চুরি যাওয়া অর্থ ফেরত পেতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কৌশল পরির্বতন

বাংলাদেশ ব্যাংকরিজার্ভের চুরি যাওয়া অর্থ ফেরত পেতে কৌশল পরিবর্তন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই কৌশলের অংশ হিসেবে ড. ফরাসউদ্দিন কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনও প্রকাশ করা হচ্ছে না। শুধু তাই নয়, রিজার্ভের অর্থ চুরির সঙ্গে নিউইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক ও সোসাইটি ফর ওয়ার্ল্ডওয়াইড ইন্টারব্যাংক ফিন্যান্সিয়াল টেলিকমিউনিকেশনকে (সুইফট) দায়ী করা থেকেও সরে এসেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক শুভঙ্কর সাহা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক এই মুহূর্তে সবচেয়ে গুরুত্ব দিচ্ছে চুরি যাওয়া অর্থ ফেরত আনার বিষয়ে। এরই অংশ হিসেবে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক ও সুইফট এর সহযোগিতা নেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক ওই দুই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার যে প্রস্তুতি নিয়েছিল তা থেকে সরে এসেছে।

এদিকে, রিজার্ভের চুরি হওয়া অর্থ উদ্ধারে শুধু এই দুই প্রতিষ্ঠানই নয়, সব পক্ষের সহযোগিতা নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্র গেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। এ সফরে প্রতিনিধি দলটি ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্ক (ফেড), সোসাইটি ফর ওয়ার্ল্ডওয়াইড ইন্টার ব্যাংক ফিন্যান্সিয়াল টেলিকমিউনিকেশন (সুইফট), ফিন্যান্সিয়াল ক্রাইম এনফোর্সমেন্ট নেটওয়ার্ক (ফিনসেন), যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিস, দ্য ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই)-এর সঙ্গে বৈঠক করবেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মোহা. রাজী হাসানের নেতৃত্বে গত রবিবার রাতে প্রতিনিধিদলটি দেশ ছাড়েন। তারা ফিরবেন ২২ আগস্ট। প্রতিনিধি দলে আরও আছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের আইনজীবী আজমালুল হোসেন কিউসি, ইনফরমেশন সিস্টেমস ডেভেলপমেন্ট বিভাগের মহাব্যবস্থাপক দেবদুলাল রায়, অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড বাজেটিং বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাকের হোসেন ও বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের যুগ্ম পরিচালক আবদুর রব।

এদিকে, এখনও ফরাস উদ্দিনের সেই প্রতিবেদন আজও প্রকাশ করেনি সরকার। যদিও বাজেটের পরে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে বলে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ঘোষণা দিয়েছিলেন।

ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে রক্ষিত বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরির ঘটনায় সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিনকে আহ্বায়ক করে গত ১৫ মার্চ তদন্ত কমিটি গঠন করে সরকার। কমিটিকে ৩০ দিনের মধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিবেদন এবং ৭৫ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়। সময় মতো প্রতিবেদন জমা দেয় মোহাম্মদ ফরাস উদ্দিনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের কমিটি। কমিটির অপর দুই সদস্য ছিলেন- বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোহাম্মদ কায়কোবাদ এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের তৎকালীন অতিরিক্ত সচিব গকুল চাঁদ দাস।

কমিটির কর্মপরিধির মধ্যে ছিল বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে এই অর্থ কীভাবে ও কার বরাবর গেল, অবৈধ পরিশোধ ঠেকাতে বাংলাদেশ ব্যাংক কী পদক্ষেপ নিয়েছে, বিষয়টি উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের কাছে গোপন রাখার যৌক্তিকতা কী, বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের দায়িত্বে অবহেলা ছিল কিনা, অর্থ উদ্ধারের সম্ভাবনা কতটুকু, একই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে করণীয় কী ইত্যাদি। এই কমিটি গত ৩০ মে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের কাছে প্রতিবেদন জমা দেয়।
/জিএম/এবি/

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে মেঘালয় থেকে ত্রিপুরা তেল ট্যাংকার যাবে এ মাসে

২০২৪ সালের পর দেশে আর গরিব থাকবে না: অর্থমন্ত্রী