এনবিআরে পুরোদমে কাজ শুরু, স্বাভাবিক হচ্ছে দফতরের কার্যক্রম

দীর্ঘ দেড় মাসের টানাপোড়েন শেষে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে সব কার্যক্রম। আন্দোলন প্রত্যাহারের পর রবিবার (২৯ জুন) রাত থেকেই কর্মকর্তারা কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করেন, যা সোমবার সকাল থেকে ব্যাপকভাবে দৃশ্যমান হয়।

গত রাতে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) সভাকক্ষে দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে ‘এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ’ আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়। এরপর থেকেই আগারগাঁওয়ের প্রধান কার্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন কাস্টমস, ভ্যাট ও কর অফিসে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কাজে যোগ দিতে শুরু করেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এনবিআরের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা জানান, চলমান সংকটের পরিপ্রেক্ষিতে সবাই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে। আজ সকাল থেকেই প্রধান কার্যালয়ে ফাইল চলাচল ও নথিপত্র যাচাই-বাছাই পুরোদমে শুরু হয়েছে।

এর আগে এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণ ও কাঙ্ক্ষিত প্রশাসনিক সংস্কারের দাবিতে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ দীর্ঘ দেড় মাস ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিল। শাটডাউন, কর্মবিরতি, অবস্থান কর্মসূচিসহ ধারাবাহিক আন্দোলনের কারণে রাজস্ব আহরণ ও প্রশাসনিক কার্যক্রমে স্থবিরতা নেমে আসে।

ব্যবসায়ীরা জানান, এই অচলাবস্থার কারণে কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স বিলম্বিত হওয়ায় আমদানি-রফতানি কার্যক্রমে বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে। একইসঙ্গে সরকারের রাজস্ব আয়েও নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।

বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ, এফবিসিসিআইসহ বিভিন্ন বাণিজ্য সংগঠন বারবার দ্রুত সমাধানের আহ্বান জানিয়ে আসছিল। শেষ পর্যন্ত আলোচনার মাধ্যমে সংকটের অবসান ঘটায় সংশ্লিষ্ট মহলে স্বস্তি ফিরে এসেছে।

এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সকাল থেকে ঢাকার পাশাপাশি চট্টগ্রাম, খুলনা, সিলেট ও অন্যান্য কাস্টমস হাউজ এবং কর অফিসগুলোতেও কর্মকাণ্ড স্বাভাবিক হয়ে উঠছে। কর্মকর্তারা এখন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আটকে থাকা ফাইল ও জরুরি রাজস্ব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করছেন।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এনবিআরের কার্যক্রম স্বাভাবিক হওয়ায় আমদানি-রফতানি, ব্যবসায়িক পরিবেশ এবং রাজস্ব আহরণে ইতিবাচক গতি ফিরে আসবে। তবে তারা এটিও বলছেন, ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতি এড়াতে প্রশাসনিক ও কাঠামোগত সংস্কার জরুরি।