্ধি, সিমেন্টসহ বিভিন্ন নির্মাণ সামগ্রীর ওপর নতুন করে অতিরিক্ত কর আরোপ আবাসন খাতকে আরও সংকটের দিকে ঠেলে দেবে। বাড়তি দাম ক্রেতার ওপর পড়বে এবং ‘সবার জন্য আবাসন’ এ স্লোগানকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে ও অনেকের আবাসনের স্বপ্ন কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। তিনি বলেন, এ অবস্থায় সরকারের আশু পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া এ সংকট উত্তরণ অসম্ভব। নির্মাণ সামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধি, নতুন ড্যাপের ফার হ্রাসসহ নানা কারণে সমগ্র গৃহায়ণ খাতে বিক্রির পরিমাণ হ্রাস পেয়েছে। এমনিতেই জমি ও ফ্ল্যাটের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে, এই মুহূর্তে নতুন করে নানা পণ্যের কর বৃদ্ধি দেশের অর্থনীতিতে এর একটা বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমাদের শঙ্কা।

তিনি বলেন, রিহ্যাবের বাজেট প্রস্তাবনায় আমরা সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়েছিলাম অপ্রদর্শিত অর্থ বিনাপ্রশ্নে বিনিয়োগের সুযোগ রাখায়। ২০২০-২১ অর্থবছরে বিনাপ্রশ্নে বিনিয়োগের সুযোগ থাকায় ২০ হাজার ৬০০ কোটি টাকা অর্থনীতির মূলধারায় এসেছে। সরকার দুই হাজার কোটি টাকার ওপরে রাজস্ব পেয়েছে। স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা দিয়ে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনাপ্রশ্নে বিনিয়োগের সুযোগ একটা বছর রাখলে অর্থনীতিতে একটা ভালো সুফল আসবে। স্ব স্ব দেশ বৈদেশিক মুদ্রা কীভাবে দেশের ভেতরে রাখা যায় তার ব্যবস্থা করছে। কাজেই আমরা এ অবস্থায় যদি অপ্রদর্শিত অর্থ পাচারের সুযোগ না রেখে মূলধারার অর্থনীতিতে নিয়ে আসতে পারি তবে সরকারের রাজস্ব আদায়ের পাশাপাশি নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হবে এবং চলমান অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলা করা সহজ হবে।