কৃষি মন্ত্রণালয় সঠিক তথ্য দেয় না: বাণিজ্যমন্ত্রী

কৃষি মন্ত্রণালয় সঠিক তথ্য দেয় না বলে অভিযোগ করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। আর এ কারণে অনেক সময় খাদ্যপণ্য উৎপাদন ও ভোগের সঠিক পরিসংখ্যানের অভাবে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়ে বলে জানান তিনি।

রবিবার (২৪ অক্টোবর) রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে অনুষ্ঠিত দৈনিক বণিক বার্তা ও বাংলাদেশ কৃষি সাংবাদিক ফোরাম (বিএজেএফ) আয়োজিত ‘বাংলাদেশের ৫০ বছর কৃষির রূপান্তর ও অর্জন’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে এই অভিমত ব্যক্ত করেন তিনি।

দৈনিক বণিক বার্তার সম্পাদক ও প্রকাশক দেওয়ান হানিফ মাহমুদের সঞ্চালনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম, এফএও বাংলাদেশের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ রবার্ট ডি সিম্পসন এবং ইউএসএআইডি বাংলাদেশের মিশন ডিরেক্টর ক্যাথরিন স্টিভেন্স উপস্থিত ছিলেন। 

বাণিজ্যমন্ত্রী তার অভিযোগের সপক্ষে যুক্তি তুলে ধরে বলেন, পেঁয়াজের কথা ধরেন। পেঁয়াজের জ্বালায়ই আমি অস্থির হয়ে পড়েছি। কৃষি মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান বলছে আমাদের দেশে পেঁয়াজ উৎপাদন হয় ২৫ থেকে ২৬ লাখ মেট্রিক টন। বছরে আমাদের প্রয়োজন ২৪ থেকে ২৫ লাখ টন মেট্রিক টন। যদি এই হয়, তাহলে আমদানি কেন? এমন প্রশ্ন আসাটাই স্বাভাবিক।’

সেক্ষেত্রে পচনশীল পণ্য বলে উৎপাদিত পেঁয়াজের প্রায় ২০ শতাংশ নষ্ট হয়, তাও উল্লেখ করেন বাণিজ্যমন্ত্রী।

সঠিক তথ্য না পাওয়ার আরেকটি উদাহরণ তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, ‘গত বছর কৃষি মন্ত্রণালয় হিসাব দিলো আমাদের দেশে ১ কোটি ৫ লাখ টনের মতো আলু উৎপাদন হবে। আর আমরা ৭০-৭৫ লাখ টন আলু খাই। তার মানে আলু সারপ্লাস থাকবে। কিন্তু গত বছরের বাজারের চিত্র কিন্তু সেটা বলে না। 

তিনি বলেন, গত বছর আলুর দাম ৪০ টাকায় ঠেকলো। কোল্ডস্টোরেজ থেকে মজুত করা আলু বের হতে হতে আলু ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা হয়ে গেল। অথচ আলু এক্সপোর্টও হলো না। তার মানে হিসাবে একটা গণ্ডগোল রয়েছে। আর সেটি হচ্ছে, হয় আলুর উৎপাদন কম হয়েছে, নয়তো আলুর চাহিদা আরও বেশি। আসলে পণ্যের মজুত ও চাহিদা সম্পর্কে কৃষি মন্ত্রণালয় সঠিক তথ্য দেয় না।
 
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বছরের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর থেকেই আমাদের পেঁয়াজ কমতে থাকে। তখন ভারত থেকে আনতে হয়। এ ক্ষেত্রে ভারতের ওপর আমরা ৯০ শতাংশ নির্ভরশীল। ভারত বন্ধ করে দিলে অথবা দাম বাড়ালে এর প্রভাব আমাদের বাজারে পড়ে।

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি কৃষিবিদদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা পেঁয়াজের এমন বীজ আনেন যাতে সেপ্টেম্বর অক্টোবরে আমরা পেঁয়াজ পাই। উৎপাদন বাড়ানো গেলে এবং নষ্ট হওয়ার পরিমাণ কমলে আগামী ৩ থেকে ৪ বছরের মধ্যে পেঁয়াজের বাজারে কোনও সমস্যা হবে না।