ঋণ পুনঃতফসিলে আরও ২ মাস ছাড় পাচ্ছেন চামড়া ব্যবসায়ীরা

গত ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোরবানির পশুর কাঁচা চামড়া কিনতে ব্যবসায়ীদের দেওয়া বিশেষ ঋণ সুবিধার মেয়াদ আরও  দুই মাস বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আগের বছরের অপরিশোধিত ঋণের তিন শতাংশ ডাউন পেমেন্টে তিন বছর মেয়াদে পুনঃতফসিল করার সুযোগ পাবে। এছাড়া অগ্রিম জমা অর্থাৎ কোনও ধরনের কম্প্রোমাইজড অ্যামাউন্ট ছাড়াই ঋণ নিতে পারবেন। এ সুবিধা চলতি বছরের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত পাবেন কাঁচা চামড়ার ব্যবসায়ীরা।

বৃহস্পতিবার (৯ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের আগের নির্দেশনা অনুযায়ী, চামড়া ব্যবসায়ীরা  গত ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ঋণ পুনঃতফসিলের সুযোগ পেয়েছেন। নতুন নির্দেশনায় এটি দুই মাস বাড়িয়ে ৩১ অক্টোবর করা হয়েছে।

জানা গেছে, প্রতিবছর ঈদুল আজহার আগে এ ঋণ দেওয়া হয়। নিয়ম অনুযায়ী যারা আগের বছরের ঋণ পুরোপুরি শোধ করেন শুধু তারাই এ ঋণ পান। এছাড়াও ব্যাংক-গ্রাহক সম্প‌র্কের বিবেচনায় অনেক প্র‌তিষ্ঠান ঋণ দিয়ে থাকে। তবে করোনা মহামারিতে কাঁচামাল সংরক্ষণ ও ন্যায্য মূল্য এ খাতে ঋণ বিতরণে অগ্রাধিকার দিতে বলেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। একই সঙ্গে চামড়া কেনার সু‌বিধা‌র্থে বিশেষ সু‌বিধায় ঋণ পুনঃতফসিলের সু‌যোগ দেওয়া হয়েছে।

তফসিলি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীদের পাঠানো নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোরবানির পশুর চামড়া কেনার উদ্দেশ্যে চামড়া ব্যবসায়ীদের (কাঁচা চামড়া ক্রয়-বিক্রয়/প্রক্রিয়াজাতকরণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ট্যানারি শিল্পসহ চামড়া খাতের সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও শিল্প) প্রতি বছর তফসিলি ব্যাংকগুলো উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ঋণ বিতরণ করে থাকে। চামড়া শিল্পে বিরাজমান সমস্যাসহ কোভিড-১৯ এর নেতিবাচক প্রভাবজনিত কারণে ২০২০ সালে কোরবানির পশুর কাঁচা চামড়া কেনার জন্য দেওয়া ঋণের কিছু অংশ অনাদায়ী রয়েছে। এর ফলে ২০২১ সালের আসন্ন ঈদুল আজহায় কোরবানির পশুর চামড়া কেনার প্রয়োজনীয় ঋণ সুবিধা দেওয়া তফসিলি ব্যাংকগুলোর পক্ষে দুরূহ হয়ে পড়েছে।

সার্কুলার  বলা হয়েছে, দেশীয় চামড়া শিল্পে ব্যবহৃত কাঁচামালের প্রায় অর্ধেক জোগান আসে প্রতিবছর কোরবানির পশুর চামড়া থেকে। এ সময় চামড়া ব্যবসায়ীদের কাছে প্রয়োজনীয় অর্থের জোগান নিশ্চিত করা গেলে একদিকে মূল্যবান কাঁচামাল সংরক্ষণ করা সম্ভবপর হবে, অপরদিকে কোরবানির পশুর চামড়া বিক্রির মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী আর্থিকভাবে উপকৃত হবে।

সার্বিক বিবেচনায় নিয়ে ২০২০ সালে কোরবানির পশুর চামড়া কেনার ঋণের অপরিশোধিত অর্থের বিপরীতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের গোডাউনে স্টক বা সহায়ক জামানত থাকা সাপেক্ষে ওই অপরিশোধিত অর্থের ৩ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট নিয়ে সর্বোচ্চ ৩ তিন বছর মেয়াদে পুনঃতফসিল করতে পারবে। এ পদ্ধতিতে পুনঃতফসিলিকরণের পর ব্যাংকিং নিয়মাচার অনুসরণ করে ব্যাংকগুলো ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে ২০২০ সালের পূর্বনির্ধারিত কোটার (বরাদ্দকরা অর্থের) সমপরিমাণ ঋণ দিতে পারবে।

এছাড়া ঋণগ্রহীতাদের অনুকূলে ২০২১ সালে কোরবানির পশুর চামড়া কিনতে নতুন ঋণ দেওয়ার সময় কোনও ধরনের কম্প্রোমাইজড অ্যামাউন্ট আদায় করা যাবে না বলে সার্কুলারে বলা হয়েছে।