বৈশ্বিক তুলা বাজারে অস্থিরতার আশঙ্কা

পাকিস্তানে বন্যা, যুক্তরাষ্ট্রে খরা, ভারতে অতিবৃষ্টির কারণে বৈশ্বিক তুলা বাজারে কিছুটা অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। চীনের শিনজিয়াং প্রদেশেও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে তুলা উৎপাদন হয়। দেশটির ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞাও এই অস্থিরতার অন্যতম একটি কারণ। আশঙ্কা করা হচ্ছে, এর নেতিবাচক প্রভাবের কারণে হয়তো এই শিল্পের কাঁচামালের দাম আরও বৃদ্ধি পেতে পারে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ কটন অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মাদ আইউব বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বিভিন্ন কারণে বাজারে কিছুটা অস্থিরতা আছে এবং হয়তো দামের ওপর এর প্রভাব পড়তে পারে। তবে গোটা বিষয়টি সামনের মাসের মধ্যে বোঝা যাবে।’

বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘অন্যান্য পণ্যের মতো তুলার ক্ষেত্রেও এর দাম নির্ধারণ হয় চাহিদা ও যোগানের ওপর। এ বছর বৈশ্বিক যোগানের পরিমাণ কী হবে সেটির ওপর আগামী মাসে ইন্টারন্যাশনাল কটন অ্যাডভাইজরি কমিশন একটি রিপোর্ট দেবে এবং তখন ধারণা করা যাবে বাজারে তুলার সরবরাহ কী পরিমাণ থাকবে।তুলা

এর বিপরীতে তুলার চাহিদা হ্রাস পাওয়ারও আশঙ্কা আছে জানিয়ে তিনি বলেন, ইউরোপের সাধারণ জনগণ তাদের আয়ের একটি বড় অংশ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য ও জ্বালানির পেছনে ব্যয় করছে। ফলে কাপড়ের পেছনে হয়তো তাদের ব্যয় কমবে এবং এর ফলে তুলার চাহিদায় নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

তিনি বলেন, একদিকে আবহাওয়ার কারণে আশঙ্কা করা হচ্ছে উৎপাদন হ্রাস পাবে। আবার অন্যদিকে চাহিদাও কমে যাওয়ার আশঙ্কা আছে ইউরোপে যুদ্ধের কারএণ। ফলে তুলার দাম কী দাঁড়াবে সেটি এ মূহূর্তে প্রক্ষেপণ করা সম্ভব নয়।

গত বছরের উদাহারণ টেনে বলেন, ‘আমাদের কাছে তথ্য ছিল যে তুলার দাম বাড়বে এবং ওই সময়ে তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ এবং বিকেএমইএ সদস্যদের এ বিষয়ে আমরা সতর্ক করেছিলাম। ফলে তারা ক্রেতাদের সঙ্গে পণ্যের দাম নির্ধারণে সঠিকভাবে দর কষাকষি করতে পেরেছিল এবং তাদের ক্ষতির মুখে পড়তে হয়নি।

উল্লেখ্য, প্রাথমিক ধারণা অনুযায়ী পাকিস্তানে বন্যার কারণে তাদের তুলা উৎপাদনের প্রায় ৪৫ শতাংশ নষ্ট হয়ে গেছে। তুলা উৎপাদনে বিশ্বের পঞ্চম স্থানে রয়েছে পাকিস্তান। কিন্তু তারাও প্রচুর তুলা আমদানি করে। তাদের উৎপাদন কম হওয়ায় অন্যান্য দেশ থেকে তাদের আমদানি আরও বাড়বে; যা বৈশ্বিক বাজারে প্রভাব ফেলবে।

অন্যদিকে বাংলাদেশে তুলার চাহিদা রয়েছে প্রায় ৮৫ থেকে ৯০ লাখ বেল। দেশীয় উৎপাদন কম হওয়ার কারণে বড় অংশটিই আমদানি করা হয়।