‘মাল্টিলেটারেল ট্রেডিং সিস্টেম টাইম টু রি-এনার্জি’ শীর্ষক উচ্চপর্যায়ের এই বৈঠক আয়োজন করে জাতিসংঘের বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও উন্নয়ন বিষয়ক সংস্থা আঙ্কট্যাড। এখানে প্যানেলিস্ট হিসেবে বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, ১৯৭১-৭২ অর্থবছরে বাংলাদেশের জাতীয় বাজেট ছিল ১৭৫ কোটি টাকা। আজ বাংলাদেশের জাতীয় বাজেট ৪ লাখ ২০৬ কোটি টাকায় গিয়ে ঠেকেছে। বাংলাদেশ ১৯৭২-৭৩ সালে ২৫টি পণ্য কয়েকটি দেশে রফতানি করে আয় করতো ৩৪৮ দশমিক ৪২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
তোফায়েল আহমেদের ভাষ্য, ‘বিশ্বের প্রায় ১৯৯টি দেশে ৭৪৪টি পণ্য রফতানি করে বাংলাদেশ আয় করছে সার্ভিস সেক্টরসহ ৩৮ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০২১ সালে এ রফতানির পরিমাণ দাঁড়াবে ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ব্যাংকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি। রেমিটেন্স আসছে প্রায় ১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।’
বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বহুপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তির পাশাপাশি আঞ্চলিক ও দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তিতে বিভিন্ন দেশের অংশগ্রহণের কারণে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার মূল নীতি ও উদ্দেশ্য ব্যাহত হচ্ছে। তাই স্বল্পোন্নত দেশের স্বার্থ সংরক্ষণে সদস্য দেশগুলোকে জোরালো শক্ত অবস্থানে যেতে হবে।’
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন আঙ্কটাড সেক্রেটারি জেনারেল মুকিশা কিতুয়ি। এখানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী সুরেশ প্রভু, কোস্টারিকার বৈদেশিক বাণিজ্যমন্ত্রী আলেক্সান্ডার মর্ক, নেদারল্যান্ডসের বৈদেশিক বাণিজ্য ও উন্নয়ন সহযোগিতা বিষয়ক মন্ত্রী সিগরিড ক্যাজ, সেন্টার ফর ইকনোমিক অ্যান্ড পলিসি রিভার্সের (সিইআরপি) পরিচালক মিস ডেবোরা জেজামস, কানেকশন ফর ল্যাটিন আমেরিকা অ্যান্ড দ্য ক্যারিবিয়ানের (ইসিএলএসি) এক্সিকিউটিভ সেক্রেটারি মিস আলিসিয়া বার্সিনা। এছাড়া পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে আসা অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা এই বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন।
মঙ্গলবার এ বৈঠকে অংশ নেওয়ার আগে সকালে হোটেল হিলটনে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড সেন্টারের নির্বাহী পরিচালক মিসেস আরাঞ্চা গঞ্জালেজের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। এ সময় তিনি বলেন, ‘ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড সেন্টার বাংলাদেশের ট্রেড সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ ও কারিগরি সহায়তা প্রদানের জন্য দীর্ঘদিন ধরে উল্লেখযোগ্য সহযোগিতা দিয়ে আসছে।’
বাংলাদেশের বাণিজ্য সংক্রান্ত কার্যক্রমে সক্ষমতা অর্জনে করণীয় সংক্রান্ত বিষয়ে গত বছর আইটিসি কর্তৃক একটি সমীক্ষা পরিচালনা করা হয়। বিশেষ করে নন ট্যারিফ মেজার্স সংক্রান্ত স্টাডির সুপারিশ বাস্তবায়ন সংক্রান্ত প্রকল্প গ্রহণ ও এর অর্থায়নে দাতাসংস্থা এবং উন্নয়ন সহযোগীদের অর্থায়নে আইটিসিকে এগিয়ে আসতে হবে। বাণিজ্য মন্ত্রনালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ ফরেন ট্রেড ইনস্টিটিটের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস দিয়েছেন আইটিসির নির্বাহী পরিচালক।
সভায বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন বাণিজ্য সচিব শুভাশীষ বসু, জেনেভা বাংলাদেশ মিশনের রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি মো. শামীম আহসান, রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভিসি বিজয় ভট্রাচার্য, ডব্লিউটিও সেলের মহাপরিচালক মো. মুনীর চৌধুরীসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা আবদুল লতিফ বকসী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।